মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এক আক্রমণাত্মক ও বিস্তৃত ভাষণে বৈশ্বিক অভিবাসন কমানোর পক্ষে যুক্তি দেন এবং জলবায়ু পরিবর্তন নীতি থেকে সরে আসার আহ্বান জানান। তিনি বিশ্বনেতাদের তীব্র সমালোচনা করেন।
৫৬ মিনিটের এই ভাষণ ছিল জাতিসংঘের প্রতি একপ্রকার ভর্ৎসনা এবং ট্রাম্পের আগের ধাঁচে ফেরা, যিনি তার প্রথম মেয়াদে নিয়মিত জাতিসংঘকে আক্রমণ করতেন। তিনি চেম্বার থেকে বেরিয়ে গেলে নেতারা তাকে ভদ্রতাপূর্ণ করতালি দেন। ট্রাম্প ইসরায়েলের গাজা হামলার প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার মিত্রদের প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করেন এবং ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে চাপ সৃষ্টি করতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে তার প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক পদক্ষেপগুলো গ্রহণে ইউরোপীয় দেশগুলোকে উৎসাহিত করেন।
তার বক্তৃতার বড় অংশ জুড়েই ছিল তার দুই বড় অভিযোগ: অভিবাসন ও জলবায়ু পরিবর্তন।
ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন দমন নীতি তুলে ধরে বলেন, অন্যান্য বিশ্বনেতাদেরও ভ massূ অভিবাসন রোধে একই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, যা তার মতে জাতিগুলোর মূল কাঠামোকে পরিবর্তন করছে। তবে মানবাধিকার কর্মীরা বলেন, অভিবাসীরা কেবল ভালো জীবনের সন্ধানেই আসছে।
ট্রাম্প বলেন: “আমি এসব ব্যাপারে ভীষণ দক্ষ। আপনাদের দেশগুলো নরকে যাচ্ছে।”
ব্রিটেনের পরিবেশবান্ধব রাজা চার্লসের সঙ্গে উইন্ডসর ক্যাসেলে বৈঠকের এক সপ্তাহ পরই ট্রাম্প জলবায়ু পরিবর্তনকে “প্রতারণা” আখ্যা দিয়ে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর আরও বেশি নির্ভরশীল হওয়ার আহ্বান জানান। বিজ্ঞানীরা অবশ্য বলেন, মানুষের কারণেই জলবায়ু পরিবর্তন বাস্তবতা।
ট্রাম্প বলেন: “অভিবাসন আর তাদের আত্মঘাতী জ্বালানি ধারণাই পশ্চিম ইউরোপের সর্বনাশ ডেকে আনবে।”
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প প্রশাসন চলতি মাসের শেষে জাতিসংঘে আশ্রয়ের অধিকারের ব্যাপক সীমাবদ্ধতার আহ্বান জানাতে চায়, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী মানবিক সুরক্ষা কাঠামো ভেঙে দেওয়ার প্রচেষ্টা।
তার বক্তৃতায় ট্রাম্প একগুচ্ছ ভ্রান্ত ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্যও রাখেন। যেমন— তিনি দাবি করেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান শহরে “শরিয়া আইন” চাপিয়ে দিতে চান, এবং যুক্তরাষ্ট্রে “মুদ্রাস্ফীতি পরাজিত হয়েছে”, যদিও মাত্র ছয় দিন আগে ফেডারেল রিজার্ভ বলেছে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে।