বিভাগ:

তাইওয়ানে ১৫ জনকে হত্যার পর টাইফুন রাগাসা চীনের দিকে ধেয়ে আসছে।

এ বছর বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় টাইফুন রাগাসা বুধবার দক্ষিণ চীনে আঘাত হানে। এর আগে এটি তাইওয়ানে ১৫ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এবং ভয়াবহ ঝড়ো হাওয়া ও প্রবল বর্ষণে হংকং বিপর্যস্ত হয়।

তাইওয়ান ও হংকংয়ে প্রভাব

তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলীয় হুয়ালিয়েন কাউন্টিতে এক বাঁধ-হ্রদ উপচে পড়ে পানির ঢল নেমে এলে ১৭ জন নিখোঁজ হয় বলে বুধবার ফায়ার সার্ভিস জানায়। সোমবার থেকে রাগাসার বাইরের অংশ দ্বীপটিকে ভিজিয়ে রেখেছে।
পর্যটনকেন্দ্র গুয়াংফুর বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সাধারণত দ্রুত লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হলেও এবার কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট সতর্কতা দেয়নি।
তাইওয়ানে প্রবল বর্ষণের সময় হংকংয়ে সমুদ্রতীরে বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ে, যা রাস্তা ও ঘরবাড়ি প্লাবিত করে।

চীনে আঘাত

চীনের মেরিন কর্তৃপক্ষ এ বছর প্রথমবারের মতো সর্বোচ্চ লাল সতর্কতা জারি করে, গুয়াংডং প্রদেশে ২.৮ মিটার পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা জানায়।
রাগাসা পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে গত সপ্তাহে সৃষ্টি হয় এবং উষ্ণ সমুদ্র ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করে সোমবার ক্যাটাগরি–৫ সুপার টাইফুনে রূপ নেয়, যার বাতাসের গতি ঘণ্টায় ২৬০ কিমি ছাড়ায়। বর্তমানে এটি দুর্বল হয়ে ক্যাটাগরি–৩ এ নেমে এসেছে, তবুও গাছ উপড়ে ফেলা, বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে ফেলা, জানালা চূর্ণ করা ও ভবন ক্ষতিগ্রস্ত করার মতো শক্তি রয়ে গেছে।
চিম লি, ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের জ্যেষ্ঠ জ্বালানি ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ বলেন, “পার্ল রিভার ডেল্টা টাইফুনের জন্য সবচেয়ে প্রস্তুত অঞ্চলগুলোর একটি। তাই বড় ধরনের বিপর্যয় আশা করা হচ্ছে না।”

তবে বুধবার হংকংয়ে জিজিন গোল্ড ইন্টারন্যাশনাল ৩.২ বিলিয়ন ডলারের আইপিও স্থগিত করে।
এরপর রাগাসা হংকংয়ের প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ দিয়ে অতিক্রম করে চীনের দক্ষিণ উপকূলে আঘাত হানে। ঝড়ের পথে থাকা গুয়াংঝু, শেনঝেন, ফোশান ও দোংগুয়ানের মতো শহরে প্রায় ৫ কোটি মানুষ বসবাস করে।

ব্যাপক সরিয়ে নেওয়া ও ত্রাণ

চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার গুয়াংডংয়ে হাজার হাজার তাঁবু, ভাঁজ খাট, জরুরি আলোকসামগ্রীসহ উদ্ধার সামগ্রী পাঠায়। ইতিমধ্যে ৭ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কিছু দোকানপাট ও রেস্তোরাঁ বড় ভাড়া করা ট্রাক সামনে পার্ক করে ঝড়ের ক্ষতি ঠেকানোর চেষ্টা করে।
শেনঝেনের এক বাসিন্দা লিয়াং বলেন, “আমরা ওপরের তলায় থাকি, তাই ঝুঁকি কম মনে হয়েছে। বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়েছি ঝড়-বৃষ্টি উপভোগ করতে।”
শেনঝেন বে ব্রিজের নিচে ঝড় দেখার জন্য জড়ো হওয়া ভিড়কে পুলিশ সরিয়ে দেয়।

চীনের মেরিন কর্তৃপক্ষ সতর্ক করেছে, শেনঝেনে বিশেষ করে নিচু এলাকায় প্লাবনের ঝুঁকি রয়েছে এবং বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঝড়ের সতর্কতা জারি থাকতে পারে।

হংকং ও ম্যাকাও পরিস্থিতি

মঙ্গলবার হংকংয়ের সমুদ্রতীরে ঝড় দেখতে গিয়ে এক নারী ও তার পাঁচ বছর বয়সী ছেলে সমুদ্রে ভেসে যায়। বর্তমানে তারা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রয়েছে।
বুধবার সকালে শহরের টাইফুন সতর্কতা ১০ থেকে কমিয়ে ৮ করা হলেও শহর কার্যত অচলাবস্থায় থাকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে এবং সরকার খোলা ৫০টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে ৭৯১ জন আশ্রয় নেয়।
ম্যাকাওয়ে ক্যাসিনোগুলোকে কার্যক্রম বন্ধ করতে হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওতে দেখা গেছে, ঝড়ো হাওয়া ও উড়ন্ত বস্তু থেকে রক্ষা পেতে ক্যাসিনো রিসোর্টগুলোর দরজা সিল করে দেওয়া হয়েছে।

জাতিসংঘে আক্রমণাত্মক ভাষণের সময় ট্রাম্প বিশ্বনেতাদের বলেন, তাদের দেশগুলো “নরকে যাচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এক আক্রমণাত্মক ও বিস্তৃত ভাষণে বৈশ্বিক অভিবাসন কমানোর পক্ষে যুক্তি দেন এবং জলবায়ু পরিবর্তন নীতি থেকে সরে আসার আহ্বান জানান। তিনি বিশ্বনেতাদের তীব্র সমালোচনা করেন।

৫৬ মিনিটের এই ভাষণ ছিল জাতিসংঘের প্রতি একপ্রকার ভর্ৎসনা এবং ট্রাম্পের আগের ধাঁচে ফেরা, যিনি তার প্রথম মেয়াদে নিয়মিত জাতিসংঘকে আক্রমণ করতেন। তিনি চেম্বার থেকে বেরিয়ে গেলে নেতারা তাকে ভদ্রতাপূর্ণ করতালি দেন। ট্রাম্প ইসরায়েলের গাজা হামলার প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার মিত্রদের প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করেন এবং ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে চাপ সৃষ্টি করতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে তার প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক পদক্ষেপগুলো গ্রহণে ইউরোপীয় দেশগুলোকে উৎসাহিত করেন।

তার বক্তৃতার বড় অংশ জুড়েই ছিল তার দুই বড় অভিযোগ: অভিবাসন ও জলবায়ু পরিবর্তন।

ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন দমন নীতি তুলে ধরে বলেন, অন্যান্য বিশ্বনেতাদেরও ভ massূ অভিবাসন রোধে একই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, যা তার মতে জাতিগুলোর মূল কাঠামোকে পরিবর্তন করছে। তবে মানবাধিকার কর্মীরা বলেন, অভিবাসীরা কেবল ভালো জীবনের সন্ধানেই আসছে।

ট্রাম্প বলেন: “আমি এসব ব্যাপারে ভীষণ দক্ষ। আপনাদের দেশগুলো নরকে যাচ্ছে।”

ব্রিটেনের পরিবেশবান্ধব রাজা চার্লসের সঙ্গে উইন্ডসর ক্যাসেলে বৈঠকের এক সপ্তাহ পরই ট্রাম্প জলবায়ু পরিবর্তনকে “প্রতারণা” আখ্যা দিয়ে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর আরও বেশি নির্ভরশীল হওয়ার আহ্বান জানান। বিজ্ঞানীরা অবশ্য বলেন, মানুষের কারণেই জলবায়ু পরিবর্তন বাস্তবতা।

ট্রাম্প বলেন: “অভিবাসন আর তাদের আত্মঘাতী জ্বালানি ধারণাই পশ্চিম ইউরোপের সর্বনাশ ডেকে আনবে।”

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প প্রশাসন চলতি মাসের শেষে জাতিসংঘে আশ্রয়ের অধিকারের ব্যাপক সীমাবদ্ধতার আহ্বান জানাতে চায়, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী মানবিক সুরক্ষা কাঠামো ভেঙে দেওয়ার প্রচেষ্টা।

তার বক্তৃতায় ট্রাম্প একগুচ্ছ ভ্রান্ত ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্যও রাখেন। যেমন— তিনি দাবি করেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান শহরে “শরিয়া আইন” চাপিয়ে দিতে চান, এবং যুক্তরাষ্ট্রে “মুদ্রাস্ফীতি পরাজিত হয়েছে”, যদিও মাত্র ছয় দিন আগে ফেডারেল রিজার্ভ বলেছে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে।

গভীর রাতেও ঘুম আসে না? জানুন কারণ ও সমাধান

আপনি কি কখনও দেখেছেন—রাত গভীর হয়ে গেছে, কিন্তু ঘুম ঠিক মতো আসছে না? এটি শুধু ক্লান্তির কারণ নয়, দীর্ঘমেয়াদে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। তবে কিছু সহজ পরিবর্তন এবং অভ্যাস মানলে ঘুমের সমস্যা অনেকটাই কমানো যায়।

কেন আসে না ঘুম?

ঘুম না হওয়ার কিছু সাধারণ কারণ:

  • মানসিক চাপ: কাজ বা ব্যক্তিগত চিন্তা মস্তিষ্ককে শান্ত করতে দেয় না।

  • অনিয়মিত জীবনযাপন: রাতের খাবার, ফোন বা কম্পিউটারের অতিরিক্ত ব্যবহার।

  • ক্যাফেইন ও পানির অতিরিক্ত গ্রহণ: রাতে কফি, চা বা বেশি পানি ঘুমে বাধা দেয়।

  • শরীরের ঘড়ি বিঘ্ন: প্রতিদিন ভিন্ন সময়ে শোয়া বা ওঠা।

ঘুম ঠিক রাখতে ৬টি সহজ কৌশল

  1. নিয়মিত ঘুমের সময়: প্রতিদিন একই সময়ে শোবেন ও উঠবেন।

  2. শারীরিক কার্যকলাপ: দিনের মধ্যে হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাটি সাহায্য করে।

  3. স্ক্রিন টাইম কমান: রাতে ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহার সীমিত করুন।

  4. হালকা রাতের খাবার: ভারী বা মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে হালকা খাবার গ্রহণ করুন।

  5. মন শান্ত রাখুন: ধ্যান, শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম বা হালকা পড়াশোনা।

  6. পরিবেশ ঠিক রাখুন: ঘরের আলো, তাপমাত্রা ও বিছানা আরামদায়ক রাখুন।

অতিরিক্ত টিপস

  • রাতের চা ও কফি এড়িয়ে চলুন।

  • ঘুমের আগে হালকা গরম শাওয়ার নিতে পারেন।

  • দীর্ঘদিন ঘুম না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

মনে রাখবেন: ঘুম শুধু বিশ্রাম নয়, এটি শরীর ও মনের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করে। নিয়মিত ঘুম মানলে আপনি দিনে সতেজ, মনও স্থির থাকে।

রোদ-বারিষার মাঝেও শরীর ও মন রাখুন সতেজ

ভাদ্র মাসকে বলা হয় ভাদ্রের ভাদ্দরী। অর্থাৎ, এই সময়ে আবহাওয়া থাকে অস্থির—কখনো হঠাৎ বৃষ্টি, আবার কখনো প্রচণ্ড রোদ। কোথাও কোথাও দেখা দেয় বন্যাও। ধানের খেত সবুজে ভরে ওঠে, কিন্তু এই চঞ্চল আবহাওয়া শরীর ও মনের উপর ফেলে প্রভাব। তাই সুস্থ ও সতেজ থাকতে কিছু সহজ কৌশল মেনে চলা জরুরি।

ভালো ঘুম
প্রতিদিন অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম শরীরকে রাখে সতেজ ও চাঙ্গা।

সঠিক খাবার

  • মৌসুমি ফল ও সবজি খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

  • নিয়মিত এই খাবার গ্রহণে সর্দি-কাশি ও জ্বর থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়।

  • মসলাযুক্ত ও ভারী খাবার বাদ দিয়ে হালকা খাবার খাওয়া উত্তম।

পর্যাপ্ত পানি পান
শরীরে পানির ঘাটতি যেন না হয়, তাই প্রচুর পানি পান করতে হবে। এতে শরীর থাকে হাইড্রেটেড এবং স্বাভাবিক কাজকর্ম সচল থাকে।

  • ঠান্ডা ও তাজা ফলের রস, ডাবের পানি বা লেবুর শরবত শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।

  • অ্যালকোহল, ক্যাফেইন ও অতিরিক্ত গরম পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে।

পরিচ্ছন্নতা ও সতর্কতা

  • ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে রাস্তার খোলা খাবার খাবেন না।

  • বৃষ্টিতে ভিজলে দ্রুত শুকনো কাপড় পরুন এবং চুল ভালোভাবে মুছে ফেলুন।

  • পানি জমে থাকা রাস্তা এড়িয়ে চলুন। ভিজলে পা ধুয়ে শুকনো রাখুন, নাহলে চর্মরোগ হতে পারে।

পরিধান ও পরিবেশ

  • হালকা রঙের ঢিলেঢালা পোশাক পরুন।

  • ঘরের পরিবেশ ঠান্ডা ও সতেজ রাখতে ভেতরে সবুজ গাছ রাখতে পারেন।

  • বৃষ্টির সময় বাইরে গেলে ছাতা বা রেইনকোট ব্যবহার করুন।

দুর্গাপূজা ঘিরে নৌপথে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ঘোষণা

আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা-২০২৫ উদযাপনকে কেন্দ্র করে নৌ অধিক্ষেত্রের পূজামণ্ডপ ও প্রতিমা বিসর্জন স্থানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন নৌ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি কুসুম দেওয়ান।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ঢাকার নৌ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে ‘আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা-২০২৫’ উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাবিষয়ক মতবিনিময় সভায় তিনি সভাপতিত্ব করেন।

সভায় পূজা কমিটি ও নৌ পুলিশের করণীয়, প্রতিমা তৈরির সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা, পূজাকালীন টহল, প্রতিমা বিসর্জনের সময় করণীয় ও বর্জনীয়সহ নানা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। পূজা কমিটির নেতারা দুর্গাপূজা শুরু থেকে প্রতিমা বিসর্জন পর্যন্ত নৌপথে যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে টহল জোরদারের প্রস্তাব দেন এবং নৌ পুলিশের সহযোগিতা কামনা করেন।

অতিরিক্ত আইজিপি কুসুম দেওয়ান সভায় বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজায় কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বা দুর্বৃত্তায়ন যাতে না ঘটে, সে জন্য নৌ পুলিশের নিরাপত্তা কার্যক্রম জোরদার করা হবে। নারী ও শিশুরা যাতে নির্বিঘ্নে উৎসবে অংশ নিতে পারে, সে বিষয়েও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও নির্দেশ দেন, নৌ পুলিশের ১১টি অঞ্চলের পুলিশ সুপার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পূজামণ্ডপে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপগুলোতে সরাসরি উপস্থিত থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।

অনুষ্ঠানে নৌ পুলিশের ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ পূজা কমিটির বিভিন্ন স্তরের নেতারা সরাসরি ও ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন।

মুলাদীতে ছাত্রদল-শিবির সংঘর্ষে রণক্ষেত্র, আহত ২৫

বরিশালের মুলাদীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মুলাদী সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।

আহতদের মধ্যে ছাত্রশিবিরের ২০ জন ও ছাত্রদলের পাঁচজন রয়েছেন। তাদের মধ্যে ছয়জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শিবির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ২৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি সভা চলাকালে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। এসময় হামলাকারীরা ‘জামায়াত-শিবির রাজাকার, এ মুহূর্তে বাংলা ছাড়’ স্লোগান দেয়।

অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন ঢালী বলেন, কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা দিয়ে শিবির কর্মীরা তাদের পাঁচজনকে মারধর করেছে। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন।

মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম জানান, বুধবার কলেজে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা মঞ্চে ছিলেন। এতে শিবিরের পক্ষ থেকে ক্ষোভ তৈরি হয়। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার সংঘর্ষ ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে নিয়ন্ত্রণে আনে।

তিনি আরও জানান, আহত হওয়ার ঘটনা পুলিশ পৌঁছানোর আগেই ঘটে।

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদের চমকপ্রদ মন্তব্য

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি এ অভিনন্দন জানান।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ডাকসুতে যারা বিজয়ী হয়েছে, তাদের অভিনন্দন জানাই। এটা গণতন্ত্রের রীতি। গণতন্ত্রের রীতি হবে সবাইকে অভিনন্দন জানাতে হবে। কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়েছে। যেহেতু বহুদিন পর নির্বাচন হয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য আরও বলেন,
আমার মতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ডাকসু ভোটে অংশগ্রহণ করেনি। ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটকে অভিনন্দন।

তিনি বলেন, ডাকসু-চাকসু যাই হোক, এখানকার বিজয়ীদের কেউ কেউ বড় রাজনীতিবিদ হয়েছেন। তবে অনেকেই এখনও সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। এটাই হচ্ছে শিক্ষাঙ্গনের রাজনীতির সঙ্গে জাতীয় রাজনীতির পোস্টমর্টেম।

ডাকসু নির্বাচন জাতীয় রাজনীতিতে কেমন প্রভাব ফেলবে, এ প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, বড় দল ছাড়া ডাকসু নির্বাচিতরা রাজনীতিতে ভালো করতে পারেনি।

ছাত্র রাজনীতির প্রয়োজন আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় যে পরিবর্তন হয়েছে, সেগুলো ছাত্র আন্দোলন বা ছাত্র সংসদের মাধ্যমেই হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা ২৮টি পদের মধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস)সহ ২৩টি পদেই বিজয়ী হয়েছেন।

ভিপি পদে ছাত্রশিবিরের মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম), জিএস পদে এস এম ফরহাদ এবং এজিএস পদে মহিউদ্দিন খান বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়েছেন। ঘোষিত ফলাফলে দেখা গেছে, ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের ভিপি প্রার্থী মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম) সর্বমোট ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী মো. আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট।

জিএস পদে এস এম ফরহাদ ১০ হাজার ৭৯৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী তানভীর বারী হামীম পেয়েছেন ৫ হাজার ২৮৩ ভোট। প্রতিরোধ পর্ষদের প্রার্থী মেঘমল্লার বসু পেয়েছেন ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের আবু বাকের মজুমদার পেয়েছেন ২ হাজার ১৩১ ভোট।

এজিএস পদে মহিউদ্দীন খান ১১ হাজার ৭৭২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৪ ভোট।

এছাড়া আরও ২০ পদে বিজয় লাভ করেছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা। এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে শিবির সমর্থিত জোটের ফাতেমা তাসনিম জুমা পেয়েছেন ১০ হাজার ৬৩১ ভোট, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে একই প্যানেলের ইকবাল হায়দার ৭ হাজার ৮৩৩ ভোট, কমন রুম-রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে উম্মে সালমা ৯ হাজার ৯২০ ভোট, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে জসীমউদ্দিন খান ৯ হাজার ৭০৬ ভোট (যিনি জুলাইয়ে চোখ হারান), ক্রীড়া সম্পাদক পদে আরমান হোসেন ৭ হাজার ২৫৫ ভোট, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে আসিফ আব্দুল্লাহ ৯ হাজার ৬১ ভোট, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে মাজহারুল ইসলাম ৯ হাজার ৩৪৪ ভোট, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ ৭ হাজার ৩৮ ভোট, মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে সাখাওয়াত জাকারিয়া ১১ হাজার ৭৪৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট থেকে সদস্য হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন—সাবিকুন্নাহার তামান্না ১০ হাজার ৪৮ ভোট, সর্বমিত্র চাকমা ৮ হাজার ৯৮৮ ভোট, আনাস ইবনে মুনির ৫ হাজার ১৫ ভোট, ইমরান হোসেন ৬ হাজার ২৫৬ ভোট, তাজিনুর রহমান ৫ হাজার ৬৯০ ভোট, মেফতাহুল হোসেন আল মারুফ ৫ হাজার ১৫ ভোট, বেলাল হোসাইন অপু খান ৪ হাজার ৮৬৫ ভোট, রাইসুল ইসলাম ৪ হাজার ৫৩৫ ভোট, মো. শাহিনুর রহমান ৪ হাজার ৩৯০ ভোট, মোছা. আফসানা আক্তার ৫ হাজার ৭৪৭ ভোট এবং রায়হান উদ্দীন ৫ হাজার ৮২ ভোট।

এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন তিনটি সম্পাদক পদে। সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ ৭ হাজার ৭৮২ ভোট, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে জুলাই আন্দোলনের আলোচিত মুখ সানজিদা আহমেদ তন্বি ১১ হাজার ৭৭৮ ভোট এবং সমাজসেবা সম্পাদক পদে মো. যুবাইর বিন নেছারী (এবি জুবায়ের) ৭ হাজার ৬০৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। আর সদস্য পদে জয়ী হয়েছেন হেমা চাকমা ও উম্মু উসউয়াতুন রাফিয়া।

এর আগে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ডাকসুর ভোটগ্রহণ চলে। এবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আটটি কেন্দ্রের ৮১০টি বুথে ডাকসু এবং হল সংসদের ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এবার মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। পাঁচ ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ ভোটারের বিপরীতে ১৩ ছাত্র হলে এই সংখ্যা ২০ হাজার ৯১৫ জন।

ডাকসুর ২৮টি পদের জন্য মোট ৪৭১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। প্রতি হল সংসদে ১৩টি করে ১৮টি হলে মোট পদের সংখ্যা ছিল ২৩৪টি। এসব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১ হাজার ৩৫ জন প্রার্থী। সব মিলিয়ে এবার ভোটারদের ৪১টি ভোট দিতে হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা: ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের প্রস্তুতি ও সময়সূচি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া বর্তমানে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। যদিও কিছু বিভাগের ভর্তিযোগ্য অর্ধশতাধিক আসন এখনও শূন্য আছে, সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে যে আর মেধাতালিকা প্রকাশের সম্ভাবনা কম। পরবর্তী ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডাকসু নির্বাচনের পর বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সদ্য এইচএসসি পাস করা শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য নিজেকে তৈরি করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের মধ্যে শীর্ষ পছন্দের প্রতিষ্ঠান। তবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ছাত্র সংসদ নির্বাচন থাকায় প্রশাসন ভর্তির বিষয়ে এখনো কোনও আলোচনা শুরু করেনি। করোনার কারণে যদি কিছুটা বিলম্ব হয়ে থাকে, এবারের ভর্তি পরীক্ষা যত দ্রুত সম্ভব আয়োজনের লক্ষ্য নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত করোনার কারণে ভর্তি পরীক্ষার স্বাভাবিক সময়সূচিতে বিঘ্ন ঘটেছে। তবে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে সূচি কিছুটা এগিয়ে আসে। গত বছরের নভেম্বর মাসে আবেদন গ্রহণের পর ভর্তি পরীক্ষা চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হয়।

গত মাসে সর্বশেষ বিশেষ মাইগ্রেশনের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত ধাপের পাশাপাশি শূন্য আসনের জন্য অপেক্ষমান শিক্ষার্থীদেরও ভর্তি দেওয়া হয়েছিল। এরপর আর নতুন সুযোগ দেওয়ার সম্ভাবনা কম। ডাকসু নির্বাচনের পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) FourpillarsBD কে বলেন, ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে এখনও কোনও আলোচনা হয়নি। প্রশাসনের সবাই ডাকসু নির্বাচনের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। নির্বাচনের পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হবে।

জানা গেছে, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি প্রক্রিয়া আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে। পরে করোনা মহামারির কারণে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়। ২০২১ সালের অনলাইন আবেদন শুরু হয় মার্চ মাসে এবং ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় বছরের মাঝামাঝি। ভর্তি পরীক্ষা মে-জুনে শুরু হয়ে অক্টোবর পর্যন্ত চলে। পরবর্তী দুই শিক্ষাবর্ষেও একই কারণে বিলম্ব হয়।

পৃথিবীতে মানুষ কিভাবে ও কেন এসেছে? বিজ্ঞান ও বিবর্তন

মানুষ পৃথিবীতে কেন এসেছে? এই প্রশ্নটি মানুষের প্রাচীনতম কৌতূহলের মধ্যে একটি। ধর্ম, দর্শন এবং বিজ্ঞান—সবই এই প্রশ্নের ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞান বিশেষভাবে বিবর্তন তত্ত্ব (Evolution Theory) এবং জীববিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে এটির উত্তর দেয়।

এই আর্টিকেলে আমরা জানব—

  • মানুষ কিভাবে এসেছে

  • বিবর্তন তত্ত্ব অনুযায়ী মানুষের উত্পত্তি

  • অন্যান্য বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

  • মানুষের ইতিহাস এবং পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্ক


১. বিবর্তন তত্ত্ব এবং মানুষের উত্পত্তি

চার্লস ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব অনুসারে, পৃথিবীর সমস্ত জীব একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে বিবর্তিত হয়েছে।

মানুষের বিবর্তন

  • মানুষ এবং বন্য বানর একই পূর্বপুরুষ থেকে এসেছে।

  • প্রায় ৬–৭ মিলিয়ন বছর আগে আমাদের পূর্বপুরুষ বনাঞ্চলে বসবাস করত।

  • মানবজাতি ধীরে ধীরে দুই পায়ে হাঁটার ক্ষমতা, বড় মস্তিষ্ক, এবং সামাজিক জীবন গড়ে তুলতে শুরু করে।

হোমিনিডসের ধাপ

  • সৌপিথেকাস (Sahelanthropus): প্রায় ৬–৭ মিলিয়ন বছর আগে।

  • অস্ট্রালোপিথেকাস (Australopithecus): ৪–২ মিলিয়ন বছর আগে, দুই পায়ে হাঁটার দক্ষতা।

  • হোমো হ্যাবিলিস (Homo habilis): প্রায় ২.৪–১.৪ মিলিয়ন বছর আগে, সরঞ্জাম ব্যবহার শুরু।

  • হোমো ইরেক্টাস (Homo erectus): প্রায় ১.৯ মিলিয়ন–১ লাখ বছর আগে, আগুন ব্যবহার।

  • হোমো স্যাপিয়েন্স (Homo sapiens): প্রায় ৩–৪ লাখ বছর আগে, বুদ্ধিমত্তা ও ভাষার বিকাশ।

বিজ্ঞানীরা জিনোম বিশ্লেষণ ও প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন যে, মানুষ একটি ধারাবাহিক বিবর্তনের ফলাফল।


২. মানুষ কেন এসেছে? – বিজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

বিজ্ঞানীদের মতে, মানুষের পৃথিবীতে আগমন একেবারেই দৃশ্যমান প্রক্রিয়ার ফল। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলো হলো:

  1. পরিবেশের পরিবর্তন

    • প্রায় ৭ মিলিয়ন বছর আগে, আফ্রিকার বনাঞ্চল অনেকাংশে ঘাসের জমিতে রূপান্তরিত হয়।

    • দুই পায়ে হাঁটার ক্ষমতা বনাঞ্চলের বদলে মেলানো ভূমিতে সুবিধাজনক হয়ে ওঠে।

  2. খাদ্য ও বুদ্ধিমত্তা

    • ফল, বাদাম, শিকার—এইসব খাদ্যের জন্য কৌশলী পরিকল্পনা ও হাতের দক্ষতা দরকার ছিল।

    • বড় মস্তিষ্ক এবং জটিল চিন্তাভাবনার ক্ষমতা মানুষের অভিযোজনকে ত্বরান্বিত করে।

  3. সামাজিক জীবন

    • গোষ্ঠীভিত্তিক জীবন, ভাষা ও সহযোগিতার মাধ্যমে মানুষ নিরাপদে জীবনযাপন শিখেছে।

    • সামাজিক যোগাযোগ মানুষের বেঁচে থাকা এবং উন্নতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


৩. অন্যান্য বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

জীবন ও মহাবিশ্বের প্রেক্ষাপট

  • পৃথিবীতে প্রাণ কখনও “অ্যাক্সিডেন্ট” হিসেবে এসেছে, বা প্যান্স্পার্মিয়া থিওরি অনুযায়ী মহাবিশ্ব থেকে প্রাণের ধারা এসেছে।

  • তবে এই মতবাদ সরাসরি মানুষের আগমন ব্যাখ্যা করতে পারে না; এটি কেবল জীবনের সূচনা বোঝায়।

জিনগত বৈচিত্র্য

  • মানুষের জিনোমে দেখা যায়, প্রায় ১–২% ন্যেয়ানডারথাল ও ডেনিসোভান প্রজাতির জিন সংমিশ্রিত হয়েছে।

  • এটি দেখায়, মানবজাতির বিবর্তন শুধুমাত্র এক প্রজাতির নয়, একাধিক প্রজাতির মিশ্রণের ফল।


৪. মানুষের ইতিহাস ও অভিযোজন

মানুষ কেবল শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবে ও সাংস্কৃতিকভাবে বিবর্তিত হয়েছে।

  • শিকার ও কৃষি: প্রায় ১০,০০০ বছর আগে মানুষ কৃষি শুরু করে।

  • ভাষা ও শিল্প: মানুষের জ্ঞানের বিস্তার এবং সভ্যতার সূচনা।

  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: বর্তমানের মানুষের ক্ষমতা প্রায়শই পূর্বপুরুষদের তুলনায় অসম্ভব বিস্তৃত।

মানব সভ্যতার এই ধাপগুলি দেখায় যে, মানুষ শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্য নয়, পরিবেশ ও সামাজিক জটিলতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে এসেছে।


 

পৃথিবীতে মানুষ এসেছে একাধিক কারণের মিলনের মাধ্যমে—বিবর্তন, পরিবেশগত পরিবর্তন, খাদ্য ও বুদ্ধিমত্তা, সামাজিক জীবন এবং জিনগত বৈচিত্র্য
বিজ্ঞান আমাদের শেখায় যে, মানুষের আগমন কোন এক রহস্যময় পরিকল্পনা নয়, বরং প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার ফল। আমরা সেই প্রক্রিয়ার একটি চলমান অংশ।

রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব? এই ৪টি কৌশলে নিয়ন্ত্রণ করুন |

রাতে ঘুমানোর সময় ঘন ঘন ওয়াশরুমে যেতে হয়? ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে? সারাদিন কাজ করার সময়ও বারবার প্রস্রাবের চাপ অনুভব হয়? চিন্তার কিছু নেই—এটি শুধু আপনার সমস্যা নয়, বরং লক্ষ লক্ষ মানুষ এই অসুবিধায় ভুগছেন। সুখবর হলো, ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু সহজ নিয়ম মানলে অনেকটাই উপশম পাওয়া সম্ভব।

প্রথমেই জানতে হবে—বারবার প্রস্রাব হওয়ার কারণ কী?


ঘন ঘন প্রস্রাবের সম্ভাব্য কারণ

  • রাতে অতিরিক্ত পানি খাওয়া

  • চা, কফি বা ঠান্ডা পানীয়ের অতিরিক্ত ব্যবহার

  • অ্যালকোহল গ্রহণ

  • ডায়াবেটিস বা হরমোনজনিত সমস্যা

  • মূত্রনালীর সংক্রমণ (UTI)

  • প্রস্টেটের সমস্যা (পুরুষদের ক্ষেত্রে)

  • মূত্রাশয়ের পেশি দুর্বল হয়ে যাওয়া

খারাপ জীবনধারা এবং কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা একসঙ্গে মিলে এই অসুবিধা বাড়িয়ে তোলে।


ঘরোয়া প্রতিকার এবং নিয়ন্ত্রণের টিপস

১. তরল নিয়ন্ত্রণ

পানি শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরি, তবে রাতে অতিরিক্ত পান করলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।

  • ঘুমানোর অন্তত ২–৩ ঘণ্টা আগে থেকে পানি খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিন।

  • দিনের বেলায় সুষমভাবে পানি পান করুন।

২. চা, কফি এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন

  • ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল মূত্রাশয়কে উদ্দীপিত করে।

  • সন্ধ্যার পর চা, কফি বা কোল্ড ড্রিঙ্কস না খাওয়াই ভালো।

  • হঠাৎ পুরোপুরি বন্ধ করতে না পারলে ধীরে ধীরে পরিমাণ কমান।

৩. মূত্রাশয় ট্রেনিং

  • প্রস্রাবের চাপ এলেই সঙ্গে সঙ্গে বাথরুমে না গিয়ে কিছুক্ষণ ধরে রাখার চেষ্টা করুন।

  • ধীরে ধীরে মূত্রাশয় দীর্ঘ সময় প্রস্রাব ধরে রাখতে সক্ষম হবে।

  • এই অভ্যাস রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব কমাতে সাহায্য করে।

৪. কেগেল ব্যায়াম

  • পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্যই কার্যকর।

  • প্রস্রাব বন্ধ করার মতো করে ৫ সেকেন্ড পেশি শক্ত করে ধরুন, তারপর ছেড়ে দিন।

  • প্রতিদিন ৮–১০ বার করুন।

  • বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি মূত্রাশয়ের নিয়ন্ত্রণে দারুণ কার্যকরী।


অতিরিক্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

  • ডায়াবেটিস চেকআপ করুন: অতিরিক্ত প্রস্রাব ডায়াবেটিসের একটি লক্ষণ হতে পারে।

  • লবণ কম খান: অতিরিক্ত লবণ খেলে শরীরে পানি জমে এবং রাতে বেশি প্রস্রাবের চাপ হয়।

  • ওষুধের প্রভাব: কিছু ওষুধ (যেমন ব্লাড প্রেসার কমানোর ডাইইউরেটিক) প্রস্রাব বাড়াতে পারে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করুন।

  • শোওয়ার আগে টয়লেটে যান: এটি সাধারণ অভ্যাস হলেও খুব কার্যকর।


কখন ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করবেন?

যদি বারবার প্রস্রাবের সঙ্গে সঙ্গে নিচের সমস্যাগুলো দেখা দেয়, তবে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যান—

  • প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া বা ব্যথা

  • প্রস্রাবে রক্ত

  • অত্যধিক দুর্বলতা বা ক্লান্তি

  • প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারা

কারণ এগুলো ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন, কিডনি বা প্রস্টেটের সমস্যা, এমনকি ডায়াবেটিসেরও লক্ষণ হতে পারে।


 

রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা হলেও সঠিক অভ্যাস গড়ে তুললে অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তরল নিয়ন্ত্রণ, কফি–অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা, মূত্রাশয় ট্রেনিং ও কেগেল ব্যায়াম—এই চারটি টিপস নিয়মিত মানলেই ভালো ফল পাবেন। তবে সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।