জেলা:

ইচ্ছে করলে সমুদ্র নিচে মানুষ বসতি গড়তে পারে?

সমুদ্রের নিচে টানা ১২০ দিন কাটিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন জার্মানির এক ইঞ্জিনিয়ার। ইচ্ছে করলে মানুষ সমুদ্রের নিচে থাকতে পারে, গড়তে পারে বসতিও-  এমনই অভিজ্ঞাতা হয়েছে এই গড়ে উঠতে পারে- এমন অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন জার্মান এই নাগরিক।

রুডিগার কোচ। বয়স ৫৯। পেশায় মহাকাশ ইঞ্জিনিয়ার। ৩০ বর্গমিটার সমুদ্রের নিচে একটি ডুবোজাহাজের কক্ষে  (ক্যাপসুল) টানা ১২০ দিন ছিলেন। 

পানামা উপকূল থেকে ১৫ মিনিট দূরত্বে থাকা ক্যাপসুল থেকে দেখেন এক অন্য পৃথিবীকে। পানির নিচের পৃথিবী, যেখানে সবকিছু শান্ত, সবকিছু নিজেদের মতো করে বেঁচে আছে। 

৩০ বর্গমিটার, সমুদ্রের অনেক নিচে। কীভাবে আলো, খাবার পৌঁছত সেখানে? 

সবটাই হয়েছে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে। ১২০ দিনের প্রতিটি দিন  এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বাঁচতে সাহায্য করেছে সৌর বিদ্যুত। অত্যাধুনিক সব ব্যবস্থা ছিল ওই ক্যাপসুলে। টয়লেট, টিভি, কম্পিউটার। কোনও সমস্যা হয়নি রুডিগার। ছিল এক্সারসাইজ করার সাইকেল। ফলে শরীরচর্চাও হয়েছে।

এর আগে এই রেকর্ড ছিল আমেরিকার জোসেফ ডিটুরির। তিনি ১০০ দিন ডুবোজাহাজে থেকেছেন টানা। সেই রেকর্ডই নতুন বছরে ভাঙলেন রুডিগার। কেমন ছিল অভিজ্ঞতা? 

রুডিগারের কথায়, “দারুণ অ্যাডভেঞ্চার। ভীষণভাবে উপভোগ করেছি। বের হওয়ার সময় মন খারাপই হচ্ছিল।”

তিনি আরও বলেন, “এই অভিজ্ঞতার ফলে যা বুঝলাম পানির নিচে ইচ্ছে করলে মানুষ থাকতে পারে। সেখানেও বসতি গড়ে উঠতে পারে। খুবই শান্ত জায়গা। সাগরের রূপ সেখানে অনেকটা আলাদা। রাতে ঝলমল করে উঠত সবকিছু।”

গার্ডিয়ান অবলম্বনে

আয়কর রিটার্ন ভুল হলে সমাধান আছে আইনেই

আয়কর রিটার্ন ভুল হলে সমাধান আছে আইনেই

মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন

আয়কর রিটার্ন দাখিল করাকে অনেকে ঝামেলার কাজ মনে করেন। এই ঝামেলা মনে করার কারণ নানাবিধ। কেউ মনে করেন তিনি আয় করেন, সরকারকে ট্যাক্স দিয়ে দেন, এটাই যথেষ্ট, আবার রিটার্ন দেবেন কেন? এটা কেউ বুঝে বলেন কিনা তাও বোঝা যায় না, কেউ একেবারেই না বুঝে বলেন, কেউ বা বলেন ধারণা থেকে। এই বলাবলির শেষ হয়তো হবে না, কিন্তু তার বা তাহাদের বা নাগরিকদের শেষ পরিণতি হলো আয়, ব্যয় ও সম্পত্তির হিসাব এনবিআর-এ জমা দিতে হয়। কারণ রীতিতে আছে, দুনিয়ার অন্যান্য দেশে আছে, আমাদের দেশে আইনেও আছে। নাগরিক হিসেবে আইন না মানলে আর্থিক দণ্ড হওয়ার যেমন ভয় আছে, তেমনি জেলও খাটার ভয় আছে।

এসব দলিলি, বেদলিলি আলোচনা যখন বাজারে চলমান থাকে, এর মাঝে আরেক দল নাগরিককে হা-হুতাশ করতে থাকে, তার রিটার্ন ভুল হয়ে গেছে! এখন কী করবেন? কর অফিসে গেলেই বুঝি একঝাঁক বকা আর কেরানির ঘুতঘুতানি শুনতে হবে। কেউ বা মনে মনে ধরেই নিয়েছে অফিসে গেলেই কেউ একজন টেবিলের নিচ দিয়ে হাত দিয়ে বলবেন কিছু দিয়ে দেন ঠিক করে দেবেন, বা কেউ হেসে বলবে চা খাবার পয়সা দেন ঠিক করে দিচ্ছি। কেউ বলবেন, “আরে আল্লাহ! আপনি বিশাল ভুল করেছেন! আপনার বড় অঙ্কের জরিমানা হবে!” এসব হতাশা ও মুখরোচক বা অপ্রিয় কথাগুলো করদাতা শুনেন প্রতিনিয়ত, এমনটা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

আচ্ছা ধরে নিলাম আপনি আয়কর রিটার্ন নিজে নিজে করেন। আপনি একজন করদাতা যখন নিজেই রিটার্ন দাখিল করার উদ্যোগ নেবেন, বা নিয়েছেন, এই জন্য আপনাকে এই অধমের পক্ষ থেকে প্রথমেই আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। কারণ আপনি একজন গর্বিত করদাতাই শুধু নয়, আপনি একজন সচেতন নাগরিকও বটে। অধিকতর সচেতন মানুষেরাই নিজের কাজ নিজে করেন। এই জন্যে আপনি নিজের আয়-ব্যয় ও সম্পত্তির হিসাব সরকারকে দিতে উদ্যোগ নিয়েছেন বা নিজেই দিয়ে থাকেন। হ্যাঁ, সবাই সমানভাবে পারবেন এমনটা কখনও চিন্তা করা ঠিক না। ভুল হতেই পারে। ভুল যেখানে, সমাধানও সেখানে আছে।

একজন দাতা সাধারণত নিজে নিজে ফাইল করতে গিয়ে যে ভুলগুলো করে থাকেন: একাধিক খাতের আয় থাকলে সব খাতের আয় যথাযথভাবে উপস্থাপন করেন না, সম্পত্তির হিসাব সঠিকভাবে লিখেন না, কোন সম্পত্তি ক্রয় বা বিক্রি থাকলে তা সঠিকভাবে উপস্থাপন করেন না, বিগত বছরের জের টানতে ভুল করেন, বিগত বছরের নিট সম্পত্তি চলতি বছরে লেখতে ভুল করেন, আর্থিক পরিসম্পদ থেকে আয়গুলো যথাসময়ে হিসাবভুক্ত করেন না, পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করার অর্থ প্রদর্শন করেন না, আগের জমি বা প্লট বা ফ্ল্যাট বিক্রির অর্থ যথাযথভাবে উপস্থাপন করেন না বা কোনও নিকট আত্মীয় থেকে প্রাপ্ত দান প্রদর্শন করতে ভুলে যান ইত্যাদি। কিন্তু রিটার্ন জমা দেওয়ার পর তার কাছে মনে হলো তিনি এই ভুলগুলোর মধ্যে কোনও না কোনও ভুল করেছেন।

রিটার্ন নিজের কাছে ধরার সাথেই যে কাজটি করবেন: আপনার জমা দেওয়া রিটার্ন পরবর্তীতে ভুল হয়েছে এমন মনে হলে একজন নিয়মিত কর-আইনজীবীর সহায়তা নিতে পারেন বা আপনার চেয়েও ভালো জানেন এমন কোনও একজন সহকর্মী, বন্ধু বা পরিচিতজনকে অনুরোধ করতে পারেন, আপনি যা ভুল মনে করছেন, তা ভুল কিনা। যদি সত্যিই ভুল হয়েই থাকে, তাহলে কোনও রকম ভয়-ডর ছাড়াই আপনি সংশোধনী রিটার্ন দাখিল করতে পারেন। এই সংশোধনী রিটার্ন যেকোনও সময় দাখিল করা যায়। তবে আইনে আছে ৬ মাসের মধ্যে কোনও দরখাস্ত করতে হবে না। এই সময়ের মধ্যে আপনি যখনই মনে করবেন আপনার রিটার্ন ভুল হয়েছে, তখনই সংশোধনী রিটার্ন জমা দিবেন। ছয় মাস অতিবাহিত হলে আপনার সার্কেলের উপ-কর কমিশনার বরাবর একটা দরখাস্ত করে আপনি স্ব-উদ্যোগে সংশোধনী রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। এই জন্যে অহেতুক কোনও চিন্তা করা থেকে বিরত থাকলেই যথেষ্ট।

সংশোধনী রিটার্ন সম্পর্কে আইনে যে সমাধান আছে: আয়কর আইন ২০২৩ এর ১৭৫ ধারা মোতাবেক “সাধারণ রিটার্ন”-এর ক্ষেত্রে সংশোধনী রিটার্ন দাখিল করা যাবে। (১) ধারা ১৬৬ বা ২১২ অনুসারে “সাধারণ রিটার্ন” দাখিলের পর রিটার্নে কোনও উপেক্ষিত বা অশুদ্ধ বিবৃতি পরিলক্ষিত হলে, কোনও প্রকার করদায় হ্রাস না করে, সংশোধনী রিটার্ন দাখিল করা যাবে। যে ক্ষেত্রে কর নির্ধারণ সম্পন্ন হয়নি, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট করবর্ষের কর নির্ধারণী আদেশে প্রণয়নের সর্বশেষ তারিখের অন্তত ৬ (ছয়) মাস পূর্বে অথবা প্রথমবার ধার্যকৃত শুনানির তারিখের পূর্বে, যা আগে ঘটবে, সংশোধনী রিটার্ন দাখিল করতে হবে। (২) রিটার্ন বা সংশোধনী রিটার্নটি অসম্পূর্ণ বলা হলে, উপ-কর কমিশনার, কারণ উল্লেখপূর্বক, করদাতার নিকট সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি যাচাইকরণ, বিবৃতি বা দলিলাদি নোটিশে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে দাখিল করার জন্য নোটিশ প্রদান করবেন। (৩) কোনও করদাতা উপ-ধারা (২)-এর অধীনে প্রদত্ত নোটিশ সম্পূর্ণরূপে অনুসরণ করতে ব্যর্থ হলে, রিটার্ন বা সংশোধনী রিটার্ন যা অসম্পূর্ণ বলা হয়েছিল তা বাতিল বা অবৈধভাবে বিবেচিত হবে।

এছাড়া সংশোধিত রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে “আয়কর আইন ২০২৩-এর ধারা ১৮০-এর উপ-ধারা ২ দফা-গ অনুযায়ী যদি আইনের অধীন প্রদেয় কর সঠিকভাবে পরিগণিত না হয় বা সঠিক পরিশোধিত না হয়, তাহলে করদাতা একটি লিখিত বিবৃতিতে কারণ উল্লেখপূর্বক সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।”

করদাতাগণকে সতর্ক থাকতে হবে যেন আয়কর রিটার্নে ইচ্ছাকৃত কোনও ভুল তথ্য বা অতিরিক্ত কাগজপত্রাদি সংযুক্ত করা না হয়। এতে সংশ্লিষ্ট কর-কর্মকর্তারা অহেতুক বিবর্তন হন এবং করদাতাকে ভুল বুঝতে পারেন। সরল বিশ্বাসে ভুল হলে সংশোধন করা যায়। কিন্তু ইচ্ছাকৃত কোনও তথ্য গোপন করা বা ভুল তথ্য উপস্থাপন কাম্য নয়, বরং এতে আইনি জটিলতা বৃদ্ধি পায়। আসুন আইন জানি, সতর্ক থাকি এবং আইনি সুরক্ষার সুযোগগুলো গ্রহণ করি।

মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন: আইনজীবী, ঢাকা।

একটি পক্ষপাতহীন, দক্ষ বিশ্ব চাই নারীর জন্য

একটি পক্ষপাতহীন, দক্ষ বিশ্ব চাই নারীর জন্য

সুপ্রীতি ধর

জাতিসংঘের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ২০২২ সালের ঘোষণায় লিঙ্গবৈষম্যহীন একটি বিশ্ব কল্পনা করতে বলা হয়েছিল যেখানে থাকবে না কোন ধরনের পক্ষপাত, স্টেরিওটাইপ এবং বৈষম্য, বিশ্ব হবে বৈচিত্র্যময়, সমতাপূর্ণ এবং সবার সমান অন্তর্ভুক্তি যেখানে নিশ্চিত হবে, যে বিশ্বে ভিন্নতা, পার্থক্যকে মূল্যায়ন করা হবে, উদযাপন করা হবে। বলা হয়েছিল, রুখে দাও ‘পক্ষপাত’, সমতাপূর্ণ বিশ্বের এই হোক মূলমন্ত্র।

আবার ২০২৩ সালে বলা হয়েছে, জেন্ডার সমতার লক্ষ্যে উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি। সারাবিশ্বে এই খাতে নারীর অংশগ্রহণ শতকরা মাত্র ২২ ভাগ বলেই নারীকে উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় শামিল করাই ছিল এই উদ্যোগের লক্ষ্য।

ঠিক এর পরের বছরই নারীর প্রতি বিনিয়োগ বাড়ানোর কথা বলা হলো যেন উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়।

মূলত প্রতিটি ঘোষণা এবং উদ্যোগই নারীর ক্ষমতায়ণ ও অগ্রগতি সাধনের লক্ষ্যে। কোন সন্দেহ নেই এতে। একসাথে মিলে আমরাই পারি নারীর জন্য সমতাপূর্ণ এমন একটি বিশ্ব তৈরি করতে। এবং সবাই মিলেই এই পক্ষপাতদুষ্ট সিস্টেমকে বদলে দিতে।

স্বতঃস্ফূর্ত হোক অথবা অসচেতনতার কারণেই হোক, পক্ষপাত যে কাউকে, বিশেষ করে নারীর সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথটাকে কঠিন করে তোলে, কখনও কখনও তা অতিক্রম করা অসম্ভব হয়ে উঠে নারীর জন্য, সেই প্রতিবন্ধকতাগুলোকে চিহ্নিত করে উপড়ে ফেলতে না পারলে আমরা মুখে যতোই নারীর অগ্রযাত্রা আর সাম্যের গান গাই না কেন, খুব বেশিদূর নারীর পক্ষে হাঁটা সম্ভব হয় না। সমাজে, রাষ্ট্রে বৈষম্য, পক্ষপাত আছে, এটা জানাও বড় কথা নয়, একটা লেভেল-প্লেয়িং ফিল্ড গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেই হবে, এর বিকল্প নেই আর।

আমরা আমাদের কর্মক্ষেত্রগুলোতে প্রতিদিনই নানারকম পক্ষপাতের মুখোমুখি হচ্ছি, প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছি, কখনও কখনও রুখে দাঁড়ালেও সম্মিলিত প্রয়াসের অভাবে তা মূলত কাজে আসে না, উপরন্তু চাকরিচ্যুতি থেকে শুরু করে নানারকম হয়রানির শিকার হতে হয় আমাদের। তাই সংঘবদ্ধ হওয়ার কোন বিকল্প নেই। তথ্য প্রযুক্তির এই বিকাশমান ধারায় নারীর এগিয়ে যাওয়ার বিকল্পও নেই। নারী এগিয়ে যাচ্ছেও। যদিও সেই সংখ্যাটা আনুপাতিক হারে এখনও তেমন উল্লেখযোগ্য নয়।

আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো প্রতিনিয়তই এই সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করাকে উৎসাহিত করে যাচ্ছে। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে তাদের কার্যক্রম আছে। তারপরও কেন নারীদের সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ এতোটা পক্ষপাতদুষ্ট?  এমনকি ছোটবেলা থেকে স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব পক্ষপাতের সম্মুখীন আমরা হই, তার প্রতিও সরব হওয়া প্রয়োজন থাকলেও কেন আমরা তা পারছি না?

পথ একটাই সামনে। নারীর অর্জনকে উদযাপন করা জানতে হবে, করতে হবে। যেকোনো ধরনের পক্ষপাত ও বৈষম্যমূলক আচরণের বিরোধিতা করতে হবে, সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। সমতাপূর্ণ বিশ্ব তৈরির লক্ষ্যে কাজ করে যেতে হবে, পদক্ষেপ নিতে হবে। এভাবেই একদিন পক্ষপাতের চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়তে বাধ্য।

সুপ্রীতি ধর, সাংবাদিক, লেখক এবং অধিকারকর্মী

স্থানীয় সরকার: একটি সহজিয়া ভাবনা

স্থানীয় সরকার: একটি সহজিয়া ভাবনা

মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা

স্থানীয় সরকার নিয়ে বাংলাদেশে অনেক জ্ঞানগর্ভ আলোচনা ও বিশ্লেষণ দেখা যায়। অথচ দেশের সংবিধানে ‘স্থানীয় সরকার’ বলতে কোনো শব্দই নেই। বাংলাদেশের সংবিধানে স্থানীয় সরকার ধারণাকে ‘স্থানীয় শাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সংবিধানের চতুর্থ ভাগের তৃতীয় পরিচ্ছদে স্থানীয় শাসন শিরোনামে ৫৯ (১) ধারায় বলা হয়েছে ‘আইনানুযায়ী নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহের উপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক এককাংশের স্থানীয় শাসনের ভার প্রদান করা’।

এখন কথা হচ্ছে প্রত্যেক প্রশাসনিক এককাংশ বলতে আমরা কি বুঝি। পাণ্ডিত্যপূর্ণ আলোচনায় না গিয়ে সরলভাবে যদি বলতে হয় আমাদের বিদ্যমান বিভাগীয় পর্যায়, জেলা পর্যায়, উপজেলা পর্যায়, ইউনিয়ন পর্যায় একেকটি প্রশাসনিক ইউনিট। একেকটি প্রশাসনিক একাংশ। বিদ্যমান ব্যবস্থায় এই প্রশাসনিক ইউনিটগুলোতে কি সংবিধান অনুযায়ী ‘নির্বাচিত ব্যক্তিদের’ কোনো কর্তৃত্ব তো দূরের কথা উপস্থিতি জানানোর সুযোগ রয়েছে।

আমাদের রাষ্ট্রের বিদ্যমান ব্যবস্থা অনুযায়ী স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ।

প্রতিটি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জন্য রয়েছে পৃথক আইন। এই আইনগুলো প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমনভাবে পরিচালিত করছে যা প্রশাসনিক একাংশ তো দূরের কথা জনপ্রতিনিধিত্বশীলও হতে পারছে না। অন্তর্বর্তী অবস্থা বা সাময়িক বিচ্যুতি বাদ দিলে আমাদের দেশ চলে সংসদীয় ব্যবস্থায়। অথচ আমাদের স্থানীয় সরকারগুলো অনেককাংশে রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থার মতো।

আইনে সিটি করপোরেশনের মেয়রকে এতো একক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে নির্বাচিত কাউন্সিলরদের সেখানে ভূমিকা রাখার সুযোগ খুবই কম। একই অবস্থা পৌরসভা গুলোর ক্ষেত্রেও। দুটি প্রতিষ্ঠানেই  আছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা যিনি জাতীয় সরকারের একজন কর্মকর্তা।  বিধি বা প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অনেকটা তাদের তদারকিতেই রাখার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের অবস্থাতো আরো করুণ।  জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ক্ষমতার কাছে নির্বাচিত সদস্যরা প্রায় অস্তিত্বহীন। এখানেও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার ক্ষমতা কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্বাচিত চেয়ারম্যানের চেয়েও বেশি।

উপজেলা পরিষদ সবচেয়ে অকার্যকর একটি প্রতিষ্ঠান। অথচ সবচেয়ে বেশি আইনি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে উপজেলা পরিষদকে। উপজেলা পরিষদ দেশের একমাত্র স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান যাদের কাছে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ হস্তান্তরিত করা হয়েছে। যেমন উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত কৃষি বিভাগ , শিক্ষা বিভাগ , স্বাস্থ্য বিভাগ , মৎস্য বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগসহ মোট ১৭ টি দপ্তর উপজেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তরিত। অথচ কার্যক্ষেত্রে হস্তান্তরিত বিভাগগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত বিধি বা প্রজ্ঞাপন দ্বারা পরিষদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। যেখানে আইনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে উপজেলা পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেখানে প্রকৃতপক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা উপজেলা পরিষদ তথা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করেছেন। এখানে স্ব শাসিত স্থানীয় সরকারের পরিবর্তে দ্বৈত শাসনের ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করে রাখা হয়েছে।

আমাদের সবচেয়ে প্রাচীন ও গতিশীল স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ। অথচ এই প্রতিষ্ঠানকে কৌশলে আইন বহির্ভূতভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে। এখানেও নির্বাচিত চেয়ারম্যানের অনুগ্রহের কাছে বন্দী থাকতে হয় নির্বাচিত ইউ পি সদস্য, সদস্যাদের। সাম্প্রতিককালে ইউনিয়ন পরিষদ সচিব কে প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাম দেওয়া হয়েছে। এখানেও আমলাতন্ত্রের অশুভ হস্তক্ষেপের ক্ষেত্র ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। গ্রামের সাধারণ মানুষের বিভিন্ন ভাতাসহ নানা নাগরিক সুবিধা প্রদানেও রাজনৈতিক বিবেচনা প্রাধান্য পাওয়ায় স্বকীয়তা ও মর্যাদা হারাচ্ছে জনগণের সবচেয়ে কাছের এই প্রতিষ্ঠানটি। এতে করে সমাজে তৈরি হচ্ছে মধ্যসত্ত্বভোগী একটি লুটেরা গোষ্ঠী। যার দায় সংশ্লিষ্টরা এড়াতে পারেন না।

আমাদের রাজনৈতিক দল বলেন বা নীতি নির্ধারণী মহল বলেন সকলেই স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করার কথা বলেন। এরা তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করে কথা বললেও প্রায়োগিক অবস্থা বিবেচনায়ই নেন না। আইনে অনেক ক্ষমতা থাকার পরও কেন বিধি বা প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অকার্যকর করে রাখা হয় অনেকে সে খবরও জানেন না। 

দাতাগোষ্ঠীর সহায়তায় স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প মন্ত্রণালয় গ্রহণ করে। কিন্তু এগুলো প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যকরে বা জনকল্যাণে কতটুকু ভূমিকা রাখে তার সঠিক মূল্যায়ন করা হয় না। পাইলট প্রকল্পের নামে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কিছু প্রতিষ্ঠানকে কার্যকর ও সক্রিয় দেখানোর চেষ্টা থাকলেও দেশের বেশিরভাগ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো মুখ থুবড়ে পড়ে আছে।

সংবিধান ও আইনের কাঠামোতে জাতীয় সংসদ সদস্যদের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠাগুলোতে সংশ্লিষ্টতা না থাকার কথা থাকলেও, বাস্তবিক অর্থে স্থানীয় সংসদ সদস্যরাই হয়ে উঠেন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকর্তা। প্রকল্প গ্রহণ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের বিভিন্ন সহায়তা প্রাপ্তির তালিকাও এমপিদের অনুমতি নিয়ে করতে হয়। এটাই হয়ে গেছে অলিখিত রেওয়াজ। আর এখানে এমপির কর্তৃত্ব পাকাপোক্ত করতে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন সরকারি কর্মকর্তারা।

রাজনৈতিক দলের প্রতীক দিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন পদ্ধতি চালু করে স্থানীয় সরকারগুলোকে দলীয়করণ করা হয়েছে। যেখানে সাধারণ মানুষের সেবাপ্রাপ্তির চেয়ে দলীয় কর্মীদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে করে নষ্ট হয়েছে স্থানীয় সম্প্রীতির বন্ধন।

দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দেশে অন্তর্বতীকালীন সরকার দায়িত্ব পালন করছে। বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের মতো স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনও করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক স্থানীয় সরকারে দায়িত্ব পালনকারী কোনো জনপ্রতিনিধিকে সংস্কার কমিশনে রাখা হয়নি। সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ হিসেবে অত্যন্ত যোগ্য লোক। কিন্তু সদস্যদের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে কাজ করা স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধিদের এখানে কাজে লাগানো যেতে পারতো। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা হিসেবে যিনি দায়িত্ব পালন করছেন স্থানীয় সরকার সম্পর্কে তার কতটুকু ধারণা রয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলারও অবকাশ রয়েছে।

রাজনৈতিক কারণে  বা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরাগভাজন হয়ে বিভিন্ন সময় স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের বরখাস্ত করা হয়। অথচ স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের অপরাধের যাছাই ও শাস্তি প্রদান শোভনীয় হয়। এতে করে জনগণের কাছেও সরকার সম্পর্কে ভুল বার্তা যায় না। অথচ আমাদের আমলাতন্ত্র এগুলোর চর্চা বা বিচার বিশ্লেষণ না করে কর্তার ইচ্ছায় কর্ম করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতি অন্যায় ও অনেকাংশে অপরাধমূলক আচরণ করছেন।

বর্তমানে তো দেশে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি বলতে কিছু নেই। সর্বত্র প্রশাসক ও সমন্বয়কদের কর্তৃত্ব ও খবরদারী। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া দায়বদ্ধ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান পরিচালনা সম্ভবপর নয়। আমাদের নীতি নির্ধারকদের বাস্তবতা বুঝতে হবে। সত্যিই যদি দেশে কার্যকর স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হয়। তাহলে বিদ্যমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে কার্যকর সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা সংসদীয় ব্যবস্থার আদলে চলবে, না রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থার আদলে চলবে তা আগে নির্ধারণ করতে হবে।

একেক প্রতিষ্ঠানের জন্য একেক আইন না করে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার জন্য কেন্দ্রীভূত একক আইনও করা যেতে পারে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য স্থানীয় সরকার সিভিল সার্ভিস নামে পৃথক ব্যবস্থা করা যেতে পারে। যারা শুধু স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠাগুলোতেই কাজ করবেন। এতে করে প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয় সরকারে সেবা দেওয়ার জন্য অভিজ্ঞ, আইনজ্ঞ কর্মকর্তা নিয়োজন নিশ্চিত হবে।

অধ্যাদেশের বলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠাগুলোকে সাময়িক প্রাণসঞ্চার না করে নির্বাচিত জাতীয় সংসদে চুলচেরা বিশ্লেষন করে স্থানীয় সরকার কমিশন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। স্থানীয় সরকার কমিশনের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের অসদাচরণ ও আইন বর্হিভূত কার্যক্রমের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রাখা প্রয়োজন।

আমাদের সমস্যা, আমরা যে যেখানে বসি। আমরা মনে করি আমিই সেরা। সচিবালয়ের কর্তারা আইন বা বিধি করে দেন। কিন্তু এইসব বিধি দেশের সকল অঞ্চলে সমানভাবে প্রযোজ্য কিনা বা বাস্তবায়নযোগ্য কিনা সেই ভাবনা তারা মাথায় রাখেন না। দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে তৃণমূল থেকে। অথচ আমাদের এখানে কেন্দ্রে পরিকল্পনা গ্রহণ করে প্রান্তে বাস্তবায়নের জন্য পাঠানো হয়। এতে করে যেখানে যা প্রয়োজন নয় সেখানে সে রকম প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়। আর প্রয়োজনীয় প্রকল্প থেকে অগ্রাধিকার যোগ্য এলাকা বাদ পড়ে। এসব ধারণা থেকে বের হয়ে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সাধারণের ভাষা সরকারের ভাবনায় নেওয়া উচিত।

স্থানীয় সরকার মানে জনগণের কাছের সরকার। প্রকৃত অর্থে জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছাতে হলে স্বশাসিত, কার্যকর,গতিশীল স্থানীয় সরকারের বিকল্প নেই। এজন্য প্রয়োজনে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের জন্য বিভিন্ন মানদণ্ড নির্ধারণ করা যেতে পারে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই আইন প্রণেতারা যেন স্থানীয় সরকারের কার্যক্রমে বাঁধা হয়ে না দাঁড়ান তা নিশ্চিত করতে হবে। 

একসময় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সমূহে স্থানীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নিতেন। মানুষ স্থানীয় আবেগ ও স্থানীয় প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় নিয়ে তার প্রতিনিধি নির্বাচিত করতেন। এখন মনোনয়ন বাণিজ্য, কালোটাকা ও পেশিশক্তির দাপটে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ মানুষজন নির্বাচনের চিন্তাও মাথায় আনেন না।

যেখানে দেশে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য বিশ হাজার টাকা মনোনয়ন ফি নির্ধারন করা। সেখানে একজন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের জন্য এক লক্ষ টাকা মনোনয়ন ফি নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। এরকম শত শত অসঙ্গতি, আইন বর্হিভূত কার্যক্রমের ব্যবস্থা রয়েছে আমাদের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো অকার্যকর রাখতে।  একটি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম আরেকটি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের  কার্যক্রমের সঙ্গে অনেক সময় সাংঘর্ষিক হয়ে দাঁড়ায়। একই প্রকল্প একাধিক প্রতিষ্ঠান গ্রহণ করে। এতে যেমন দুর্ণীতি হয় তেমনি  সম্পদেরও অপচয় হয়। এসবও কর্তাব্যক্তিদের ভাবনায় রাখা জরুরি।

সবশেষে বলবো স্থানীয় সরকারকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার জন্য আয়ের উৎস সৃষ্টির পথ জাতীয় সরকারকেই করে দিতে হবে। মাঠ পর্যায় থেকে বিভিন্ন খাতের অর্জিত রাজস্ব আয় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বিধি নির্ধারিত পদ্ধতিতে সরবরাহ করতে পারলে, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাবলম্ভী হবে। তখন নিজেরাও  নিজেদের আয় বৃদ্ধিতে উৎসাহী হবে। এর উপযুক্ততা, বাস্তবতা এবং বাস্তবায়নযোগ্য খাতও রয়েছে। শুধু প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সদিচ্ছা, আন্তরিকতা, কর্মদক্ষতা ও জবাবদিহিতা। সর্বোপরি যোগ্য ও উপযুক্ত কর্ম পরিষদ নির্বাচিত করে নিয়ে আসার পরিবেশ নিশ্চিতের মানসিকতা।

মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা,  সাবেক স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক কর্মী।