৪৭তম বিসিএসের সব কার্যক্রম ২০২৫ সালের মধ্যে শেষ করার দাবিতে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। একই সঙ্গে বিসিএসে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কিছু পরিবর্তন আনার প্রস্তাবনা দিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক সিবগাতুল্লাহর নেতৃত্বে সংগঠনের একটি প্রতিনিধিদল পিএসসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেমকে এ স্মারকলিপি দেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, গত ২৮ নভেম্বর পিএসসির অধীনে ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আমরা দেখতে পেয়েছি ফ্যাসিবাদমুক্ত নতুন বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিসিএসকেন্দ্রিক যে পরিবর্তনের আশা ছিল তা পুরোপুরি পরিলক্ষিত হয়নি। বিজ্ঞপ্তিতে ৪৭তম বিসিএস নিয়ে পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়নি।
এতে আরও বলা হয়, কবে নাগাদ প্রিলিমিনারি টেস্ট অনুষ্ঠিত হতে পারে তার তারিখ স্পষ্ট করেও উল্লেখ করা হয়নি। এক বছরের মধ্যে একটি বিসিএসের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে এমন কোনো বিষয়ও উল্লেখ নেই। তাছাড়া বিসিএসের সিলেবাস আধুনিকীরণের বিষয়ে কোনো কিছু বলা হয়নি। প্রতিটি পরীক্ষার্থীর প্রিলি, লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষার নম্বর প্রকাশ করার কোনো বিধান রাখা হয়নি। লিখিত পরীক্ষার ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের (চ্যালেঞ্জ) কোনো সুযোগ রাখা হয়নি।
সেশনজটের বিষয়টি উল্লেখ করে স্মারকলিপিতে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রায় তিনমাসের বেশি সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে সেশনজট হয়েছে। জটের কারণে একই শিক্ষাবর্ষের (২০১৯-২০) হয়েও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন না। অনেক শিক্ষার্থীকে এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা গেছে। বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বিজ্ঞপ্তি, নভেম্বরে চূড়ান্ত ফল দাবিস্মারকলিপিতে ছাত্রশিবির ৪৭তম বিসিএস থেকে পরবর্তী সব বিসিএসের জন্য পিএসসিকে নিয়োগ ক্যালেন্ডার তৈরির আহ্বান জানিয়েছে। তাদের দাবি, জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। মার্চের প্রথম সপ্তাহে প্রিলি পরীক্ষা নিতে হবে। মার্চের শেষ সপ্তাহে প্রিলির ফলাফল ঘোষণা করতে হবে।
জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে লিখিত পরীক্ষা নিতে হবে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে লিখিত ফলাফল প্রকাশ করতে হবে। আর সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ভাইভা শুরু করতে হবে। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে চূড়ান্ত ফলাফল দিতে হবে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে কর্মক্ষেত্রে (গেজেট প্রকাশ) যোগদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
ছাত্রশিবিরের আরও যেসব দাবি
১. বিসিএসের নিয়োগের দুই মাসের মধ্যে নন-ক্যাডারের নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।
২. প্রতি পরীক্ষার্থীর প্রিলি, রিটেন ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করতে হবে।
৩. প্রিলির উত্তরপত্র প্রকাশ এবং লিখিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে পুনঃনিরীক্ষণের সুযোগ রাখা।
৪. বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ৪৭তম বিসিএসের অংশগ্রহণে ইচ্ছুক সবাই যেন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন, সেজন্য অবতীর্ণ প্রার্থীর যোগ্যতা অর্জনের সময় ৩১ ডিসেম্বর থেকে বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করা। তবে আবেদনের সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্তই বহাল থাকতে পারে।
স্মারকলিপি দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আজিজুর রহমান আযাদ, প্রচার সম্পাদক সাদেক আবদুল্লাহ, মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক সাইদুল ইসলাম, শিক্ষা সম্পাদক সুহাইল, ছাত্র আন্দোলন সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর পশ্চিম শাখার সভাপতি সালাহ উদ্দিন প্রমুখ।