শরীর থেকে টক্সিনের মাত্রা কমাতে পারলে পেট ও মস্তিষ্ক—দুইয়েরই উপকার হয়। সেই সঙ্গে শরীরে হরমোনের ভারসাম্যও বজায় থাকে। জেনে নিন, বাড়িতে নিয়মিত ব্যবহার হওয়া কোন জিনিসগুলি লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি করছে শরীরের।
১) পুরনো ননস্টিক পাত্র
ননস্টিক পাত্রের উপরের আস্তরণ একবার উঠে যেতে শুরু করলে তা আর ব্যবহার না করাই ভালো। সাধারণত ননস্টিক পাত্রের ওপরে টেফলনের প্রলেপ দেওয়া থাকে, যা এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ। নিয়মিত মাজা-ঘষার কারণে টেফলনের গায়ে আঁচড় পড়ে এবং সেখান থেকে ‘পিএফওএ’ নামক রাসায়নিক খাবারে মিশে যেতে পারে। যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
২) প্লাস্টিকের বোতল
বাজারে বিক্রি হওয়া অধিকাংশ পানীয় জলের বোতল একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকে তৈরি। দীর্ঘদিন ধরে এই বোতলে জল খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। এই বোতল তৈরিতে ব্যবহৃত ‘বিসফেনল এ’ বা ‘বিপিএ’-সহ নানা উপাদান শরীরে প্রবেশ করলে রক্তচাপের হেরফের, হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া ছাড়াও ইনসুলিন ক্ষরণে প্রভাব ফেলে। ফলে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি বাড়ে, এমনকি কিডনির গুরুতর রোগও দেখা দিতে পারে।
৩) সুগন্ধি মোমবাতি বা এয়ার ফ্রেশনার
বাজারে পাওয়া সুগন্ধি মোমবাতি ও এয়ার ফ্রেশনারে থ্যালেট এবং কিছু ক্ষতিকর অর্গ্যানিক যৌগ থাকে। এগুলি শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করার পাশাপাশি প্রদাহও সৃষ্টি করতে পারে। এর বদলে প্রাণিজ বা উদ্ভিজ্জ স্নেহপদার্থ থেকে তৈরি ‘স্টেরিন’ বা ‘বিওয়াক্স’-নির্ভর মোমবাতি ব্যবহার করা ভালো। এছাড়া সুগন্ধির জন্য কর্পূর বা ধুনো ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪) সুগন্ধিযুক্ত কাপড় ধোয়ার সাবান
কাপড় কাচার জন্য ব্যবহৃত সুগন্ধিযুক্ত সাবানেও থাকে থ্যালেট যৌগ এবং সিন্থেটিক রাসায়নিক। এগুলি শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত করে। এর বদলে সুগন্ধিবিহীন সাবান ব্যবহার করা ভালো এবং প্রয়োজনে এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে।
৫) কৃত্রিম চিনি
‘আর্টিফিশিয়াল সুইটেনার’-এর জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়ছে। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-র মতে, এই কৃত্রিম চিনির অতিরিক্ত ব্যবহার শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অ্যাসপার্টেম, সুক্রোজ়, সুক্রালোজ়, স্যাকারিন, নিওটেম ও স্টিভিয়া—এই রাসায়নিক উপাদানগুলি থাকে ডায়েট পানীয়, জাঙ্ক ফুড ও প্রক্রিয়াজাত খাবারে। গবেষণায় দেখা গেছে, এ ধরনের সুইটেনার টাইপ-টু ডায়াবিটিস, হৃদরোগ, কার্ডিয়োভাসকুলার সমস্যা, কিডনি রোগ এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়।