হিরো আলম বিদায়! নতুন হিরো রিপন মিয়া 

সোশ্যাল মিডিয়া | ফোরপিলার্সবিডি.কম
প্রকাশিত:
হিরো আলম বিদায়! নতুন হিরো রিপন মিয়া 

অসচ্ছল পরিবারের সন্তান রিপন মিয়া। তৃতীয় শ্রেণির পর আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি। ২০১৬ সালে তার মনে বয়ে যায় ঝড়। কিশোর বয়সের প্রেমের সস্পর্ক ভেঙে যায়। আড়ালে চোখের পানি মুছেছে, কষ্টের কথা কাউকে বলতেও পারেন নি। তিনি বুঝলেন কাঠ মিস্ত্রির জীবনে প্রেম ‘অনেক দূরে’ । খুব বেদনায় কাটছিল সেসময়ের দিনগুলো।

মনের কষ্ট দূর করতে মানুষ কতো কি না করে। কিন্তু রিপন কিছুই ভেবে পায়না। যতোক্ষণ কাঠ মিস্ত্রির কাজ করতেন, ততক্ষণ সেসব ভুলে থাকতেন। কিন্তু এরপর কষ্টের অন্ধকার যেন তার মনজুড়ে জেঁকে বসতো।

কষ্ট ভুলতে ক্যামেরা সামনে এসে কথা বলতে শুরু করেন রিপন। সেই ভিডিও দেখে কিছুটা হলেও মনটা ভালো হয় রিপন। এরপর রিপন বেছে নেন ভিডিও বানানো।

রিপন মিয়ার ভিডিওগুলো মূলত ছন্দে ছন্দে বলা এক-দুই লাইনের কবিতা, যদিও এর আগে কখনও কবিতা চর্চা করেননি তিনি।

প্রথম ভিডিওটিতে তিনি তার প্রিয়জনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “বন্ধু তিনি একা হলে আমায় দিও ডাক, তোমার সঙ্গে গল্প করব আমি সারারাত।”

ভিডিওটি শেষ হয়- তার স্বভাবসুলভ হাসি এবং বিখ্যাত ক্যাচ ফ্রেজ ‘আই লাভ ইউ’ বলে।

রিপনের এই ছোট্ট ছন্দময় বাক্যটি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, উৎসাহ পেয়ে আরও এমন ভিডিও বানাতে শুরু করেন তিনি।

সেসময়ের ভিডিওতে রিপন বলতেন, “হাই ফ্রেন্ডস, আমি রিপন ভিডিও”, “বন্ধু তুমি পাখি হলে, আমি হব নীড়”, “তোমার আমার প্রেম দেখতে লেগে যাবে ভিড়” ইত্যাদি।

নেত্রকোনার রিপন মিয়া, পেশায় কাঠমিস্ত্রি। কাজের ফাঁকে ফাঁকে এভাবে ভিডিও বানিয়ে সোশাল মিডিয়ায় প্রচার করতে থাকেন। কিন্তু একদিন একটি ভিডিও জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় রিপনের।

গত বছরে অটোপাশের দাবি নিয়ে রাস্তায় আন্দোলন করছিলেন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরাও। তাদের উদ্দেশ্যে ফেসবুকে একটি ভিডিও ছাড়েন রিপন মিয়া।

ভিডিওতে বলেন, “যারা এইচএসসি পরীক্ষা দিতে চাইতাছো না, তারা আমার কাছে চলে আসো কাঠমিস্ত্রির কাম হিকাইদিতাম, দৈনিক ৫০০ টাকা রোজ পাইবা, নেট এন্ড ক্লিয়ার, হাহাহা…. এটাই বাস্তব।”

শিক্ষার্থীদের সেই সময়ের অযৌক্তিক এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রিপন মিয়ার কথা যথেষ্ট যুক্তিসংগত মনে হয়েছিল দর্শকদের। হু হু করে ডিডিওর দর্শক বাড়ে। সেই সঙ্গে রিপন মিয়ার ফলোয়ার বেড়ে যায়।

গত কয়েক মাসে রিপন মিয়া তার বাস্তবধর্মী ও জীবনমুখী কথাবার্তার কারণে নেটিজেনদের কাছে আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছেন।

কাঠমিস্ত্রির কাজ করতে করতে গ্রীষ্মের তপ্ত রোদে ঘাম ঝরানো, উদ্দেশ্যহীন ঘোরাঘুরি, সাইকেল চালিয়ে কাজে যাওয়া, নিজের রান্না করা খাবার পরিবেশন কিংবা মজার ছলে ইংরেজি সংবাদপত্র পড়ার ভান করার মতো সাধারণ দৃশ্যগুলোই তার ভিডিওর মূল বিষয়বস্তু।

কোনো জাঁকজমক কিংবা ‘স্পেশাল অ্যাফেক্ট’ নেই তার ভিডিও ও রিলসে। কিন্তু তারপরও এ সরল জীবনচিত্র দর্শকদের মন জয় করেছে। গত দুই মাসে তার ভিডিওগুলো ২ কোটি বারেরও বেশি দেখা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রয়েছে তার এক মিলিয়নেরও বেশি অনুসারী।

কোটি কোটি ভিউ, মিলিয়ন ফলোয়ার থাকার পরও সোশাল মিডিয়া থেকে সেভাবে অর্থ উপার্জন করতে পারেন নি রিমন মিয়া। একের পর এক হ্যাক হয়েছে তার অনেকগুলো চ্যানেলে।

রিমন মিয়া বলেন, “লোকেরা আমার কনটেন্ট দিয়ে প্রচুর টাকা বানিয়েছে, কিন্তু আমি এক টাকাও উপার্জন করতে পারলাম না। আমি এখনও একটি জরাজীর্ণ বাড়িতেই থাকি, বাড়ির ভেতর দিয়ে কুকুর হাঁটাচলা করে।”

অনেকবার ঠকে যাওয়া পর একজন মিডিয়া ম্যানেজারের সাথে পরিচয় হয় রিপন মিয়ার, যিনি তাকে আবার নতুন করে ঘুরে দাড়াতে সাহায্য করছেন।

দুজন মিলে এখন পঞ্চাশ-পঞ্চাশ ভাগে লাভ ভাগাভাগি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো পরিচালনা করছেন।

নাম প্রকাশ করতে না চাওয়া ওই ম্যানেজার বলেন, “রিপন ভাই খুবই সহজ সরল মানুষ। মানুষ তার কাছে এসেছিল, কথা বলেছিল, আর কোনোভাবে তার পেজগুলো হ্যাক করে ফেলেছিল, যেগুলোতে ছিল মিলিয়নেরও বেশি অনুসারী।”

রিপন মিয়া এখন বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করেন। ফেসবুকে তার বর্তমানে পেজ দুটি—’খাদক রিপন’ এবং ‘রিপন মিয়া’। ইউটিউব, টিকটক, ইনস্টাগ্রামে তার এক মিলিয়নেরও বেশি অনুসারী হয়েছে।

কিছুদিন হলো, রিপন ও তার ম্যানেজার চ্যানেলগুলো থেকে আয় করা শুরু করতে পেরেছেন।

খ্যাতি এবং কিছু টাকা আসলেও, রিপন এখনও তার গ্রামীণ কাঠমিস্ত্রির জীবনকেই বেশি উপভোগ করেন। তার ভাষ্যে, আমরা গ্রামের মানুষ, কাজ ছাড়া থাকতে পারি না।

রিপন মিয়া এখন পুরোদমে কাঠমিস্ত্রি এবং সেই কাজের ভিডিওই তৈরি করেন। তিনি এখন যেমন আছেন, যেভাবে কাজ করেন, খাওয়া-দাওয়া করেন, ঘুরেন- এসব নিয়ে ভিডিও বানান।

এক ফেসবুক রিল ভিডিওতে রিপন বলেন, “আমি গরমে কাজ করছি। যারা পড়াশোনা করেছে কিন্তু চাকরি পায় না, তারা আমার সাথে যোগাযোগ করুক। আমি তাদের ব্যবসা শিখিয়ে দেব, আর তারা দিনে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা উপার্জন করতে পারবে।”

ভিডিও শেষ করেন তার পরিচিত হাসি আর ‘এটাই বাস্তব’ বলে।

আরেকটি ভিডিওতে তাকে গরমে রান্না করতে দেখা যায়। আঞ্চলিক ভাষায় তিনি বলেন, “আমাদের মা-বোনেরা এমন কষ্টে রান্না করেন, কিন্তু আমরা তাদের কষ্ট বুঝতে চাই না। একটি ভিডিওতে তাকে চশমা পরে সাইকেল চালিয়ে যৌতুক বিরোধী ক্যাম্পেইন চালাতেও দেখা যায়।”

গত বছরের জুন মাসে পিএসসি ড্রাইভার আবেদ আলীর অবৈধ সম্পদের খবর দেশজুড়ে আলোচনা তৈরি করে। রিপন এনিয়ে একটি ভিডিওতে বলেন, “আবেদ আলীর মতো আমিও ড্রাইভার হতে চাই, কিন্তু তোমার মনের, আই লাভ ইউ।”

যখন এক ইসলামি বক্তা ‘মেসেজ ড্রপ’ শব্দটি অদ্ভুতভাবে ব্যবহার করে ভাইরাল হন, রিপন তাকে অনুসরণ করে তার চিরচেনা হাসি দিয়ে বলেন, “সকাল সকাল তোমাকে একটা মেসেজ ড্রপ করতে চাই— আই লাভ ইউ।”

পুরোনো কিছু ভিডিওতে কিছু আপত্তিকর বা অশালীন শব্দ চোখে পড়তে পারে। তবে সময়ের সঙ্গে রিপন মিয়া নিজেকে পরিবর্তন করেছেন এবং আরও পরিণত হয়েছেন, যা তাকে আরও বেশি দর্শকের মনোযোগ এনে দিয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের আরও খবর

আজকে ককটেল দিবস

বাইরে ঝমঝম করে বৃষ্টি, ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়ায় বাড়িতে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার মজাটাই আলাদা। বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি, সেখানে আবার আজকাল পানীয় না থাকলে চলে না। আসর জমে উঠলে হালকা ‘ককটেল’ চুমুকে সন্ধ্যাটা যে জাস্ট রকিং পর্যায়ে চলে যাবে, তা বলাই বাহুল্য। 

 

আজ ১৩ মে, বিশ্ব ককটেল দিবস। দিবসটি বিশ্বব্যাপী উদ্‌যাপন করা হয়ে থাকে। ১৮০৬ সালের ১৩ মে ককটেলের প্রথম সংজ্ঞা প্রকাশের তারিখ চিহ্নিত করে দিবসটি উদ্‌যাপন করা শুরু হয়।

 

প্রসঙ্গত, জেমস বন্ডের সবচেয়ে পছন্দের ককটেলের সেলিব্রেশন হিসেবে সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হয়। ক্লাসিক ককটেল, মার্টিনি বানানো হয় জিন ও ভেরমাউথ দিয়ে। তবে এর নানারকম ভেরিয়েশন রয়েছে। বর্তমানে এই আইকনিক ও ট্র্যাডিশনাল ককটেলে টুইস্ট আনতে নানারকম পরীক্ষা করেন বারটেন্ডাররা। 

 

নিউ ইয়র্ক ট্যাবলয়েড দ্য ব্যালেন্স অ্যান্ড কলম্বিয়ান রিপোজিটরি ককটেলকে ‘একটি উত্তেজক মদ, যে কোনো ধরনের স্পিরিট, চিনি, জল এবং তিক্ত পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত’ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে। 

ইউটিউবে নতুন চ্যানেল খুলেছেন? কোন বিষয়গুলি মাথায় রাখলে কম দিনেই সাবস্ক্রাইবার বাড়বে?

ইউটিউবের হাত ধরে বদলেছে বিনোদনের সংজ্ঞা। দৈনন্দিন জীবন থেকে হরেক কিসিমের রান্না— নানা স্বাদের বিনোদনমূলক ভিডিয়ো দেখতে পাওয়া যায় ইউটিউবের পর্দায়। ফলে ক্রমশ লাফিয়ে বাড়ছে ইউটিউবের দর্শক সংজ্ঞা। শুধু দর্শক হিসাবেই নয়, এখন অনেকেই ইউটিউবকে উপার্জনের মাধ্যম হিসাবেও ব্যবহার করছেন। বিভিন্ন বয়সের মানুষের মধ্যে ইউটিউবার হওয়ার একটা ঝোঁক তৈরি হয়েছে। ইউটিউবার হওয়ার জন্য প্রথমে ইউটিউবে একটি নিজস্ব চ্যানেল তৈরি করতে হয়। এবং বিনোদনমূলক ভিডিয়ো বানিয়ে সেই চ্যানেলে রাখেন ইউটিউবারেরা। সফল ইউটিউবারের মাপকাঠি কিন্তু একমাত্র সাবস্ক্রাইবার। যাঁর চ্যানেলের সদস্যসংখ্যা যত বেশি, সেই চ্যানেল তত জনপ্রিয়। তা ছাড়া, চ্যানলের সদস্যসংখ্যা বেশি হলে ইউটিউব সংস্থাও সংশ্লিষ্ট চ্যানেলটিকে বেশি টাকা দেয়। তাই প্রথম ইউটিউব চ্যানেল তৈরির দিন থেকেই সদস্যসংখ্যা কী ভাবে বৃদ্ধি করা যায়, সে চেষ্টা করা জরুরি। কিন্তু সেটা খুব একটা সহজ কাজ নয়। সাবস্ক্রাইবার বৃদ্ধির বেশ কিছু নিয়মকানুন আছে। কোন বিষয়গুলি মাথায় রাখলে ইউটিউব চ্যানেলের সদস্যসংখ্যা হু হু করে বাড়বে?

ভিডিয়োর গুণমান

ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বৃদ্ধির অন্যতম উপায় হল ভিডিয়োর ‘কন্টেন্ট’। ভিডিয়োর বিষয়টি এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। আকর্ষণীয় কিন্তু রুচিসম্মত, এমন ভিডিয়ো দর্শক বেশি পছন্দ করে। এ ছাড়াও, আর কয়েকটি বিষয় আছে। ভিডিয়ো বেশি দীর্ঘ না করাই ভাল। ভিডিয়োটি ঝকঝকে হওয়া জরুরি। এবং শব্দ প্রক্ষেপণ ভাল হতে হবে। আপনার চ্যানেলের ভিডিয়োর যদি এই গুণগুলি থাকে, তা হলে সদস্যসংখ্যা বাড়বে বলে আশা করা যায়।

ধারাবাহিকতা

প্রতিটি কাজেই ধারাবাহিকতা থাকা জরুরি। এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নেই। সাবস্ক্রাইবার বৃদ্ধির অন্যতম একটি ধাপ হল নিয়মিত ভিডিয়ো আপলোড করা। রোজ ভিডিয়ো আপলোড করলে আপনার চ্যানেল নিয়ে দর্শকের আগ্রহ তৈরি হবে।

সমাজমাধ্যমে প্রচার করুন

নিজের চ্যানেলটি সম্পর্কে সমাজমাধ্যমে প্রচার করুন। তা হলে আরও বেশি দর্শকের কাছে পৌঁছনো সম্ভব হবে। চ্যানেলের লিঙ্ক সমাজমাধ্যমে দিয়ে দিতে পারেন। তা হলে যাঁরা আগ্রহী, তাঁরা চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করবে।

আকর্ষণীয় শিরোনাম

আপনার ভিডিয়োর শিরোনাম দেখেই দর্শক ঠিক করবেন সেটা আদৌ তাঁরা দেখবেন কি না। তাই ভিডিয়োর শিরোনাম সব সময়ে চটকদার এবং আকর্ষণীয় হতে হবে। এমন কিছু লিখতে হবে, যা দেখে দর্শকের আগ্রহ তৈরি হবে।

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে যেসব ভুলে হতে পারে বিচ্ছেদ

আধুনিক প্রযুক্তির এই যুগে আমরা কমবেশি সবাই ব্যস্ত। তবে এই শত ব্যস্ততার মাঝেও সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার আমাদের জীবনে আলাদা একটা জায়গা দখল করে নিয়েছে। কেননা কেবল এই মাধ্যমেই আমরা সবার সঙ্গে যোগাযোগ অক্ষুণ্ন রাখতে পারি। এটি আমাদের অনেক পুরনো স্মৃতি ফিরিয়ে দেয়, সবাইকে নিয়ে আসে আরও কাছাকাছি। কিন্তু জানেন কী, এই সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে বহু সম্পর্কে ফাটলও দেখা দেয়।

বৈবাহিক সম্পর্ক, পারিবারিক জীবন, লাভ লাইফ, বন্ধু-বান্ধব, সব সম্পর্কেই বাড়ছে দূরত্ব। এতে করে মানুষের মধ্যে ঘনিষ্ঠতাও শেষ হয়ে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে এই সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই জন্ম নেয় সন্দেহ। পরে এ নিয়েই শুরু হয় বাদ-বিবাদ। এমনকি এর কারণে সম্পর্কে বিচ্ছেদও ঘটে। তাই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি।

ভারতের লাইফস্টাইল বিষয়ক সংবাদমাধ্যম বোল্ডস্কাই-এর এক প্রতিবেদনে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে কিছু নিয়ম মেনে চলার কথা বলা হয়েছে। সেগুলো নিম্নরূপ-

সোশ্যাল মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহার বন্ধ করুন

অবসর সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতেই পারেন। কিন্তু আজকাল অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটান। দিনের বেশির ভাগ সময়ই কেটে যায় তাদের এই মাধ্যমে। কাজেই আপনার এই অভ্যাস সঙ্গীর ভালো না লাগাই স্বাভাবিক। তিনি হয়তো সারা দিন আপনাকে অনলাইন দেখছেন। এখান থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। তাই যতটা সম্ভব এই অভ্যাস ত্যাগ করার চেষ্টা করুন।​

সঙ্গীর পোস্টে লাইক ও কমেন্ট করুন

বন্ধু-বান্ধব থেকে আত্মীয়-স্বজন, সবার পোস্টেই আপনি লাইক ও কমেন্ট করেন। কিন্তু আপনার ভালোবাসার মানুষের কোনো পোস্ট দেখলেই তা এড়িয়ে যান। এমনটা করলে চলবে না। আপনার সঙ্গী সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো কিছু পোস্ট করলে তাতেও লাইক, কমেন্ট করুন। তবেই আপনাদের মধ্যে বাড়বে ঘনিষ্ঠতা, সম্পর্ক হবে দৃঢ়।

সঙ্গীর সঙ্গে ছবি দিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় মাঝেমধ্যে আপনার সঙ্গীর সঙ্গে তোলা ফটো শেয়ার করুন। সুন্দর ক্যাপশন দিন। তবেই আপনার ভালোবাসার মানুষ খুশি হবে। তিনি বুঝবেন যে আপনি তার খেয়াল রাখেন, তার কথা চিন্তা করেন এবং তাকে অগ্রাধিকার দেন।​

সঙ্গীর পোস্ট দেখে হিংসা করবেন না

সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার সঙ্গীর করা পোস্টে লাইক বা কোনো কমেন্ট দেখে ঈর্ষা করবেন না। এই বিষয়টিকে খুব সহজভাবে দেখুন। আপনি এই বিষয়গুলো যতটা সহজ করে দেখবেন, সম্পর্কে ঝামেলার আশঙ্কা থাকবে ঠিক ততটাই কম।

মুখোমুখি কথা বলুন

ফোনে কথা বলা বা অনলাইন কমিউনিকেশনে অনেক সময় মনের ভাব ঠিকমতো প্রকাশ করা যায় না, যার ফলে ভুল বোঝাবুঝি আরও বাড়ে। সেখান থেকেই বিতর্কের জন্ম হয়। তাই সঙ্গীর সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলুন। এতে আপনারা একে অপরের আবেগ, অনুভূতি বুঝতে সক্ষম হবেন।

গোপনীয়তা বজায় রাখুন

সোশ্যাল মিডিয়া মানুষকে ব্যক্তিগত তথ্য এবং অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে উৎসাহিত করে। অনেক সময় প্রেমিক-প্রেমিকারা না বুঝেই নিজেদের ব্যক্তিগত বিষয় বা অন্তরঙ্গ মুহূর্তগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে ফেলেন যা একেবারেই উচিত নয়। গোপন বিষয় সর্বদা নিজেদের মধ্যে রাখা উচিত। গোপনীয়তার অভাবেই একে অপরের প্রতি বিশ্বাস ভেঙে যেতে পারে।

হিরা দিয়ে বাঁধানো ৩০ কোটি টাকার চায়ের কেটলি!

চায়ের কাপে চুমুক না দিলে অনেকেরই সকাল শুরু হয় না। আবার বিকেলে আড্ডার আসরে এক কাপ চা না হলে ঠিক যেন জমে না! কেউ কেউ মাটির ভাঁড়ের চায়ে তৃপ্তি পান। আবার, অনেকেই শৌখিন পাত্রে চা পান করেন। সে কারণে বাজারে রকমারি চায়ের পাত্র কম নেই! কিন্তু এমন কোনও চায়ের পাত্রের কথা কখনও শুনেছেন, যার দাম বাংলাদেশি টাকায় ৩০ কোটি টাকা!

কেটলির হাতলটি সাদা রঙের, যা তৈরি করা হয়েছে হাতির দাঁত দিয়ে। বাকি চেহারায় জ্বলজ্বল করছে মণিমুক্তো। সোনা, হিরা দিয়ে কেটলিটিকে মুড়ে ফেলা হয়েছে। কেটলিতে ব্যবহার করা হয়েছে ১৮ ক্যারাট সোনা। এ ছাড়াও ১৬৫৮ হিরা দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে কেটলিটি। ব্যবহার করা হয়েছে থাইল্যান্ড এবং মিয়ানমারের ৩৮৬টি মূল্যবান রত্ন। কেটলির ভিতরের অংশটি পিতলের মতো চকচকে। ঢাকনাটিও সোনা, হিরা দিয়ে বাঁধানো।

কেটলিটির নাম ‘দ্য ইগোয়িস্ট’। ইংরেজিতে এই শব্দের অর্থ অহঙ্কারী। অবশ্য কেটলিটি যে রকম দেখতে, তাতে তার অহঙ্কার করাই সাজে। এটি তৈরি করেছে ব্রিটেনের এন শেঠিয়া ফাউন্ডেশন। তাদের তৈরি এই কেটলির দাম ৩ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় দাড়ায় প্রায় ৩০ কোটি টাকা। এতেই বিশ্বের সবচেয়ে দামি কেটলির শিরোপা অর্জন করে ফেলেছে সে।

এদিকে,  ২০১৬ সালে সবচেয়ে দামি চায়ের পাত্র হিসাবে বিশ্বে নজির গড়েছিল এই কেটলি। তবে গত ৯ আগস্ট কেটলির ছবি টুইট করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস। তার পর থেকেই আলোচনায় উঠে এসেছে এই কেটলির কথা। ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ এই পোস্টটি দেখেছেন।

পোস্টটি কমেন্ট করেছেন অনেকে, কেউ লিখেছেন, ‘কেটলিটি কিনতে চাই। কিন্তু চায়ের জন্য এটি ব্যবহার করতে পারব না। সাজিয়ে রাখব।’ আবার কেউ মজা করে লিখেছেন, ‘একটা চায়ের পাত্র আমার থেকেও ধনী। আমায় দত্তক নিক এন শেঠিয়া ফাউন্ডেশন।’

সাধারণের সাধ্যের বাইরে এই কেটলি। তাই অনেকেই বলছেন, মাটির ভাঁড়ের চা আর ৩০ কোটির কেটলির চা— ফারাক কোথায়! দুটোই তো চা। তবে চায়ের এমন শৌখিন পাত্রটি ঘিরে চাপ্রেমীদের উৎসাহ যে কম নয়, তা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের টুইটটি দেখলেই বোঝা যায়।