দীর্ঘদিন ধরেই হাঁটুর সমস্যায় ভুগছেন জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো। পাশাপাশি রয়েছে মেরুদণ্ডের সমস্যাও। তবে এত দিন বিষয়টি প্রকাশ্যে জানাননি তিনি। চলতি মাসের শুরুতে এক অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো নিজের শারীরিক জটিলতার কথা প্রকাশ করেন নিশো। তিনি বলেন, ‘আমাকে শারীরিকভাবে আরও ফিট হতে হবে। পুরোপুরি অ্যাকটিভ লাইফ যাপন করতে হলে আমার হাঁটুর সার্জারি করাতে হবে।’ বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকেই ভক্ত-অনুরাগীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়। তবে সম্প্রতি সবার দুশ্চিন্তা কমিয়ে নিশো জানিয়েছেন, তিনি এখন অনেকটাই ভালো আছেন।
নিজের শারীরিক অবস্থা নিয়ে নিশো বলেন, ‘পা এখন মোটামুটি ভালো আছে। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক ও অ্যাকটিভ লাইফে ফিরতে হলে হাঁটুর লিগামেন্ট সমস্যার জন্য সার্জারি করাতে হবে। আর স্পাইনের যে সমস্যা রয়েছে, সেটার জন্য নিয়মিত থেরাপি ও এক্সারসাইজ চালিয়ে যেতে হবে। আমি প্রায়ই নিচু হয়ে বসে থাকি, বা অনেকক্ষণ একই জায়গায় বসে থাকি। এসব অভ্যাস থেকে বের হতে পারলে হয়তো একটু স্বস্তির জীবন যাপন করতে পারব।’
নিশো জানান, প্রায় সাত-আট বছর আগে নাটকের শুটিং চলাকালে বাইক চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকেই শুরু এই জটিলতা। স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘আমি আমার সীমাবদ্ধতা বা কষ্টের কথা সাধারণত প্রকাশ করি না। নিজেই সমাধান করার চেষ্টা করি। মানসিকভাবে কখনো ভেঙে পড়ি না, নিজেকেও ভাঙতে দিই না। সাত-আট বছর আগে কাউলায় শুটিং করতে গিয়ে বাইক দুর্ঘটনায় পড়ি। হাঁটুতে মারাত্মক আঘাত পাই। তখন চিকিৎসক আমাকে এক মাস বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছিলেন।’
কিন্তু ব্যস্ত শিডিউলের কারণে মাত্র তিন দিনের বিরতি নিতে পেরেছিলেন নিশো। এরপরই আবার শুটিংয়ে ফিরতে হয় তাকে। তিনি বলেন, ‘তখন এক মাস শুটিং বন্ধ রাখলে সেটা অনেক বড় অপরাধের মতো হতো। তাছাড়া আমি নিজেও একটু উদাসীন ছিলাম। কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলাম, লিগামেন্টের সমস্যা থাকলেও কিছু ব্যায়াম করতাম। একসময় ভেবেছিলাম হয়তো পুরোপুরি ঠিক হয়ে গেছি।’
কিন্তু আসলে পুরোপুরি সেরে ওঠেননি তিনি। মাঝে মধ্যেই হাঁটুর সমস্যা কাবু করে ফেলে। গত কয়েক বছরে একাধিকবার অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে নিশোকে। তিনি বলেন, ‘এই ব্যথা অনেকটা ইলেকট্রিক শকের মতো। যখন হয়, তখন হঠাৎ করে ফেলে দেয়। আশফাক নিপুনের একটি কাজের সময় এমনটা হয়েছে, অমির একটি নাটক করার সময়ও হয়েছিল। এমনকি ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমার পর ক্রিকেট খেলতে গিয়েও দুর্ঘটনায় পড়েছিলাম। তারপরও সব সময় মনে করেছি আমি ভালো হয়ে গেছি। সর্বশেষ কিছুদিন আগে বাসায় ছেলের সঙ্গে ফুটবল খেলতে গিয়ে আবারও ইনজুরড হই। সব মিলিয়ে এখন মনে হচ্ছে, বিশ্রামে থাকাটা আমার জন্য অত্যন্ত জরুরি।’