শনিবার ২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ

শিক্ষা | ফোরপিলার্সবিডি.কম
প্রকাশিত:
শনিবার ২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ

তীব্র তাপদাহের কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে আগামীকাল শনিবার রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের সব জেলা এবং ঢাকা বিভাগের দুই জেলা, চট্টগ্রাম বিভাগের এক জেলা এবং রংপুর বিভাগের চার জেলার সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

শুক্রবার (৩ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায়।

এতে বলা হয়েছে, দেশে চলমান দাবদাহের কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসের ভিত্তিতে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের সব জেলার, ঢাকা বিভাগের ঢাকা ও টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুর এবং রংপুর বিভাগের রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও দিনাজপুরের সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল শনিবার বন্ধ থাকবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে তাপপ্রবাহের কারণে অঞ্চলভেদে বিভিন্ন জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছিল। এরপর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের আদেশ দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। শুক্রবার (৩ মে) সাপ্তাহিক ছুটি।

তবে এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, শনিবার থেকে যথারীতি সারাদেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয়ে ক্লাস চলবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সপ্তাহে ছয়দিন (শুধুমাত্র শুক্রবার ছুটি) মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম চলবে।

ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে গত ২১ এপ্রিল সারাদেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ছিল। তবে ২০ এপ্রিলে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সব স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হয়।

এরপর ২৮ এপ্রিল শর্তসাপেক্ষে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। পরদিন সোমবার (২৯ এপ্রিল) হাইকোর্ট দেশের সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধের আদেশ দেন।

এদিকে, একই দিনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে।

তবে আদালতের আদেশ হাতে না পাওয়ায় কোনো নির্দেশনা দেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে যেহেতু বিচার বিভাগ আদেশ দিয়েছেন, সেই আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে বৃহস্পতিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলেন জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা বিভাগের আরও খবর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা: ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের প্রস্তুতি ও সময়সূচি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া বর্তমানে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। যদিও কিছু বিভাগের ভর্তিযোগ্য অর্ধশতাধিক আসন এখনও শূন্য আছে, সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে যে আর মেধাতালিকা প্রকাশের সম্ভাবনা কম। পরবর্তী ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডাকসু নির্বাচনের পর বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সদ্য এইচএসসি পাস করা শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য নিজেকে তৈরি করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের মধ্যে শীর্ষ পছন্দের প্রতিষ্ঠান। তবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ছাত্র সংসদ নির্বাচন থাকায় প্রশাসন ভর্তির বিষয়ে এখনো কোনও আলোচনা শুরু করেনি। করোনার কারণে যদি কিছুটা বিলম্ব হয়ে থাকে, এবারের ভর্তি পরীক্ষা যত দ্রুত সম্ভব আয়োজনের লক্ষ্য নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত করোনার কারণে ভর্তি পরীক্ষার স্বাভাবিক সময়সূচিতে বিঘ্ন ঘটেছে। তবে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে সূচি কিছুটা এগিয়ে আসে। গত বছরের নভেম্বর মাসে আবেদন গ্রহণের পর ভর্তি পরীক্ষা চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হয়।

গত মাসে সর্বশেষ বিশেষ মাইগ্রেশনের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত ধাপের পাশাপাশি শূন্য আসনের জন্য অপেক্ষমান শিক্ষার্থীদেরও ভর্তি দেওয়া হয়েছিল। এরপর আর নতুন সুযোগ দেওয়ার সম্ভাবনা কম। ডাকসু নির্বাচনের পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) FourpillarsBD কে বলেন, ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে এখনও কোনও আলোচনা হয়নি। প্রশাসনের সবাই ডাকসু নির্বাচনের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। নির্বাচনের পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হবে।

জানা গেছে, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি প্রক্রিয়া আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলে। পরে করোনা মহামারির কারণে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়। ২০২১ সালের অনলাইন আবেদন শুরু হয় মার্চ মাসে এবং ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় বছরের মাঝামাঝি। ভর্তি পরীক্ষা মে-জুনে শুরু হয়ে অক্টোবর পর্যন্ত চলে। পরবর্তী দুই শিক্ষাবর্ষেও একই কারণে বিলম্ব হয়।

৪৭তম বিসিএস এক বছরে শেষসহ চার দাবি ছাত্রশিবিরের

৪৭তম বিসিএসের সব কার্যক্রম ২০২৫ সালের মধ্যে শেষ করার দাবিতে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। একই সঙ্গে বিসিএসে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কিছু পরিবর্তন আনার প্রস্তাবনা দিয়েছে সংগঠনটি।

 

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক সিবগাতুল্লাহর নেতৃত্বে সংগঠনের একটি প্রতিনিধিদল পিএসসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেমকে এ স্মারকলিপি দেন।

 

স্মারকলিপিতে বলা হয়, গত ২৮ নভেম্বর পিএসসির অধীনে ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আমরা দেখতে পেয়েছি ফ্যাসিবাদমুক্ত নতুন বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিসিএসকেন্দ্রিক যে পরিবর্তনের আশা ছিল তা পুরোপুরি পরিলক্ষিত হয়নি। বিজ্ঞপ্তিতে ৪৭তম বিসিএস নিয়ে পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়নি।‌

 

এতে আরও বলা হয়, কবে নাগাদ প্রিলিমিনারি টেস্ট অনুষ্ঠিত হতে পারে তার তারিখ স্পষ্ট করেও উল্লেখ করা হয়নি। এক বছরের মধ্যে একটি বিসিএসের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে এমন কোনো বিষয়ও উল্লেখ নেই। তাছাড়া বিসিএসের সিলেবাস আধুনিকীরণের বিষয়ে কোনো কিছু বলা হয়নি। প্রতিটি পরীক্ষার্থীর প্রিলি, লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষার নম্বর প্রকাশ করার কোনো বিধান রাখা হয়নি। লিখিত পরীক্ষার ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের (চ্যালেঞ্জ) কোনো সুযোগ রাখা হয়নি।

 

সেশনজটের বিষয়টি উল্লেখ করে স্মারকলিপিতে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রায় তিনমাসের বেশি সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে সেশনজট হয়েছে। জটের কারণে একই শিক্ষাবর্ষের (২০১৯-২০) হয়েও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন না। অনেক শিক্ষার্থীকে এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা গেছে। বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।

 

জানুয়ারিতে বিজ্ঞপ্তি, নভেম্বরে চূড়ান্ত ফল দাবিস্মারকলিপিতে ছাত্রশিবির ৪৭তম বিসিএস থেকে পরবর্তী সব বিসিএসের জন্য পিএসসিকে নিয়োগ ক্যালেন্ডার তৈরির আহ্বান জানিয়েছে। তাদের দাবি, জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। মার্চের প্রথম সপ্তাহে প্রিলি পরীক্ষা নিতে হবে। মার্চের শেষ সপ্তাহে প্রিলির ফলাফল ঘোষণা করতে হবে।

 

জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে লিখিত পরীক্ষা নিতে হবে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে লিখিত ফলাফল প্রকাশ করতে হবে। আর সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ভাইভা শুরু করতে হবে। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে চূড়ান্ত ফলাফল দিতে হবে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে কর্মক্ষেত্রে (গেজেট প্রকাশ) যোগদানের ব্যবস্থা করতে হবে।

 

ছাত্রশিবিরের আরও যেসব দাবি

 

১. বিসিএসের নিয়োগের দুই মাসের মধ্যে নন-ক্যাডারের নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।

 

২. প্রতি পরীক্ষার্থীর প্রিলি, রিটেন ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করতে হবে।

 

৩. প্রিলির উত্তরপত্র প্রকাশ এবং লিখিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে পুনঃনিরীক্ষণের সুযোগ রাখা।

 

৪. বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ৪৭তম বিসিএসের অংশগ্রহণে ইচ্ছুক সবাই যেন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন, সেজন্য অবতীর্ণ প্রার্থীর যোগ্যতা অর্জনের সময় ৩১ ডিসেম্বর থেকে বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করা। তবে আবেদনের সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্তই বহাল থাকতে পারে।

 

স্মারকলিপি দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আজিজুর রহমান আযাদ, প্রচার সম্পাদক সাদেক আবদুল্লাহ, মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক সাইদুল ইসলাম, শিক্ষা সম্পাদক সুহাইল, ছাত্র আন্দোলন সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর পশ্চিম শাখার সভাপতি সালাহ উদ্দিন প্রমুখ।

বৈষম্য গ্রেড মানোন্নয়নের অন্তরায়

শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যরা যেহেতু বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে পিএসসি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হন, সেহেতু তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। ছাত্রজীবনে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে একই সঙ্গে পথচলা, একই সঙ্গে বেড়ে ওঠা বয়োজ্যেষ্ঠ, বয়োকনিষ্ঠ ও সমবয়সী সতীর্থরা ১৯৮২, ১৯৮৫ সালের বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে প্রশাসন, জুডিশিয়াল ও শিক্ষা ক্যাডারে যোগদান করে কর্মজীবন শুরু করে সাম্প্রতিককালে অবসর জীবন শুরু করেছি। প্রত্যাশা করি, এক হাজার নম্বরের বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে শিক্ষা ক্যাডারে যোগদানকৃত আমার সুপ্রিয় (সপ্তম বিসিএস) ব্যাচমেটরা হয়তো নিশ্চয়ই ভুলে যাননি পদোন্নতি, সিলেকশন গ্রেড প্রাপ্তির ক্ষেত্রে আমাদের কতটা হতাশা ও বঞ্চনার জায়গা অতিক্রম করতে হয়েছে। ক্যাডার সার্ভিসের নিয়মে আমাদের সময়কালেই অতীতের না পাওয়ার পুঞ্জীভূত বেদনার কিছুটা উপশম হলেও জীবনের পড়ন্ত বিকেলে আন্তঃক্যাডার বৈষম্যের তীব্র বেদনা অনুভব করি। আগের রেওয়াজমাফিক শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের তৃতীয় গ্রেড প্রাপ্য ছিল। কিন্তু ২০১৫ সালের বেতন স্কেলে সিলেকশন গ্রেড দেওয়ার বিধান রহিত করার কারণে অধ্যাপক পদে পর্যাপ্ত ফিডার সার্ভিস নিয়েও আমরা প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হলাম। অর্থাৎ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের চাকরি কাঠামোতে সর্বোচ্চ ধাপ তৃতীয় গ্রেডের পরিবর্তে চতুর্থ গ্রেড নির্ধারিত হলো।

শিক্ষা ক্যাডারে কর্মকর্তাদের চাকরি কাঠামোতে ওপরে ওঠার সিঁড়িটিকে অন্যদের তুলনায় সংকুচিত বা খাটো করে রাখা হয়েছে। সেখানে প্রভাষক থেকে অধ্যাপক পর্যন্ত মাত্র চারটি ধাপে তাদের উপবেশন করার জন্য আসনবিন্যস্ত করা হয়েছে। সেকালে চৌদ্দ থেকে আঠারো বছর প্রভাষক পদে চাকরি করার ক্ষেত্রে তা একটি অন্যতম প্রধান কারণ। অথচ প্রশাসন, জুডিশিয়াল ক্যাডারসহ অন্যান্য ক্যাডারের কর্মকাঠামোতে ওপরে ওঠার সিঁড়িটি এতটাই সুউচ্চ ও সুপ্রশস্ত হয়েছে তাতে অনেক ধাপ সংরক্ষণ করে সেখানে উপবেশন করার আসনগুলোকে চমৎকার ও আকর্ষণীয় করে সুবিন্যস্ত করা হয়েছে। তাদের কর্মক্ষেত্রে নানা পর্যায়ে ও পরিবেশের বৈচিত্র্যময় অভিজ্ঞতা উপভোগ করে তর তর করে সুউচ্চ সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠার পথ সুগম করা হয়েছে। তবে কেউ কেউ এমন ভাবতে পারেন, আপনি শিক্ষক হয়েছেন আপনার কর্ম তো কেবল শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা, সেখানে কর্মজীবনের সিঁড়ি এতটা সুউচ্চ হওয়ার প্রয়োজন কি? শিক্ষক হিসেবে আপনার কর্মকাঠামোতে নানা বৈচিত্র্যময় পরিবেশের অভিজ্ঞতা অর্জনের প্রয়োজনই বা কি? শিক্ষক হিসেবে আপনার ওপরে ওঠার এত স্বপ্নসাধই বা কেন? শিক্ষকরা মনে হয় উচ্চাভিলাষী হয়ে উঠেছে। সে ক্ষেত্রে আমার অভিমত হলো, মেধাবী ও সৃজনশীল তরুণদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করা, সেখানে ধরে রাখা এবং হৃদয়ের সামগ্রী উজাড় করে দান করার সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বিদ্যমান বাস্তবতার নিরিখে তার প্রয়োজন আছে। যদি শিক্ষক হন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ তৈরির কারিগর। তাদের যথার্থ কারিগর হিসেবে পেতে, ওই কাজের সুনিপুণ শিল্পী বানাতে কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষের চেয়ে তাদের আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদায় খাটো করে রেখে সে কাজটি ভালো রকমের হতে পারে না।

নানা সীমাবদ্ধতার মাঝে আজও শিক্ষকরাই সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে আলো দিয়ে, ছায়া দিয়ে তৈরি করেন। সে ক্ষেত্রে বেতন কাঠামোতে ওই বৈষম্য শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যরা তথা শিক্ষক সমাজের জন্য অমর্যাদাকর বিবেচনা করি। দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবীদের কাছে আমার প্রশ্ন- আপনারা মেধাবী ও নিবেদিত তরুণদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করতে ও সেখানে ধরে রাখার উপায় খুঁজতে চান। সে ক্ষেত্রে সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের টাইমস্কেল বা সিলেকশন গ্রেড না দিয়ে এবং একই পদে তাদের কর্মজীবনের পরিসমাপ্তি ঘটলে সে পেশায় কি মেধাবীদের আকৃষ্ট করা সম্ভব হবে? তেমনি শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের কর্মকাঠামো ও বেতন কাঠামোর সিঁড়িটি যদি প্রশাসন এবং জুডিশিয়াল ক্যাডারের অনুরূপ নানা ধাপে সুবিন্যস্ত করা না যায়, তাহলে মেধাবী ও নিবেদিত তরুণরা কি সে পেশায় আকর্ষণ অনুভব করবে? শিক্ষক ও শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের প্রতি এমন বৈষম্যমূলক নীতি কী অনাগত ভবিষ্যতে শিক্ষকের মান উন্নয়ন ও দুর্বল শিক্ষার দুষ্টচক্র ভেঙে ফেলতে বা তা দূরীকরণে সক্ষম হবে? এ বিষয়ে আপনাদের সুচিন্তিত মতামত প্রত্যাশা করি।

এ পর্যায়ে শিক্ষকদের অতীত ঐতিহ্য নিয়ে কিছু কথা। ২০০৩ সালে রাজশাহী কলেজে কর্মকালে একজন জ্যেষ্ঠ সহকর্মী, যিনি রাজশাহী কলেজে ষাটের দশকের ছাত্র ছিলেন। তার মুখ থেকে জানা ঘটনাটি বর্ণনা করছি। সে সময়ে রাজশাহী কলেজে নিউ হোস্টেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তৎকালীন প্রথিতযশা অধ্যক্ষ অধ্যাপক এমএ হাই (আতফুল হাই শিবলী স্যারের পিতা) অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি মনোনীত করেছেন কারমাইকেল কলেজের খ্যাতিমান অধ্যক্ষ ও সেকালের দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ইলিয়াস আহমেদকে। তদানীন্তন সিএসপি বিভাগীয় কমিশনার একজন বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এবার ভাবুন আজকে সে ক্ষেত্রে আমরা কোথায় অবস্থান করছি। সেকালের অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকদের প্রজ্ঞা ও সৃজনশীলতার শক্তি আমাদের অতীত গৌরবময় ঐতিহ্য। আজকে স্বাধীন দেশে শিক্ষাঙ্গনের ওই অতীত গৌরবময় ঐতিহ্যের স্মৃতিচারণ হতে পারে। বাস্তবে তার সাক্ষাৎ পাওয়া ভার। আমি মনে করি, শিক্ষাব্যবস্থা পুনরুদ্ধারে শিক্ষাঙ্গনের ওই হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে দিতে হবে বা সেখানে ফিরে যেতে হবে। আমরা শিক্ষকতা পেশায় অতীতের হারানো ঐতিহ্য তখনই ফিরে পাব, যখন আমাদের মেধাবী তরুণরা প্রশাসক, বিচারক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী পেশার মতো শিক্ষকতা পেশাতে আকর্ষণ অনুভব করবে এবং শিক্ষকতা পেশাকে সর্বোচ্চ মর্যাদার জায়গা মনে করতে পারবে।

প্রাক্তন অধ্যক্ষ (ড. মো. মোস্তাফিজার রহমান), নওগাঁ সরকারি কলেজ

 

Collect : সজীব কুমার পাল।

বন্যায় স্থগিত সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা ১১ আগস্টের পর

বন্যা পরিস্থিতির কারণে সিলেট বিভাগের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা ৩০ জুন থেকে আগামী ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। স্থগিত পরীক্ষাগুলো ১১ আগস্টের পরে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।

রোববার (৩০ জুন) গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান তিনি।

তপন কুমার সরকার বলেন, বন্যা পরিস্থিতির কারণে সিলেট বোর্ডের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। স্থগিত পরীক্ষাগুলো ১১ আগস্টের পর থেকে শুরু হবে।

এর আগে বন্যা পরিস্থিতির কারণে সিলেট বিভাগের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড।

এতে জানানো হয়, সিলেট অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় সিলেট বিভাগের আওতাধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, সিলেট; বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন আগামী ৩০ জুন থেকে অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ৯ জুলাই থেকে সিলেট বিভাগে যে পরীক্ষাগুলো হওয়ার কথা ছিল সেগুলো যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে। আর স্থগিত পরীক্ষার সময়সূচি পরে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে।