দাঁড়িয়ে পানি পান করা কতটা বিপদের?

স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা | ফোরপিলার্সবিডি.কম
প্রকাশিত:
দাঁড়িয়ে পানি পান করা কতটা বিপদের?

পানির অপর নাম জীবন। চিকিৎসকরা শরীরে পানির ভারসাম্য রক্ষার ব্যাপারে নজর রাখার পরামর্শ দেন। একটা প্রচলিত ধারণা যে, দাঁড়িয়ে পানি পান করলে নাকি দেহের জয়েন্টগুলোতে প্রভাব পড়তে পারে এবং ব্যথা হতে পারে।

প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বলা হয়ে আসছে যে, দাঁড়িয়ে নয় পানি পান করতে হবে বসে। কিন্তু এই প্রচিলত ধারনার পিছনে কি আদৌ কোনও বিজ্ঞান আছে? নাকি সবটাই অলীক কল্পনা!

ভারতের ডায়েটিশিয়ান জুহি অরোরা সদ্য একটি রিল শেয়ার করে এই বিষয়ে কথা বলেছেন। তার মতে, এটি আসলে একটি গুজব। ভিডিওতে জুহি বলেছেন, “যদিও এই গুজবগুলো প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ঘুরপাক খাচ্ছে, এর পিছনে কোনও বৈজ্ঞানিক যুক্তি নেই।”

তার মতে “আমরা পানি পান করি, তা খাদ্যনালী দিয়ে পাকস্থলীতে যায়। দাঁড়িয়ে জল পান করলে হাঁটুর উপর প্রভাব পড়তে পারে, এই ধারনাটিতে বাস্তবতার চেয়ে মিথের প্রভাব বেশি। দাঁড়িয়ে পানি পান করলে হাঁটুর স্বাস্থ্যের উপর সরাসরি প্রভাব পড়ে, এমন কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। তবে, মানুষের বিশ্বাস দাঁড়িয়ে পানি পান করলে তা খুব দ্রুত পেটে শোষিত হতে পারে, যা অস্বস্তি বা বদহজমের কারণ হতে পারে। কিন্তু এটি কোনওভাবে হাঁটুর স্বাস্থ্যের সাথে সম্পর্কিত নয়।”

কিছুদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে, ভারতের দিল্লির অ্যাপোলো স্পেকট্রারের জেনারেল ফিজিশিয়ান ডাঃ বিপুল রাস্তোগি বলেছিলেন, “দাঁড়িয়ে পানি পান করা ক্ষতিকর।”

তার মতে “আমরা যখন দাঁড়িয়ে পানি পান করি, তখন তা দ্রুত খাদ্যনালীতে প্রবেশ করে এবং তারপর পেটে গিয়ে হজম প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটায়। এরফলে স্নায়ুগুলির ওপর চাপ পড়ে। যা দেহে তরল পদার্থের ভারসাম্য নষ্ট করে। এর প্রভাবে সময়ের সঙ্গে জয়েন্টগুলিতে তরল জমা হতে পারে, যার ফলে আর্থ্রাইটিসের মতো রোগ বাঁধতে পারে শরীরে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা যখন দাঁড়িয়ে পানি পান করি, তখন প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং ভিটামিন পরিপাকতন্ত্রে পৌঁছয় না। দাঁড়িয়ে পানি পানের সময়, উচ্চ চাপে তরল পদার্থটি কোনও পরিস্রাবণ ছাড়াই পেটের নীচের অংশে চলে যায়। এর ফলে অতিরিক্ত পানি মূত্রাশয়ে জমা হয় এবং কিডনির কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”

স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিভাগের আরও খবর

এক লবঙ্গর এত গুণ! চেনা মশলার অচেনা উপকারিতা

লবঙ্গ বা লবঙ্গ গাছের কুঁড়ি খুবই সহজলভ্য ও অতিপরিচিত একটি মশলা। যার গুণ শুধু রান্নায় নয়, মানবজীবনে আরও অনেক কিছুতে লবঙ্গের প্রয়োজন রয়েছে। সুগন্ধীর পাশাপাশি ঔষধিগুণ সম্পন্ন।

লবঙ্গতে ‘ইউজেনল’ নামক একপ্রকার যৌগ থাকে, সেই কারণেই এটি সুগন্ধবিশিষ্ট। এছাড়া ভিটামিন, অন্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও মিনারেলসে ভরপুর এই মশলা। লবঙ্গে থাকে ফোলেট, বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি, এ, ডি, ই, কে। থাকে ক্যালশিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, বিটা ক্যারোটিন। এই সব যৌগগুলি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। লবঙ্গে যে পলিফেনল আছে তা জীবাণুনাশক, বেদনানাশক, প্রদাহনাশক। অর্থাৎ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ সম্পন্ন। শরীরের ফ্রি র‌্যাডিক্যালস কমায়। ম্যাঙ্গানিজের একটি উৎকৃষ্ট উৎস হল লবঙ্গ, যা মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা করে।

রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণে লবঙ্গ দারুণ কাজ করে। ২০১৯ সালে গবেষণায় দেখা গেছে ‘নাইজেরিসিন’ নামক উপাদান ইনসুলিনের ক্ষরণ বাড়িয়ে সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

বেদনানাশক গুণ রয়েছে লবঙ্গ তেলের। হাড় শক্ত রাখতে ও আর্থ্রাইটিস কমাতে লবঙ্গে উপস্থিত ‘পলিফেনল’ কার্যকর। জয়েন্টে ব্যথা, পেশির ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

ঠান্ডা লেগে সর্দিকাশি ও হাঁপানি জনিত সমস্যায় কাজে দেয়। লবঙ্গ তেল ফুসফুসের ব্যাকটিরিয়ায় সংক্রমণ রোধ করতে খুবই উপকারী। লবঙ্গ তেল ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণ জনিত সর্দি-কাশি কমাতে সাহায্য করে।

বিজ্ঞানসম্মতভাবে প্রমাণিত হয়েছে, লবঙ্গ শরীরের যে কোনও টিউমারের বৃদ্ধি রোধ করে ক্যানসার সেলগুলিকে নষ্ট করে দেয়। এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানগুলি খুবই উপকারী। ব্রেস্ট ক্যানসার ও খাদ্যনালির ক্যান্সার রোধে দারুণ কার্যকর।
মুখ বা দাঁতের সমস্যায় লবঙ্গ তেলের ব্যবহার অতিপ্রচলিত।

লবঙ্গে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি ও অ্যানেসথেটিক গুণাগুণ আছে তাই মুখ, গলা ও দাঁতের বিভিন্ন সমস‌্যা কমায়। এছাড়া অ্যান্টিসেপটিক উপাদান রয়েছে তাই মুখের দুর্গন্ধ নাশ করে, গলায় ইনফ্লেকশন, মুখের আলসার সারিয়ে তোলে। গরমজলে লবঙ্গ তেল মিশিয়ে কুলকুচি করলে মুখের স্বাস্থ্য অটুট থাকে।

গরম পড়লেই ফোঁড়া হয়? কীভাবে সামলাবেন

গরমে, রোদে, ঘামে সবাই অস্থির। তবে এই সময়ের সবচেয়ে কষ্টকর ফোঁড়ার সমস্যা। ফোঁড়া যেমন যন্ত্রণাদায়ক, তেমনই সারতেও বেশ সময় লাগে।

ফোঁড়া হওয়ার নেপথ্য কারণ মূলত জীবাণুর সংক্রমণ। শরীরের কোনও স্থানে যদি ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে, সেখান থেকেই ফোঁড়া হয়। ত্বকে, লোমকূপে স্ট্যাফাইলোকক্কাস নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে ফোঁড়া, লোমফোঁড়া ইত্যাদি হয়।

ফোঁড়া কেন হয়?
সাধারণত ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন থেকেই ফোঁড়ার সৃষ্টি। স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ ও ঘামের জন্য কিছু ব্যাকটেরিয়া ত্বকে খুব সহজেই বংশবৃদ্ধি করতে পারে। ফলস্বরূপ ফোঁড়া, ফুসকুড়ির মতো সমস্যা দেখা যায় ত্বকে।

ফোঁড়া হলেই অনেকে ভাবেন ফাটিয়ে দিলেই বুঝি মুক্তি। হাত নিশপিশ করে ফোঁড়া ফাটানোর জন্য। তবে এমনটা করা একেবারেই উচিত নয়। ফোঁড়া হলে একটু চুলকানির অনুভূতিও আসে। কিন্তু ফোঁড়াতে বারবার হাত দিলে বা ফোঁড়াকে অযথা টেপাটিপি করলে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। তাই ফোঁড়া উঠলেই সেখানে বারবার হাত দেবেন না বা ফাটানোর চেষ্টা করবেন না।

সহজাত প্রবণতা মতোই ফোঁড়া হলে আমরা ফোঁড়ার জায়গাটাকে আরও বেশি বেশি খোঁচাতে চাই। চিকিৎসকদের মতে, এই ইচ্ছেটাকে দমিয়ে রাখা উচিত। ফোঁড়াকে (Abscess) নিজে নিজে ফেটে যেতে দিন। কোনও ভাবেই হাত দেবেন না।

ফোঁড়ার জায়গায় ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ কমাতে মাঝে মাঝে হালকা গরম সাবান পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন। ফোঁড়া নিজে থেকে ফেটে গেলে ও পুঁজ বের হয়ে গেলে ভালো ভাবে সাবান, গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন।

 ফোঁড়া হলে কী কী করবেন?

শরীরের যে অংশেই ফোঁড়া হোক, নিজে চিকিৎসা করতে যাবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলার চেষ্টা করুন।

৫০ গ্রাম নিমের পাতা বেটে নিয়ে তাকে একটা ট্যাবলেটের মতো তৈরি করে নিন। একে পুলটিসের মতো ফোড়ার ওপর লাগালে ফোড়া সেরে যায়। ফোড়াতে যদি পুঁজ হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে নিমের পাতার সঙ্গে সম পরিমাণ গোলমরিচ গুঁড়ো করে দিয়ে ফোড়াতে লাগান। ফোঁড়া দ্রুত শুকিয়ে যাবে।

দুটো পুঁই পাতা ভাল করে ধুয়ে বেটে নিন। দিনে দু বার ব্রণ বা ফোঁড়ার ওপর পুরু করে প্রলেপ দিয়ে রাখুন।

দুটি ফুল এবং পাঁচটি পাতা ভালো করে ধুয়ে থেঁতলে নিন। দিনে দু'বার ফোঁড়া বা ব্রণের ওপর পুলটিশ হিসেবে লাগান।

ফোঁড়া হলে সুগন্ধিযুক্ত কোনও সাবান ব্যবহার না করাই ভাল। তা ছাড়া বাজারচলতি কোনও ক্রিম, সুগন্ধিও এড়িয়ে চলুন। বরং নিমজলে স্নান করতে পারেন। উপকার পাবেন। আবার স্নানের জলে এক ফোঁটা ডেটলও ফেলে দিতে পারেন।

পাঁচ কচি পাতা এবং দুটো ফুল ভাল করে ধুয়ে থেঁতলে নিন। এটা সরাসরি ব্রণ অথবা ফোঁড়ার উপর লাগিয়ে রাখুন। দিনে দু'বার এভাবে করুন।

কোনও বয়স্ক ব্যক্তির যদি বার বার ফোঁড়া হতে থাকে, তাহলে তাঁর একবার ব্লাড সুগার পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া দরকার। কারণ রক্তে সুগারের পরিমাণ বেড়ে গেলেও ফোঁড়ার সমস্যা হতে পারে।

যারা গরম চায়ের সঙ্গে সিগারেট খায়, শরীরে কী মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে জানেন?

অফিসে কাজের ফাঁকে, সকালে-বিকেলে চায়ের সঙ্গে বা যে কোনও ছুতোয় চায়ের সঙ্গে টা হিসেবে সিগারেট খান। 

 

যাঁরা নিয়মিত ধূমপান করেন, তাঁদেরকে ধূমপান না করার হাজার হাজার কারণ বলা হয়। কিন্তু সকলে এই কথাগুলিতে কান দেন না। কিন্তু এঁদের মধ্যেই অনেকের আবার গরম চায়ের সঙ্গে সিগারেটের সুখটান নিতে দারুণ লাগে। অফিসে কাজের ফাঁকে, সকালে-বিকেলে চায়ের সঙ্গে বা যে কোনও ছুতোয় চায়ের সঙ্গে টা হিসেবে সিগারেট খায়। 

 

গবেষণায় জানা গিয়েছে, যারা দিনে অন্তত এক গ্লাস অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় পান করেন এবং পাশাপাশি দিনে অতিরিক্ত গরম চা পান করেন তাদের খাদ্যনালীতে ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি। 

 

কিন্তু জানেন কি, চা আর সিগারেটের এই যুগলবন্দি আপনার স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। গবেষণা বলছে, চা এবং সিগারেট একসঙ্গে খেলে বাড়তে পারে ক্যানসারের ঝুঁকি। 'অ্যানালস অফ ইন্টারনাল মেডিসিন' নামে চিকিৎসা সংক্রান্ত পত্রিকায় এমন কথাই বলা হয়েছে। 

 

তামাক ও অ্যালকোহল দুটো থেকে দূরে থাকাই হচ্ছে এই ক্যানসার প্রতিরোধের ভালো উপায়। এক বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস না থাকলে শুধু চা পান করা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। 

 

এছাড়া ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রতিদিন অতিরিক্ত গরম চা পান করলে তাঁদের অনেকাংশেই ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। 

 

আমেরিকার এক বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, তামাক ও অ্যালকোহল দুটো থেকেই দূরে থাকাই হচ্ছে এই ক্যানসারের প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো উপায়। কিন্তু ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস না থাকলে শুধু চা পান করা নিয়ে চিন্তিত হবার কিছু নেই। 

আমরা কৃত্রিম হৃদয়ের কত কাছাকাছি?

হৃদয়(Heart) আসলে একটি মোটামুটি সহজ অঙ্গ। এটি একটি পাম্প, কয়েকটি ভালভ, টিউব এবং চতুর ওয়্যারিং সহ চারটি চেম্বারের দ্বারা গঠিত।

 

যখন পাম্প আর কাজ করে না, তখন জিনিসগুলো খারাপ দেখাতে শুরু করে। গুরুতর হার্ট ফেইলিউরযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে, পাম্প এতটাই দুর্বল থাকে যে এটি আর কার্যকরভাবে শরীরের মধ্য দিয়ে রক্ত চলাচল করে না।

 

আক্রান্তদের শ্বাসকষ্ট হয়। এছাড়া বিশ্রামেও তাদের অঙ্গগুলি আর পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত ​​সরবরাহ করে না। কারন সেখানে অক্সিজেন এবং পুষ্টির অভাব রয়েছে। তখন এটির একমাত্র সমাধান একটি নতুন হৃদয়।

 

কিন্তু , হৃদয় দাতা ব্যাক্তি খুঁজে পাওয়া খুবই কঠু। জার্মানিতে, পরিস্থিতি বিশেষভাবে কঠিন কারণ অঙ্গদানের জন্য সক্রিয় সম্মতি প্রয়োজন, এর জন্য স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীরা জরুরীভাবে বিকল্প উপায় খুঁজছে।

 

1982 সালে প্রথম হৃদয় ট্রান্সপ্লান্ট করা হয় সফল ভাবে। কার্ডিওলজিস্ট এবং হার্ট সার্জনরা 60 বছরেরও বেশি সময় ধরে কৃত্রিম হৃদপিণ্ড তৈরির চেষ্টা করছেন রোগীদের জন্য। 

 

যাদের হৃদয় গুরুতরভাবে অসুস্থ কিন্তু সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, এমন সিস্টেম রয়েছে যা হৃদয়ের অংশগুলিকে সমর্থন করতে পারে। কিন্তু রোগীদের জন্য যাদের পুরো হার্ট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, এটি যথেষ্ট নয় - তাদের একটি প্রতিস্থাপন প্রয়োজন।

 

1982 সালে, প্রথম সম্পূর্ণ এবং স্থায়ী হৃদয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসানো হয়েছিল। এই হৃদপিন্ডের শুধুমাত্র মৌলিক ফাংশন আছে, এবং এগুলি রোগীর নির্দিষ্ট প্রয়োজন অনুসারে তৈরি করা হয় না।

 

এ কারণেই রোগীর প্রয়োজনে অভিযোজিত প্রথম কৃত্রিম হৃদপিণ্ডের ইমপ্লান্টেশনকে একটি সংবেদন হিসাবে স্বাগত জানানো হয়েছিল।

 

এর পিছনে মাস্টারমাইন্ড, ফরাসি হার্ট সার্জন অ্যালাইন কার্পেন্টিয়ার, এর আগে হার্টের ভালভ দিয়ে নিজের জন্য একটি নাম তৈরি করেছিলেন। তিনি পুরানো, কৃত্রিম উপকরণগুলি প্রতিস্থাপনের জন্য শূকরের তরুণাস্থির মতো জৈবিক উপকরণ প্রবর্তন করেছিলেন।

 

এটির সুবিধা ছিল যে নতুন হার্টের রোগীদের আর সারা জীবনের জন্য অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট ওষুধের প্রয়োজন হয় না। কৃত্রিম পৃষ্ঠের সাথে, এই ওষুধগুলি প্রয়োজনীয় - তবে তারা গুরুতর রক্তপাতের উচ্চ ঝুঁকি বহন করে।

 

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে 50 টি কৃত্রিম হৃদপিণ্ড বসানো হয়েছে

কার্পেন্টিয়ার জৈবিক উপাদানকে পুরো হৃদয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি অত্যাধুনিক সেন্সরের মতো অন্যান্য অনেক দিকও টুইক করেছেন।

 

ফলাফল হল একটি কৃত্রিম হৃদপিন্ড যা এটি ব্যবহারকারী ব্যক্তির শারীরিক কার্যকলাপের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। আপনি যদি শুধু শুয়ে থাকতে না চান, পাশাপাশি বসতে, হাঁটতে, দৌড়াতে এবং নাচতে চান তবে আপনার এমন একটি হৃদয় দরকার যা সবকিছু করতে পারে।

 

এই তথাকথিত কারম্যাট হার্টের প্রথম প্রাপক ছিলেন একজন 76 বছর বয়সী একজন ব্যক্তি যার হৃদযন্ত্রের গুরুতর অবস্থা ছিল। নতুন পাম্পের সাথে, তিনি আরও 74 দিন বেঁচে ছিলেন।

 

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, পৃষ্ঠের উপাদান, সফ্টওয়্যার এবং পাম্পগুলিতে আরও অনেক সমন্বয় করা হয়েছে, কৃত্রিম হৃদপিণ্ড তৈরিকারী সংস্থা কারম্যাটের প্রধান স্টিফেন পিয়াট ব্যাখ্যা করেছেন যে,

 

এই ধরনের প্রায় 50টি হার্ট এখন রোগীদের মধ্যে রোপণ করা হয়েছে। 14 রোগীদের জন্য, এটি একটি হার্ট দাতা পাওয়ার আগে একটি অন্তর্বর্তী সমাধান ছিল। বর্তমানে, কারম্যাট হার্ট এখনও প্রায় 15 জনের মধ্যে স্পন্দিত হচ্ছে, তবে বাকি রোগী মারা গেছে।

 

কারম্যাট হার্ট একটি জটিল প্রযুক্তি

কখনও কখনও, এমনকি প্রযুক্তিগত sensations ছোট সমস্যা হতে পারে। কারম্যাট হৃদয় উদাহরণস্বরূপ খুব বড়। এটি ছোট বুকের জন্য উপযুক্ত নয়। মহিলাদের মাঝে প্রায়ই এটি ইমপ্লান্ট করতে সক্ষম হয় না।

 

এছাড়া এটি খুব জটিল - কারম্যাট হার্টে প্রায় 250টি উপাদান রয়েছে। বার্লিনের চারাইট হাসপাতালের জার্মান হার্ট সেন্টার থেকে ইভগেনিজ পোটাপভ বলেছেন, "প্রত্যেকটিই ভেঙে যেতে পারে।"

 

এটি অন্যান্য কৃত্রিম হার্টের তুলনায় কারম্যাট হার্টকে অনেক বেশি দুর্বল করে তোলে। এবং সর্বদা হিসাবে, সুবিধাগুলি একটি মূল্যে আসে। প্রতি হার্টে প্রায় $200,000 (€183,000) দাম ঠিক কম নয়।

 

পোটাপভ কোম্পানির মতে, প্রায় অর্ধেক প্রতিস্থাপিত রোগী অস্ত্রোপচারের ছয় মাসের মধ্যে মারা যায়। কিন্তু কারমত হার্টের কারণে এসব মানুষ মারা যায়নি। কৃত্রিম হৃদপিণ্ড গ্রহণকারী রোগীরা সাধারণত গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।

 

কম গুরুতর হার্টের সমস্যাগুলির জন্য, সহজ সমর্থন সিস্টেমগুলি ইতিমধ্যে বেশ কয়েক বছর ধরে ত্রাণ প্রদান করতে পারে যখন একটি দাতা অঙ্গের সন্ধান অব্যাহত থাকে।

 

কৃত্রিম হৃদয় একটি অস্থায়ী সমাধান

দীর্ঘমেয়াদে কারম্যাট হৃদয় নিয়ে বেঁচে থাকা কি সম্ভব? এটি মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন।

 

পিয়াট ঘোষণা করেছে যে কোম্পানিটি আগামী বছরে দীর্ঘমেয়াদী থেরাপির দিকে অগ্রসর হবে। এখনও অবধি, কারম্যাট হার্ট শুধুমাত্র ইউরোপীয় বাজারে একটি অন্তর্বর্তী সমাধান হিসাবে অনুমোদিত হয়েছে।

 

"যদি এটি শুধুমাত্র অর্ধেক আকারের হয় এবং কোন প্রযুক্তিগত সমস্যা না থাকে, আমি অবিলম্বে সারা বিশ্বের মাঝে ছরিয়ে দিতে পারি," পোটাপভ বলেছিলেন, 2021 সালের শেষের দিকে, মানের সমস্যার কারণে কোম্পানিটিকে তার পণ্যটি এক বছরের জন্য বাজার থেকে সরিয়ে নিতে হয়েছিল।

 

ইতিমধ্যে, গবেষকরা জেনেটিক্যালি পরিবর্তিত শূকরের হৃদপিণ্ড এবং প্রকৌশলী টিস্যু নিয়ে পরীক্ষা করছে। কারম্যাট হার্ট যখন তার পরবর্তী বার্ষিকী উদযাপন করবে ঠিক তখনি তারা কৃত্রিম হার্টের চেয়ে বেশি সফল হবে কিনা বা অঙ্গ দান করার নতুন ইচ্ছা ভবিষ্যতে প্রয়োজন কমাতে পারে কিনা তা স্পষ্ট নয়।