ইচ্ছে করলে সমুদ্র নিচে মানুষ বসতি গড়তে পারে?

পরিবেশ | ফোরপিলার্সবিডি.কম
প্রকাশিত:
ইচ্ছে করলে সমুদ্র নিচে মানুষ বসতি গড়তে পারে?

সমুদ্রের নিচে টানা ১২০ দিন কাটিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন জার্মানির এক ইঞ্জিনিয়ার। ইচ্ছে করলে মানুষ সমুদ্রের নিচে থাকতে পারে, গড়তে পারে বসতিও-  এমনই অভিজ্ঞাতা হয়েছে এই গড়ে উঠতে পারে- এমন অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন জার্মান এই নাগরিক।

রুডিগার কোচ। বয়স ৫৯। পেশায় মহাকাশ ইঞ্জিনিয়ার। ৩০ বর্গমিটার সমুদ্রের নিচে একটি ডুবোজাহাজের কক্ষে  (ক্যাপসুল) টানা ১২০ দিন ছিলেন। 

পানামা উপকূল থেকে ১৫ মিনিট দূরত্বে থাকা ক্যাপসুল থেকে দেখেন এক অন্য পৃথিবীকে। পানির নিচের পৃথিবী, যেখানে সবকিছু শান্ত, সবকিছু নিজেদের মতো করে বেঁচে আছে। 

৩০ বর্গমিটার, সমুদ্রের অনেক নিচে। কীভাবে আলো, খাবার পৌঁছত সেখানে? 

সবটাই হয়েছে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে। ১২০ দিনের প্রতিটি দিন  এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বাঁচতে সাহায্য করেছে সৌর বিদ্যুত। অত্যাধুনিক সব ব্যবস্থা ছিল ওই ক্যাপসুলে। টয়লেট, টিভি, কম্পিউটার। কোনও সমস্যা হয়নি রুডিগার। ছিল এক্সারসাইজ করার সাইকেল। ফলে শরীরচর্চাও হয়েছে।

এর আগে এই রেকর্ড ছিল আমেরিকার জোসেফ ডিটুরির। তিনি ১০০ দিন ডুবোজাহাজে থেকেছেন টানা। সেই রেকর্ডই নতুন বছরে ভাঙলেন রুডিগার। কেমন ছিল অভিজ্ঞতা? 

রুডিগারের কথায়, “দারুণ অ্যাডভেঞ্চার। ভীষণভাবে উপভোগ করেছি। বের হওয়ার সময় মন খারাপই হচ্ছিল।”

তিনি আরও বলেন, “এই অভিজ্ঞতার ফলে যা বুঝলাম পানির নিচে ইচ্ছে করলে মানুষ থাকতে পারে। সেখানেও বসতি গড়ে উঠতে পারে। খুবই শান্ত জায়গা। সাগরের রূপ সেখানে অনেকটা আলাদা। রাতে ঝলমল করে উঠত সবকিছু।”

গার্ডিয়ান অবলম্বনে

পরিবেশ বিভাগের আরও খবর

রাত ১টার মধ্যে যে সকল জেলায় তীব্র ঝড়ের পূর্বাভাস

রোববার ২৬ মে দিনগত রাত ১টা পর্যন্ত পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। দেশের বেশ কিছু অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। 

 

 এতে বলা হয়েছে,কুমিল্লা, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে রাত ১টার মধ্যে পূর্ব অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার অথবা তার চেয়ে বেশি বেগে ঝোড়োহাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিও হতে পারে।

 

এসকল এলাকার নদীবন্দরগুলোকেও ৪ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। 

 

এবং দেশের অন্যত্র পূর্ব অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলা হয়েছে।

 

এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সংকেত দেখতে বলা হয়েছে। 

অনাহারে মরছে পেঙ্গুইন, আটলান্টিক সাগরে ভাসছে হাজার হাজার দেহ

পাকস্থলীতে ছিটেফোঁটা খাবার নেই। শরীর দুর্বল। পেঙ্গুইনদের মৃতদেহ পরীক্ষা করে চমকে উঠেছেন গবেষকরা। গত দশ দিনে আটলান্টিক সাগরের দৃশ্য়টা ভয়ঙ্কর। হাজারে হাজারে পেঙ্গুইনের দেহ ভেসে আসছে উরুগুয়ের পূর্ব উপকূলে। বেশিরভাগই তরুণ পেঙ্গুইন। শাবকও আছে। অনাহারে আর দুর্বলতার কারণেই পেঙ্গুইনের মৃত্যু হচ্ছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান প্রাণীবিদদের।

অনেক সময় অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার কারণে এভাবে পেঙ্গুইনদের  মৃত্যু হয়ে থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে সেটা কারণ নয় বলেই জানা যাচ্ছে। আটলান্টিক সাগরে ভাসতে ভাসতে দেহগুলি পৌঁছেছে উরুগুয়ের উপকূলে। উরুগুয়ের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা কারমেন লেজাগোয়েন জানিয়েছেন, বেশিরভাগ পেঙ্গুইনের শরীরেই কোনও খাবার পাওয়া যায়নি। মৃতদেহ পরীক্ষা করে বোঝা গেছে, তাদের কোনও অসুখের কারণে মৃত্যু হয়নি। মৃত্যুর কারণ অনাহার। দিনের পর দিন না খেতে পেয়ে, ধুঁকতে ধুঁকতে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে হাজার হাজার পেঙ্গুইনের। সংখ্যাটা এখনও ২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

ম্যাগেলানিক প্রজাতির পেঙ্গুইনদেরই মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৯০ শতাংশই কমবয়সি ও শিশু। ম্যাগেলানিকদের বাস দক্ষিণ আর্জেন্টিনায়। প্রতি বছর খাবার ও উষ্ণ আবহাওয়ার খোঁজে তারা ব্রাজিলের উপকূলে আসে। 

পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, আর কয়েক বছরের মধ্যে জলবায়ু বদলের প্রভাব করোনা মহামারীর থেকেও প্রাণঘাতী হবে। বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ছে, বিষাক্ত গ্যাসে ছেয়ে যাচ্ছে পরিবেশ তার থেকেই অনুমান করা যায় ২১০০ সালের মধ্যে জলবায়ুর পরিবর্তন পাঁচ গুণ বেশি বিপর্যয় নিয়ে আসবে পৃথিবীতে। আন্টার্কটিকায় বরফ গলতে শুরু করেছে। পশ্চিম আন্টার্কটিকায় উপকূল বরাবর দুই বিশাল হিমবাহে ভাঙন ধরেছে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। 

জাতিসংঘের ‘ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ (আইপিসিসি) প্রতিবেদন দিয়েছে, পৃথিবীর তাপমাত্রা আরও ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বাড়তে পারে। তাপমাত্রার বদল হলে এর জের পড়বে সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রেও। পানির উষ্ণতা স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়লে সামুদ্রিক প্রাণীজগত ক্ষতিগ্রস্থ হবে। বেশ কিছু প্রজাতির মাছের আকার ছোট হতে থাকবে। অস্তিত্বও লোপ পাবে অনেক প্রজাতির। জলবায়ু পরিবর্তন এবং দূষণের কারণে জলের অক্সিজেনও কমছে। যে কারণেও বিপন্ন সামুদ্রিক প্রাণীরা।

বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা আরও বাড়বে, সতর্ক করল জাতিসংঘ

একটু একটু করে তাপপ্রবাহে পুড়ছে বিশ্ব। তীব্র তাপমাত্রা ও দাবানলের সঙ্গে লড়ছে ইউরোপ ও আমেরিকা। মঙ্গলবার জাতিসংঘের পক্ষ তেকেএক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, উত্তর গোলার্ধের সামগ্রিক তাপমাত্রা আরও বাড়বে। পাল্লা দিয়ে বাড়বে দাবানল ও পানিকষ্ট।

ওয়র্ল্ড মিটিয়োরোলজিক্যাল অর্গানাইজশনের বিশেষজ্ঞ জন নরিনের মতে, পরিবেশের অবক্ষয় যে হারে বাড়ছে তাতে আরও তীব্র তাপপ্রবাহের জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত মানুষের। প্রবল গরমে হাঁসফাঁস করছে ইউরোপ ও আমেরিকা। যে শহরগুলোতে শীতাতপ যন্ত্র বা পাখা একটা সময় কষ্টকল্পনা ছিল, সেখানেও এখন পাখা আর এসি কেনার হিড়িক। রোম ও ফ্লোরেন্স-সহ ২০টি শহরে তাপপ্রবাহের কারণে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

আবহবিদদের কথায়, আজ তাপপ্রবাহ সর্বোচ্চ তীব্রতায় পৌঁছতে পারে ইটালিতে। সার্ডিনিয়াতেই তাপমাত্রা হতে পারে ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্পেনের কোনও কোনও জায়গার তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। সেখানেও জারি হয়েছে তাপপ্রবাহের সতর্কতা।

আমেরিকার কিছু জায়গায় তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ক্যালিফোর্নিয়ার ডেথ ভ্যালিতে তাপমাত্রা ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে নতুন রেকর্ড গড়বে বলে ধারণা আবহবিদদের। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দাবানল। দক্ষিণ ইউরোপের একাধিক জায়গায় দাবানলের সঙ্গে লড়ছে প্রশাসন। তার মধ্যে গ্রিস অন্যতম। গ্রিসের ভিওতিয়া অঞ্চলের দের্ভেনোখোরিয়া এলাকা এখনও লেলিহান। আগুন নেভানোর জন্য সেই অঞ্চলে জরুরিকালীন তৎপরতায় বিমান পাঠাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। দাবানল ছড়িয়েছে সুইৎজারল্যান্ডেও।

এই গরমের প্রভাব পড়ছে পর্যটনে। ইউরোপীয় ভ্রমণ সংস্থা (ইউরোপিয়ান ট্রাভেল কমিশন) সূত্রে খবর, গরমের জন্য ইটালি, ফ্রান্স, ভূমধ্যসাগরীয় এলাকায় ১০ শতাংশ কমেছে পর্যটন। পর্যটকেরা বেছে নিচ্ছেন চেক রিপাবলিক, ডেনমার্ক, বুলগেরিয়া ও আয়ারল্যান্ডের মতো অপেক্ষাকৃত শীতল দেশ।

তবে ক্যালিফোর্নিয়ার ডেথ ভ্যালিতে আবার দেখা গিয়েছে অন্য চিত্র। তাপমাত্রা ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের পারদ ছুঁতেই রবিবার সেখানে ঢল নেমেছিল পর্যটকদের। তাঁরা নাকি ‘গরম’ অনুভব করতে গিয়েছিলেন। উষ্ণতা বাড়ছে চিনেও। সোমবার চিনের শিনজিয়াং প্রদেশের সানবাও গ্রামে তাপমাত্রার পারদ ছুঁয়েছিল ৫২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

২০২৩ সালের জুন ও জুলাই মাসের মধ্যে ঐতিহাসিক ভাবে বেশ কয়েকটি উষ্ণতম দিনের মুখোমুখি হয়েছে বিশ্ব। লাগাতার তাপপ্রবাহ চলছে আমেরিকা, ইউরোপ ও চিন-সহ এশিয়ার বিভিন্ন অংশে। প্রশান্ত মহাসাগরে ক্রমশ তীব্র হচ্ছে এল নিনো। আর ফ্লরিডা সংলগ্ন অতলান্তিক মহাসাগরের তাপমাত্রা ছুঁয়েছে ৩২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিশেষজ্ঞদের মতে, অষ্টাদশ শতক থেকে (অর্থাৎ যখন থেকে তাপমাত্রার রেকর্ড রাখা শুরু হয়) এত উষ্ণ গ্রীষ্মকালের অভিজ্ঞতা সম্ভবত হয়নি বিশ্ববাসীর।

ডায়াপার পরে দৌড়াচ্ছে ঘোড়া! এমন উদ্যোগ কোথায়?

ঘোড়া পরেছে ডায়াপার। ভেবে অবাক হলেন তো? বাজারে শুধু বড়দের জন্যই নয়, ঘোড়ার জন্য বিশেষ ডায়াপার পাওয়া যায়। ডায়াপার পরে রাস্তায় দৌড়াচ্ছে ঘোড়া, বেঁচে যাচ্ছে পরিবেশ। রাস্তায় এতটুকু ময়লা বা দুর্গন্ধ নেই। এমন উদ্যোগ দেখে প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছে গোটা বিশ্ব। এই দৃশ্য মধ্যপ্রাচ্যের গাজার।

কৃষিপণ্য থেকে শুরু করে পরিবহনের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গাজায় ঘোড়া কিংবা গাধায় টানা গাড়ি ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে প্রচুর সুবিধা। জ্বালানি তেলের ঝঞ্ঝাট না থাকায় পরিবেশ দূষণের পরিমাণও কম আবার খরচ কম। কিন্তু বেশ সমস্যায় পড়েছিলেন গাজাবাসী। একদিকে সুবিধা থাকলেও অপরদিকে অসুবিধা রয়েছে। প্রাণীগুলির মল রাস্তায় পড়ে বিশ্রী ভাবে পরিবেশ নোংরা হচ্ছিল। এছাড়াও বিকট দুর্গন্ধ রয়েছে। রাস্তায় যত্রতত্র ঘোড়ার মল পড়ে থাকায় মাছির উপদ্রবের পাশাপাশি বাড়ছিল নানান অসুখ বিসুখের সমস্যা। তবে এই সমস্যায় আর ভুগতে হবে না গাজাবাসীকে।

এখনকার গাজা চিত্র আর আগেরকার গাজার চিত্রের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাস্তাঘাট, কোথাও এতটুকু ময়লা পড়ে নেই। এই সুন্দর উদ্যোগ শুরু হয়েছে কয়েকজন পরিবেশবিদ কর্মীর হাত ধরে। রাস্তা পরিষ্কার রাখতে আর সভ্যভাবে বাঁচতে ঘোড়াকে ডায়াপার পরাচ্ছেন। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গেলেই চোখে পড়বে এই বিচিত্র ঘটনা। আসলে ঘোড়ার সঙ্গে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে ডায়াপারের মতো একটা বিশেষ ব্যাগ। যেখানে জমা পরছে প্রাণীগুলোর মল মুত্র। রাস্তাঘাট আর নোংরা হয় না, উপরন্তু ওই ব্যাগে জমা হওয়া নোংরা সার হিসেবে কৃষি জমিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। একেই হয়ত বলে এক ঢিলে দুই পাখি মারা। যা পরিবেশের ক্ষতি করছিল, তা এখন মানুষের উপকারে লাগছে। সত্যি গাজার এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।

যদিও শুধু গাজা নয়, ঘোড়ার এই ধরনের ডায়াপারের প্রচলন বিশ্বের বহু দেশেই রয়েছে। জানলে আশ্চর্য হবেন, অনলাইনে পণ্য কেনাবেচার বিভিন্ন ওয়েবসাইটে কিন্তু ঘোড়া গাধার মতো প্রাণীদের ডায়াপার বিক্রি হয় এবং তা বেশ জনপ্রিয়। বছর দুয়েক আগে কলকাতার ময়দান আর ভিক্টোরিয়া চত্বর ঘোড়ার মল মুক্ত রাখতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সহযোগিতায়, ময়দান চত্বরে ঘোড়ায় টানা গাড়িগুলির জন্য ডায়াপারের ব্যবস্থা করা হয়।