সস্তায় ফ্লাইটের টিকিট চান? পাঁচ টিপস

ভ্রমণ | ফোরপিলার্সবিডি.কম
প্রকাশিত:
সস্তায় ফ্লাইটের টিকিট চান? পাঁচ টিপস

কিছু সাধারণ কৌশল জানা থাকলে খুব সহজেই ভ্রমণের খরচ অর্ধেকে নামিয়ে আনা যায়; বিশেষকরে ফ্লাইটের টিকিটের দাম।

যেমন ধরুন, দিন নির্বাচন, কত সময় আগে টিকিট কেনা উচিত, কিংবা কোথায় কোথায় অফার মূল্যে টিকিট মেলে– এমন সব বিষয়।

১. মঙ্গলবার ও বুধবারের টিকিট

সাধারণত সপ্তাহের মঙ্গল ও বুধবারের টিকিটের দাম অন্যান্য দিনের চেয়ে একটু সস্তা থাকে। এর পেছনে দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, বেশিরভাগ এয়ারলাইন্স মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার পর তাদের টিকিটের মূল্য আপডেট করে। আবার পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই শনি ও রোববার সাপ্তাহিক ছুটি। তাই ছুটির দিনের সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য শুক্র, শনি অথবা রোব বারের টিকিটই বেশি খোঁজেন। আর এজন্য সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়টিতে টিকিটের দাম তুলনামূলক কম হয়।

২. আগে থেকে বুকড করা

ভ্রমণের তারিখের অন্তত ২১ দিন আগে টিকিট কেনা উচিত। এয়ারলাইনস সাধারণত প্রথম কয়েকজন যাত্রীকে সবচেয়ে সস্তায় টিকিট দেয়। তবে খুব আগে বুক করলে দাম বেশিও পড়ে যেতে পারে।

৩. সেরা অফার খুঁজুন

আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের ক্ষেত্রে ১১-১২ সপ্তাহ আগে টিকিটের সেরা অফার পাওয়া যায়। এই সময়ে নিয়মিত টিকিটের দামের উপর নজর রাখুন। তবে তার আগে অবশ্যই ব্রাউজার মুড পরিবর্তন করে ‘ইনকগনিটো’ ব্যবহার করুন।

৪. বিমানবন্দর বাছাই

বড় এয়ারপোর্টের পরিবর্তে কাছাকাছি ছোট এয়ারপোর্টে নামার চেষ্টা করুন। যেমন লন্ডনে যাওয়ার ক্ষেত্রে হিথ্রোর পরিবর্তে ম্যানচেস্টার বিমানবন্দরে নামলে খরচ খানিকটা কম পড়ার সম্ভাবনা থাকে।

৫. ব্রাউজারের ‘কুকিজ’

ফ্লাইট টিকিট খোঁজার সময় আপনার ব্রাউজারের ‘কুকিজ’ পরিষ্কার করে ফেলুন। কারণ, না হলে এয়ারলাইন্সের বুকিং সিস্টেম আগের অনুসন্ধান মনে রেখে দাম বাড়িয়ে দিতে পারে।

সস্তায় টিকিট খুঁজতে যে সাইটগুলো দেখতে পারেন:

স্কাইস্ক্যানার
চিপ ফ্লাইট
মমন্ড
কায়াক
গুগল ফ্লাইট

ভ্রমণ বিভাগের আরও খবর

শীতে ভ্রম‌ণ উপ‌যোগী ৫‌টি জায়গা

শীতকাল মানেই ভ্রমণের মৌসুম। যে সময়ে নেই ভয়াবহ গরমে ক্লান্ত হবার ভয়, নেই বৃষ্টিতে কর্দমাক্ত সড়কের ঝামেলা। ক্রমাগত উষ্ণ হতে থাকা বাংলাদেশ, শীতকালে তার চিরাচরিত নয়নাভিরাম সৌন্দর্য ফিরে পায়। সেই সৌন্দর্যের মোহে আবিষ্ট হয়ে দীর্ঘ শিশির ভেজাপথ হেঁটে গেলেও ভর করবে না কোনো ক্লান্তি। তাই নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির সময়টিতে দেশজুড়ে পড়ে যায় বনভোজনের ধুম।

এই শীতে ঘুরে আসুন শ্রীমঙ্গল | akhauranews.com

শ্রীমঙ্গল:

চায়ের জন্য বিখ্যাত শ্রীমঙ্গলকে চায়ের রাজধানী বলা হয়। চা বাগানের সবুজ যেন ছড়িয়ে পড়েছে পুরো জেলা জুড়ে। চা বাগানের বাংলো, রিসোর্টে বসে উপভোগ করতে পারবেন কুয়াশামাখা ভোর।

সঙ্গে এক কাপ চা হলে তা হয়ে উঠবে আরও রোমাঞ্চকর। এ ছাড়াও শ্রীমঙ্গলের বাইক্কার বিল অতিথি পাখির অভয়ারণ্য। শীতের সকালে বিলে গেলে বাইক্কারবিল আপনাকে নিরাশ করবে না।

এ ছাড়াও ঘুরতে পারবেন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। প্রখ্যাত কবি, সাহিত্যিক হুমায়ন আহমেদের ‘আমার আছে জল’ সিনেমার শুটিং ও হয়েছে এখানে।

লাউয়াছড়া উদ্যান ঘুরা শেষে যেতে পারেন নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, আদি নীলকণ্ঠ টি কেবিন (সাতরংয়ের চায়ের জন্য বিখ্যাত), সিতেশ বাবুর চিড়িয়াখানা, চা জাদুঘর।

পঞ্চগড় থেকে স্পষ্ট দেখা দিচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা

পঞ্চগড়:

বাংলাদেশের হিমালয় কন্যাখ্যাত জেলা পঞ্চগড়। হিমালয়ের পাদদেশে জেলাটির ভৌগলিক অবস্থান হওয়ায় পঞ্চগড়কে বলা হয় হিমালয় কন্যা। কাঞ্চনজঙ্ঘা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম পর্বত। প্রতিবছর শীতের সময় বাংলাদেশ থেকে দেখা মেলে এই পর্বতের।

পঞ্চগড় ও তেতুলিয়া থেকে স্পষ্টভাবে দেখা মেলে কাঞ্চনজঙ্ঘার। অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেখা মেলে পর্বতের। শীতের আকাশ মেঘমুক্ত ও পরিষ্কার থাকায় ভেসে ওঠে তুষারশুভ্র হিমালয় ও কাঞ্চনজঙ্ঘা।

তেঁতুলিয়া উপজেলা শহরের সরকারি ডাকবাংলো চত্বর কিংবা জিরো পয়েন্ট থেকে দেখা মেলে পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম পর্বতের। পাশাপাশি স্পষ্টভাবে দার্জিলিংয়ের সবুজে ঘেরা পাহাড় শ্রেণীও দেখা যায়।

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল শুরু | Sunbd24 - Latest News Update  About DSE, CSE Stock market.

সেন্টমার্টিন:

বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাংশে অবস্থিত প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। প্রচুর নারিকেল পাওয়া যায় বলে স্থানীয়রা নারিকেল জিঞ্জিরাও বলে। নীল আকাশের সঙ্গে সমুদ্রের নীল জলের মিতালি, সারি সারি নারিকেল গাছ এ দ্বীপকে করেছে অনন্য।

শীতে সাগর শান্ত থাকায় এই সময়টা ভ্রমণের জন্য উপযোগী। নভেম্বর থেকে মার্চ এ পাঁচ মাস জাহাজ করে সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন। পথে দেখা মিলবে গাংচিলের।

মনপুরা দ্বীপ যাওয়ার উপায়, ক্যাম্পিং এবং থাকবার হোটেলের খোঁজসহ ভ্রমণ গাইড  » আদার ব্যাপারী

মনপুরা দ্বীপ, ভোলা:

ভোলা জেলার এই বিচ্ছিন্ন ভূমিটি সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত এবং হরিণ দেখার জন্য পর্যটকদের প্রিয় স্থান। মেঘনা নদীর ভেতরে ৫০০ মিটার পর্যন্ত স্থাপন করা মনপুরা ল্যান্ডিং স্টেশনে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত স্থানীয় মানুষ ও পর্যটকদের ভীড় থাকে। দ্বীপ ভ্রমণে এসে দর্শনার্থীরা চৌধুরী প্রজেক্টের মাছের ঘের আর সারি সারি নারিকেল গাছের বিস্তৃত এলাকাতেও ঘুরতে আসেন। নদীর ধারে সাইক্লিং কিংবা সবুজের মাঝে ক্যাম্পিং-এর জন্য সেরা জায়গা মনপুরা দ্বীপ।

মনপুরা দ্বীপে যাওয়ার জন্য ঢাকার সদরঘাট থেকে বিকেল ৫টায় লঞ্চে উঠে পড়তে হবে। এ ছাড়া ঢাকা থেকে থেকে সড়ক পথে ভোলা হয়ে তজুমদ্দিন ঘাটে এসে সি-ট্রাকে করেও মনপুরা দ্বীপে আসা যায়। সি-ট্রাক ছাড়ার সময় বিকাল ৩টা।

মালনীছড়া চা বাগান, সিলেট - ভ্রমণ গাইড

মালনীছড়া চা-বাগান, সিলেট:

উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় এবং সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত চা-বাগান এই মালনীছড়া চা-বাগান। ১ হাজার ৮৪৯ সালে লর্ড হার্ডসনের তত্ত্বাবধানে এক হাজার ৫০০ একর জায়গার ওপর গড়ে তোলা হয় এই চা-বাগান। বর্তমানে বেসরকারি তত্ত্বাবধানে থাকলেও চা-বাগানপ্রিয় ভ্রমণপিপাসুদের কাছে বেশ পছন্দের একটি জায়গা হয়ে উঠেছে। কতৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে নির্দ্বিধায় ঘুরে বেড়ানো যায় বাগানে।

বাস, ট্রেন অথবা বিমান; এই ৩ রুটের যেকোনোটি ব্যবহার করে ঢাকা থেকে প্রথমে আসতে হবে সিলেটে। এরপর শহরের যেকোনো জায়গা থেকে রিকশা কিংবা সিএনজিতে চড়ে সহজেই যাওয়া যাবে মালনীছড়া চা-বাগানে।

শীতকালে বাংলাদেশ ভ্রমণের জনপ্রিয় এই ১০টি স্থান হিম শীতল প্রকৃতি দারুণভাবে উপভোগ্য করে তোলে বাংলাদেশের ভ্রমণপিপাসুদের কাছে। তবে এই আনন্দটা ফিকে হয়ে যেতে পারে যদি যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করা না হয়। এ সময় যাত্রা শুরুর সময় অবশ্যই সঙ্গে গরম কাপড় নিয়ে নেওয়া আবশ্যক। নিয়মিত ওষুধপত্রের সঙ্গে ডেটল, স্যাভলন, ব্যান্ডেজ ও তুলার মতো কিছু ফার্স্ট এইড সামগ্রি সঙ্গে রাখা উচিত। একটি সুপরিকল্পিত পূর্বপ্রস্তুতিই পারে একটি ভ্রমণকে নিরাপদ নির্ঝঞ্ঝাট করে তুলতে।

শীতে দেশের উত্তরাঞ্চল পঞ্চগড় থেকে দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা

শুক্রবার সকালে সূর্যোদয়ের পর থেকেই চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো স্থানীয়দের চোখে ধরা পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার নয়নাভিরাম নৈসর্গিক রূপ

ঝকঝকে কাঁচের মতো স্বচ্ছ নীল আকাশ আর পরিচ্ছন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশের ঋতু শরৎ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। এমনই সময়ে পঞ্চগড় তেঁতুলিয়া থেকে প্রতি বছরের মতো এবারও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মিলছে।

স্থানীয়রা জানান, সাধারণত অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত শীতের আগে মেঘমুক্ত নীলাকাশে ভেসে ওঠে তুষার শুভ্র হিমালয় পর্বত ও কাঞ্চনজঙ্ঘা। বছরের এই নির্দিষ্ট সময়ে বাংলাদেশ থেকে দৃশ্যমান হিমালয় পর্বত ও কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখতে প্রতি বছরই অসংখ্য পর্যটক সেখানে যান।

সকালে সূর্যোদয়ের পর থেকেই চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো স্থানীয়দের চোখে ধরা পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার নয়নাভিরাম নৈসর্গিক রূপ। সূর্যকিরণের তেজ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা আরও বেশি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সকাল দশটা থেকে এগারটা পর্যন্ত বেশ ভালোভাবেই দেখা যায়। তারপর ক্রমান্বয়ে আবার ঝাপসা হয়ে হারিয়ে যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। তবে শেষ বিকেলে সূর্যকিরণ যখন তির্যকভাবে বরফাচ্ছাদিত পাহাড়ে পড়ে তখন অনিন্দ্য সুন্দর হয়ে আবারও ধরা দেয় কাঞ্চনজঙ্ঘা।

উইকিপিডিয়ার তথ্যানুযায়ী, দেশের সর্ব-উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন (স্থলবন্দর) থেকে নেপালের দূরত্ব ৬১ কিলোমিটার, ভুটানের দূরত্ব ৬৪ কিলোমিটার, চীনের দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার, ভারতের দার্জিলিংয়ের দূরত্ব ৫৮ কিলোমিটার, শিলিগুড়ির দূরত্ব ৮ কিলোমিটার। অন্যদিকে হিমালয়ের এভারেস্ট শৃঙ্গের দূরত্ব ৭৫ কিলোমিটার আর কাঞ্চনজঙ্ঘার দূরত্ব ১১ কিলোমিটার। কিন্তু মেঘ-কুয়াশামুক্ত আকাশের উত্তর-পশ্চিমে তাকালেই দেখা মেলে বরফ আচ্ছাদিত সাদা পাহাড়, মনে হয় এইতো চোখের সামনেই কাঞ্চনজঙ্ঘা!

সূর্যোদয়ের আগে কিছুটা কালো দেখায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। 

জানা গেছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ নেপাল ও ভারতের সিকিম সীমান্তে অবস্থিত। হিমালয় পৃথিবীর সবোর্চ্চ পর্বতমালা। এই পর্বতমালার তিনটি চূড়া আবার পৃথিবীর সবোর্চ্চ চূড়া। এরমধ্যে প্রথম অবস্থানে থাকা মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮ হাজার ৮৪৮ মিটার বা ২৯ হাজার ২৯ ফিট। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা চূড়া কেটু’র উচ্চতা ৮ হাজার ৬১১ মিটার বা ২৮ হাজার ২৫১ ফিট। তৃতীয় অবস্থানে থাকা কাঞ্চনজঙ্ঘার উচ্চতা ৮ হাজার ৫৮৬ মিটার বা ২৮ হাজার ১৬৯ ফিট। যদিও ১৮৫২ সালের আগে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে পৃথিবীর সৰ্বোচ্চ শৃঙ্গ বলে মনে করা হতো। ১৯৫৫ সালের ২৫ মে মাসে ব্রিটিশ পবর্তারোহী দলের সদস্য জোয়ে ব্রাউন এবং জর্জ ব্যান্ড সর্বপ্রথম কাঞ্চনজঙ্ঘায় আরোহণ করেন।

এদিকে, সুউচ্চ এই চূড়া দেখতে প্রতি বছর অসংখ্য দেশি-বিদেশি পর্যটক ছুটে যান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলা শহরের টাইগার হিল পয়েন্টে। টাইগার হিলই হচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া দেখার সবচেয়ে আদর্শ জায়গা। তবে কেউ কেউ যান সান্দাকপু বা ফালুট। আবার কেউ কেউ সরাসরি নেপালে গিয়েও কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। 

তবে যাদের এসব সুযোগ মেলে না সেইসব বাংলাদেশি পর্যটকেরা কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ অবলোকন করতে ছুটে যান তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধায়। এখানে মেঘমুক্ত আকাশে দিনের প্রথম সূর্যকিরণের সঙ্গে সঙ্গেই চোখে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা। একটু বেলা বাড়লেই তেজোদীপ্ত রোদ যখন ঠিকরে পড়ে বরফাচ্ছাদিত পাহাড়ের গায়ে, কাঞ্চনজঙ্ঘা তখন ভিন্নরূপে ধরা দেয় পর্যটকের চোখে। যে রূপের টানে প্রতি বছর হাজারো পর্যটক আসেন তেঁতুলিয়ায়। 

মেঘমুক্ত পরিবেশে তেঁতুলিয়া থেকে দেখা যাচ্ছে হিমালয়ের কাঞ্চনজঙ্ঘা চূড়া। 

 

স্থানীয়রা জানান, দিনের শুরুতে কাঞ্চনজঙ্ঘা প্রথমে একটু কালচে, এরপর ক্রমান্বয়ে টুকটুকে লাল, কমলা, হলুদ এবং সাদা বর্ণ ধারণ করে। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ পরিবর্তন দেখতে দূরবীন বা বাইনোকুলারের প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকলে তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে খালি চোখে হিমালয় ও কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। অনেকে বলেন, তেঁতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাওয়ার বিষয়টি অপেক্ষাকৃত কম সামর্থ্যবান পর্যটকদের জন্য “সৃষ্টিকর্তার উপহার”। 

এদিকে, শুধু কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে যাওয়া পর্যটকদের জন্যই তেঁতুলিয়া ও বাংলাবান্ধা এলাকার আশেপাশে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি হোটেল-মোটেল ও পিকনিক স্পট। 

স্থানীয় ব্যবসায়ী শেখ ফরিদ জানান, গত বৃহস্পতিবার থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকজন পর্যটকও এসেছেন। তবে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন হলে পর্যটকদের ঢল নামবে। 

তেঁতুলিয়ার বাসিন্দা শামীম রেজা জানান, “হঠাৎ করেই কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরুপ দৃশ্য চোখে পড়েছে। বন্ধু-বান্ধবদের জানিয়েছি, তারা তেঁতুলিয়া আসছে।”

তেঁতুলিয়া রওশনপুরের কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেটের ব্যবস্থাপক এ কে এম ওয়াহিদুল হক বলেন, “মাঝে মাঝে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরুপ দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। চা বাগান, আনন্দ ধারা (পিকনিক স্পট) এবং কাঞ্চনজঙ্গা দেখতে এখানে প্রতিবছর অনেক পর্যটক ভিড় করেন। শীত কেবল নামছে। পুরোপুরি শীত নামলে পর্যটকের সংখ্যাও বেড়ে যাবে।”

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা সারা বছরই বরফে ঢাকা থাকে। 

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রহিদুল ইসলাম রহিদ ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “মেঘমুক্ত আকাশে রূপোলি চকচকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছে। আকাশ মেঘমুক্ত থাকা ও উত্তরবঙ্গে সাম্প্রতিক বৃষ্টির কারণে বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ কমে যাওয়াতেই কাঞ্চনজঙ্ঘা দৃশ্যমান হয়েছে।”

কীভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে পঞ্চগড় কিংবা তেঁতুলিয়া অথবা বাংলাবান্ধায় সরাসরি দূরপাল্লার (দিবারাত্রি) বাস রয়েছে। রাজধানী থেকে সরাসরি তেঁতুলিয়ায় যাওয়ার একাধিক পরিবহন রয়েছে। এছাড়া ঢাকা থেকে বিমানে নীলফামারীর সৈয়দপুর হয়ে বাস, মাইক্রোবাস বা প্রাইভেট কারে চড়েও তেঁতুলিয়া যাওয়া যায়। ট্রেনে যেতে চাইলে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, একতা বা দ্রুতযান এক্সপ্রেসে করে সরাসরি পঞ্চগড় নামতে পারবেন। যাত্রাপথে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ও ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকা খরচ পড়বে। 

থাকা-খাওয়ার ফিরিস্তি

রাত্রি যাপনের জন্য তেঁতুলিয়ায় সরকারি ৩টি ডাকবাংলোর পাশাপাশি কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। ডাকবাংলোগুলোতে অবস্থান করতে হলে আপনাকে আগেভাগেই উপজেলা বা জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে। তবে তেঁতুলিয়া ডাকবাংলোতে থাকলে সেখান থেকেই আপনি দেখতে পাবেন কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ রূপ।

ঘুরতে গেলেই অবাধ যৌনতার সুযোগ! কোন কোন দেশে রয়েছে এই সুবিধা?

ঘুরতে যাওয়ার প্রথম পছন্দ, পাহাড় কিংবা সমুদ্র। দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে, মানুষ স্রেফ ছুটে যান প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে। কিন্তু বিশ্বে এমনও কিছু দেশ রয়েছে যেখানে ঘুরতে যাওয়ার আসল উদ্দেশ্য যৌনতা। এইসব দেশে অবাধ যৌনতার সুযোগ রয়েছে। তাও লুকিয়ে নয়, একেবারে প্রকাশ্যে যৌনতার অভ্যাসও রয়েছে বিশ্বের বেশ কিছু দেশে।

‘সেক্স ট্যুরিজম’, শব্দটা অনেকের কাছেই হয়ত অচেনা। কিন্তু এর উপর ভর করেই অর্থনীতি মজবুত করার চেষ্টা চালাচ্ছে বিশ্বের কিছু দেশ। এইসব দেশগুলি পর্যটকদের কাছে বিশেষভাবে আকর্ষনীয় স্রেফ অবাধ যৌনতার সুবাদেই। সরকারের তরফে প্রকাশ্য যৌনতা নিয়েও বিশেষ বাধা নেই। কারও ক্ষতি না করে যদি কোনও যুগল যৌনতায় মাততে চান তাহলে কোনওভাবেই বাধা দেয় না এইসব দেশের প্রশাসন। সেইসঙ্গে এইসব দেশে যৌনব্যবসাও রমরমিয়ে চলে। বিভিন্ন দেশ থেকে যৌনকর্মীরা এসেও ভিড় জমান এই অবাধ যৌনতার দেশগুলিতে। পর্যটকদের কাছেও যা আলাদা মাত্রা যোগ করে। আখেরে লাভ হয় ওইসব দেশের সরকারের। পর্যটকদের বিনোদনের জেরে আরও মজবুত হয় তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা। এই ধরনের পর্যটনকেই সেক্স ট্যুরিজম আখ্যা দিয়েছেন কেউ কেউ। 

সাম্প্রতিক এক সমীক্ষাও জানাচ্ছে, দেহব্যবসায় লেনদেনের জেরে বিশ্বের বহু দেশের অর্থনীতির হাল পালটে যাচ্ছে। আর সেই তালিকায় প্রথমেই রয়েছে থাইল্যান্ড। সমীক্ষা অনুযায়ী, এখানে ঘুরতে আসা ৭০ শতাংশ পর্যটক স্রেফ যৌনতার টানেই ছুটে আসেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে একাধিক ক্লাব ও স্পা। যেখানে সহজেই যৌনতার সুযোগ পান পর্যটকেরা। শুধু তাই নয়, এখানকার রাস্তাঘাটেও এমন কিছু অনুষ্ঠান হয়, যা প্রকাশ্য যৌনতার থেকে কোনও অংশে কম নয়। 

এরপর রয়েছে নেদারল্যান্ডস। এই দেশে মূলত দেহব্যবসায়ীদের আধিক্যই চোখে পড়ে। সমীক্ষা জানাচ্ছে, বিগত কয়েকবছরে এই দেশের অর্থনীতির হাল অনেকটাই ফিরেছে স্রেফ এই দেহব্যবসার উপর ভর করে। প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক এই দেশে বেড়াতে আসেন যৌনতার টানেই। রাজধানী অ্যামস্টারডামেই যদিও এই রমরমা চোখে পড়ার মতো, তবু নেদারল্যান্ডসের অন্যান্য প্রদেশেও অবাধ যৌনতার সুযোগ রয়েছে।

তালিকায় রয়েছে ফুটবলের দেশ আর্জেন্টিনাও। তবে অবশ্যই বলতে হয় স্পেনের কথা। অনেকেই এই দেশকেই ‘ইউরোপের যৌনপল্লী’ হিসেবে আখ্যা দেন। সমীক্ষা অনুযায়ী, এখানে প্রায় ৪ লক্ষ যৌনকর্মী সক্রিয়ভাবে কাজ করেন। তাই দেশবিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকেরা ছুটে আসেন যৌনতার টানেই। এখানেই শেষ নয়, ব্রাজিল, কম্বোডিয়া, ফিলিপিন্স সহ একাধিক দেশে এই সুযোগ মেলে। শুধুমাত্র প্রকৃতির টানেই নয়, নিজেদের যৌনপীপাসা মেটাতেও যে কেউ ঘুরতে যেতে পারে, তা প্রমান করে দেয় এইসব দেশের ঘুরতে আসা পর্যটকেরা।

টাইটানিকের থেকেও বড়, গোটা শহর নিয়ে সমুদ্রে ভাসবে প্রমোদতরী!

সীমাহীন নীলের মাঝে মায়া নগরী। এবার সাগরের বুকে ভাসবে বিশাল শহর। পরতে পরতে একাধিক চমক। যার বিলাসিতার ঝলক চোখ ধাঁধিয়ে দেবে। এখানে কি নেই? বিনোদনের অভিনব এক জগৎ হতে চলেছে বিশ্বের সবথেকে বড় ক্রুজ জাহাজ। 

টাইটানিকের থেকেও কয়েকগুণ বড়। সাঁতার কাটতে কাটতে পাবেন সুরা পানের সুযোগ। পাশাপাশি থাকবে কৃত্রিম বীচ সহ থিম পার্ক। সাগরের বুকেই ভাসবে একাধিক ফুটবল মাঠ। একদিকে পাবেন রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা, অপরদিকে মজা উপভোগের ৪০ রকম ব্যবস্থা। কবে পাড়ি দেবে এই জাহাজ? কেন এত বিশেষ? খরচ কত পড়বে?

বলা হচ্ছে, রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনালের আইকন অফ দা সিজের কথা। এই অসাধারণ জাহাজটি ২০২৪ সালের ২৭এ জানুয়ারি আমেরিকার ফ্লোরিডার মায়ামি থেকে যাত্রা শুরু করবে। যাবে পূর্ব এবং পশ্চিম ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে। গোটা বিশ্বজুড়ে সবার মুখে মুখে এখন আইকন অফ সিজের কথা।বিশ্বজুড়ে আগ্রহের শেষ নেই। ইতিমধ্যেই প্রথম সফরের সব টিকিট শেষ। হাজার হাজার মানুষ এই জাহাজের জন্য অপেক্ষা করছেন।

দৈর্ঘ্য প্রায় ১২০০ ফুট। ওজন প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার টন। যেখানে টাইটানিকের দৈর্ঘ্য ৮৮২ ফুট। বুঝতেই পারছেন, এটি টাইটানিকের থেকে ঠিক কতটা বড়। এটি তৈরি করতে খরচ করেছে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার। আইকন অফ দ্য সিজ একসঙ্গে ৭৯৬০ জন যাত্রীকে নিয়ে যেতে পারবে। যার মধ্যে যাত্রী সংখ্যা থাকবে ৫৬১০ জন, আর জাহাজের কাজ পরিচালনা করার জন্য থাকবেন ২৩৫০ জন কর্মী। এর মধ্যে ইঞ্জিন, প্রযুক্তি এবং কম্পন পরীক্ষার জন্য রয়েছে প্রায় ৪৫০ জন বিশেষজ্ঞ।

এই জাহাজকে একটা আস্ত শহর কেন বলা হচ্ছে? আসলে জাহাজের ভিতরে পার্কসহ রয়েছে এক্কেবারে আসল গাছ। অ্যাকুয়া থিয়েটারেরও ব্যবস্থা রয়েছে। বিশেষ করে কম বয়সী পরিবারদের জন্য রয়েছে স্পেশাল ব্যবস্থা। ছয়টি ওয়াটার স্লাইড, সাতটি সুইমিং পুল আর সহ নটি বিশেষ ধরনের পুল, যার মধ্যে ঘূর্ণাবর্তের ব্যবস্থা রয়েছে। বিনোদনের জন্য পাবেন ৪০ রকমের অপশন। কেবিন থাকবে প্রায় ২৮ ধরনের। অধিকাংশ কেবিনে তিন থেকে বা তার বেশি সংখ্যক মানুষ থাকতে পারবেন। ৭০ শতাংশ কেবিনে পাবেন সুন্দর ব্যালকনি। যেখান দাঁড়িয়ে সমুদ্রের সীমাহীন নীল সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। বুঝতেই পারছেন, এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা পেতে চলেছেন যাত্রীরা। যদিও এই প্রমোদতরীতে যাত্রার জন্য ঠিক কত টাকা খরচ হবে সেই বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি।

প্রস্তুতি পর্ব এখন শেষের দিকে। ২০২৩ এর শেষে আর একবার পরীক্ষামূলকভাবে যাত্রা করবে এই জাহাজটি। তারপর মিলবে চূড়ান্ত সফরের ছাড়পত্র। ২০২২ সালে এটি তৈরি কাজ শুরু হয়। এত তাড়াতাড়ি যে কাজ শেষ হবে তা ভাবনার বাইরে ছিল। আপাতত এটি রয়েছে ফিনল্যান্ডের একটি জাহাজ নির্মাণ কেন্দ্রে। রয়্যাল ক্যারিবিয়ান সংস্থার সবথেকে বড় জাহাজ ওয়ান্ডার অফ দ্য সিজের থেকেও প্রায় ছয় শতাংশ বড় আইকন অফ দ্য সিজ। আর মাত্র কয়েক মাসের অপেক্ষা। এক টুকরো মায়া নগরী নিয়ে সমুদ্রের নীলে পাড়ি দেবে আইকন অফ দ্য সিজ।