আজকের দিনটা খুব খারাপ গেছে আমার।

সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এসেই কেঁপে উঠেছি আমি! 

চারটে ছোট্ট বেড়াল ছানাকে জবাই করে তাদের রক্তমাখা দেহগুলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু হলের পুকুর পাড়ে ফেলে রেখে গেছে কোনো এক বা একাধিক মানুষরূপী হায়েনা। 

বেড়াল বাচ্চাদের রক্তমাখা লাশেগুলোর দিকে তাকানো যায় না! তাকালেই শিউরে উঠতে হয়। কী ভয়ংকর হত্যাকাণ্ড! ছোট্ট এইটুকুন আদুরে বেড়াল ছানাগুলোকে কী করে জবাই করতে পারে একজন মানুষ!

জবাই হয়ে যাওয়া বেড়াল ছানাদের লাশগুলোর দিকে তাকালেই আমার শুধু ক্যাটবেরি নামের আমাদের বেড়াল বাচ্চাটার চেহারা ভেসে উঠেছে চোখের সামনে। আর বারবার জলে ভরে উঠেছে চোখ। আমাদের ক্যাটবো এবং কিটো একদিন ওই বাচ্চাদের বয়েসী ছিলো। একটু আদর আর সামান্য খাবার ছাড়া বেড়াল বাচ্চাদের আর তো কোনো চাওয়া নেই এই পৃথিবীর মানুষের কাছে!

ওরা তো শান্ত স্নিগ্ধ নিরিহ একটা প্রাণি! 

হিংস্র তো নয়! 

নরম তুলতুলে আদুরে বাচ্চাগুলোকে এরকম পৈশাচিক ভাবে খুন করতে হবে কেনো?

সারাটাদিন গেছে আমার ক্লান্ত বিষণ্ণ অবসন্ন আর বিধ্বস্ত অবস্থায়। একটা লাইনও লিখতে পারিনি ল্যাপটপ খুলে! 

লিখতে বসলেই খুন হয়ে যাওয়া বেড়ালছানাদের লাশ আর ওদের মায়ের মুখটা ভেসে উঠেছে চোখের সামনে। সারা রাত বেড়ালদের মা বারবার ফিরে ফিরে এসেছে রক্তমাখা তার সন্তানদের লাশের কাছে। আর কেঁদেছে! বারবার কেঁদেছে! 

কেঁদে কেঁদে কার কাছে নালিশ জানিয়েছে সে? বিচার চেয়েছে সে কার কাছে? 

মানুষেরই কাছে?

নাকি তার সৃষ্টিকর্তার কাছে?

আল্লাহ্‌র কাছে?

ঈশ্বর-গড-ভগবানের কাছে?

০২    

চারটে বেড়াল ছানা জবাই করেছে এক কুলাঙ্গারে 
মানুষ বলি না আমি তারে। 
এতোটুকু খুদে খুদে তুলতুলে বেড়ালের ছানা-- 
মানুষের হিংস্রতা কতো কুৎসিত আহা ছিলো না তো জানা!  
ছানাগুলো বোঝে নাই মানুষের চেয়ে কোনো হিংস্র প্রাণি তো নেই গ্রহে। 
তাই বুঝি ঘুরে ফিরে মানুষের কাছে যায় আহ্লাদে আর আগ্রহে--  
একটু আদর পেতে একটু খাবার পেতে আর যদি দেয় আশ্রয়,
বিশাল এ পৃথিবীটা মানুষের একার তো নয়! 
ছানাদের হত্যায় খোদার আরশ যদি কাঁপে 
তুইও জবাই হবি একদিন একই ভাবে, বেড়াল মায়ের অভিশাপে...

(হ্যাঁ, আমিও অভিশাপ দিচ্ছি তোকে ওহে মানুষরূপী হায়েনা, তোরও মরণ যেনো হয় ঠিক একই রকম পৈশাচিকতায়...) 

অটোয়া  ২৬ মে ২০২৩

[ লেখার সঙ্গে বেড়াল খুনের নিষ্ঠুরতার ছবিটা দিলাম না। আমি জানি আমার ফেসবুক বন্ধুরা, আমার পাঠক বন্ধুরা ভয়ংকর সেই দৃশ্য সহ্য করতে পারবেন না। শুধুমাত্র ক্রন্দনরত বেড়াল মায়ের ছবিটা দিলাম। ছবিটা ভোর রাতের বলে অস্পষ্ট। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আমার গোয়েন্দা বন্ধুদের কেউ না কেউ, আমি জানি, খুনিটাকে শনাক্ত করতে সক্ষম হবেন। এগিয়ে আসবেন কি প্রাণ-প্রকৃতিপ্রেমিক কোনো বন্ধু? ]

কানাডার টরন্টোতে সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত সংগীত শিল্পী কুমার বিশ্বজিতের ছেলে নিবিড় কুমারের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।  তবে শঙ্কা এখনো কাটেনি বলে 

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এসটি মাইকেল হাসপাতালে নিবিড় কুমারের শরীরে একটি অস্ত্রোপচার করা হয়। 

কানাডার স্থানীয় সময় বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কুমার বিশ্বজিৎ ও তার স্ত্রী নাঈমা সুলতানা হাসপাতালের আইসিইউতে তাদের একমাত্র ছেলেকে দেখতে যান। 

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নিবিড় কুমারকে সারিয়ে তুলতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার আরো কয়েকটি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। নিবিড়ের শারীরিক অবস্থা দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

সড়ক দুর্ঘটনায় নিবিড়ের মাথার একটি বড় অংশ ও চোখের একটি বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া বুকের পাঁজরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শরীরের আর কোথায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা মূলত দেখার জন্য ক্যামেরা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ পর্যবেক্ষণ করা হবে। তারপরে অস্ত্রোপচার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে ছেলের কাছে সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন কুমার বিশ্বজিৎ। দেশের সংগীতাঙ্গনের একাধিক ব্যক্তিকে তিনি বার্তা পাঠিয়েছেন। 

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরে গীতিকবি সংঘের সভাপতি শহীদ মাহমুদ জঙ্গী সোশ্যাল হ্যান্ডেলে বলেছেন, ‘বিশ্বজিৎ জানালো- নিবিড় আগের চেয়ে ভালো আছে। আলহামদুলিল্লাহ। চলুন দোয়া জারি রাখি। দুর্ঘটনায় নিহত শাহরিয়ার খান, অ্যাঞ্জেলা বাড়ৈ ও আরিয়ান দীপ্তর আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।’

কুমার বিশ্বজিতের সাথে যোগাযোগ হওয়ার কথা জানিয়ে সংগীতশিল্পী কিশোর দাস বলেন, ‘নিবিড়ের অবস্থা উন্নতির দিকে। মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ দয়ায় নিবিড় গতকালকের চেয়ে এই মুহূর্তে ভালো আছে। নিবিড়ের কাকা অভিজিৎ দা ও ওর বাবা কুমার বিশ্বজিৎ স্যারের সঙ্গে কথা হলো। আগামী ৬ ঘন্টার ভেতর নিবিড়ের সার্জারি হবে।’

নিবিড়ের জন্য প্রার্থনা এবং গুজব না রটানোর অনুরোধ জানিয়ে কিশোর বলেছেন, ‘ঈশ্বর ওকে বাবা-মার কোলে সুস্থ ভাবে ফিরিয়ে দিক। সবাই ওকে আপনাদের আশীর্বাদ ও দোয়ায় রাখবেন। আর কেউ এই বিষয়ে ভুল কোনও তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াবেন না, এই অনুরোধ রইলো।’

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টায় টরেন্টোতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়। এতে আহত হন কুমার বিশ্বজিতের ছেলে নিবিড় কুমার।

দুর্ঘটনায় নিহত শাহরিয়ার খান, অ্যাঞ্জেলা বাড়ৈ ও আরিয়ান দীপ্তের মরদেহ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। টরন্টোর বাংলাদেশ কনসাল অফিস ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করবে। তারপরই মরদেহ দেশে পাঠানো হবে। 

কানাডায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ওই দুর্ঘটনায় জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের ছেলে নিবিড় কুমার গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। 

টরন্টো পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় ঘটা ওই দুর্ঘটনায় ৩ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মারা গেছেন। 

টরেন্টো নগরীর মিসিসাগা এলাকায় ৪২৭ হাইওয়ে ও ডানডাস ইন্টারসেকশনের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। গাড়িতে থাকা চারজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তারা বাংলাদেশ থেকে পড়াশোনার জন্য টরন্টোতে বসবাস করছিলেন।

অন্টারিও প্রাদেশিক পুলিশের বরাত দিয়ে কানাডার সিবিসি নিউজ বুধবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় এক নারী এবং ২০ বছর বয়সী এক তরুণ ও ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর মারা গেছে। আহত চালক ২১ বছর বয়সী তরুণ গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষ এখনও ক্ষতিগ্রস্তদের সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।

পুলিশ আরও জানায়, নিবিড় কুমার গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। গাড়িটি খুব দ্রুতগতিতে চলছিল। এক হাইওয়ে থেকে আরেক হাইওয়েতে ওঠার সময় বাঁক নেওয়া সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি। পরে গাড়িটি হাইওয়ের রেলিংয়ে গিয়ে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যায়। সঙ্গে সঙ্গে গাড়িতে আগুন ধরে যায়। ঘটনাস্থলেই গাড়ির দুই আরোহী মারা যান।

সেখানকার প্যারামেডিকরা নিশ্চিত করেছেন, ঘটনাস্থলে দুজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে এবং আরও দুজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান আরও একজন।

বিষয়টি জানার জন্য পারিবারিক সূত্রে যোগাযোগ করলে দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, কুমার বিশ্বজিতের ছেলে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তারা জানান, ছেলের দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কুমার বিশ্বজিৎ গতকাল রাতে কানাডার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।

কাতারে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন চার বাংলাদেশি। আহত হয়েছেন আরও দুজন।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) ভোর ৫টায় কাতারের আল শামাল মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত প্রবাসীদের মধ্যে মোহাম্মদ শাকিল ও মোহাম্মদ ইউসুফ মাতব্বরের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। আর মোহাম্মদ রাহাতের বাড়ি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে, অপর নিহত মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।

নিহত তিনজনের মরদেহ রাখা হয়েছে স্থানীয় দোহা হামাদ হাসপাতালের মর্গে। আর রাহাতকে শনিবার কাতারের আবু হামুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

অন্যদিকে আহত মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন ও হাবিবুর রহমান অপুকে দোহা হামাদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত এই দুজনের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে।

আল শামাল মহাসড়কে তাদের গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অপর একটি প্রাইভেটকারকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন দুজন। আর হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও দুজনের মৃত্যু হয়।

কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, তিনজনের মরদেহ দ্রুত দেশে তাদের পরিবারের কাছে পাঠানো হবে।