গরমে, রোদে, ঘামে সবাই অস্থির। তবে এই সময়ের সবচেয়ে কষ্টকর ফোঁড়ার সমস্যা। ফোঁড়া যেমন যন্ত্রণাদায়ক, তেমনই সারতেও বেশ সময় লাগে।
ফোঁড়া হওয়ার নেপথ্য কারণ মূলত জীবাণুর সংক্রমণ। শরীরের কোনও স্থানে যদি ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে, সেখান থেকেই ফোঁড়া হয়। ত্বকে, লোমকূপে স্ট্যাফাইলোকক্কাস নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে ফোঁড়া, লোমফোঁড়া ইত্যাদি হয়।
ফোঁড়া কেন হয়?
সাধারণত ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন থেকেই ফোঁড়ার সৃষ্টি। স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ ও ঘামের জন্য কিছু ব্যাকটেরিয়া ত্বকে খুব সহজেই বংশবৃদ্ধি করতে পারে। ফলস্বরূপ ফোঁড়া, ফুসকুড়ির মতো সমস্যা দেখা যায় ত্বকে।
ফোঁড়া হলেই অনেকে ভাবেন ফাটিয়ে দিলেই বুঝি মুক্তি। হাত নিশপিশ করে ফোঁড়া ফাটানোর জন্য। তবে এমনটা করা একেবারেই উচিত নয়। ফোঁড়া হলে একটু চুলকানির অনুভূতিও আসে। কিন্তু ফোঁড়াতে বারবার হাত দিলে বা ফোঁড়াকে অযথা টেপাটিপি করলে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। তাই ফোঁড়া উঠলেই সেখানে বারবার হাত দেবেন না বা ফাটানোর চেষ্টা করবেন না।
সহজাত প্রবণতা মতোই ফোঁড়া হলে আমরা ফোঁড়ার জায়গাটাকে আরও বেশি বেশি খোঁচাতে চাই। চিকিৎসকদের মতে, এই ইচ্ছেটাকে দমিয়ে রাখা উচিত। ফোঁড়াকে (Abscess) নিজে নিজে ফেটে যেতে দিন। কোনও ভাবেই হাত দেবেন না।
ফোঁড়ার জায়গায় ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ কমাতে মাঝে মাঝে হালকা গরম সাবান পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন। ফোঁড়া নিজে থেকে ফেটে গেলে ও পুঁজ বের হয়ে গেলে ভালো ভাবে সাবান, গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন।
ফোঁড়া হলে কী কী করবেন?
শরীরের যে অংশেই ফোঁড়া হোক, নিজে চিকিৎসা করতে যাবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলার চেষ্টা করুন।
৫০ গ্রাম নিমের পাতা বেটে নিয়ে তাকে একটা ট্যাবলেটের মতো তৈরি করে নিন। একে পুলটিসের মতো ফোড়ার ওপর লাগালে ফোড়া সেরে যায়। ফোড়াতে যদি পুঁজ হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে নিমের পাতার সঙ্গে সম পরিমাণ গোলমরিচ গুঁড়ো করে দিয়ে ফোড়াতে লাগান। ফোঁড়া দ্রুত শুকিয়ে যাবে।
দুটো পুঁই পাতা ভাল করে ধুয়ে বেটে নিন। দিনে দু বার ব্রণ বা ফোঁড়ার ওপর পুরু করে প্রলেপ দিয়ে রাখুন।
দুটি ফুল এবং পাঁচটি পাতা ভালো করে ধুয়ে থেঁতলে নিন। দিনে দু'বার ফোঁড়া বা ব্রণের ওপর পুলটিশ হিসেবে লাগান।
ফোঁড়া হলে সুগন্ধিযুক্ত কোনও সাবান ব্যবহার না করাই ভাল। তা ছাড়া বাজারচলতি কোনও ক্রিম, সুগন্ধিও এড়িয়ে চলুন। বরং নিমজলে স্নান করতে পারেন। উপকার পাবেন। আবার স্নানের জলে এক ফোঁটা ডেটলও ফেলে দিতে পারেন।
পাঁচ কচি পাতা এবং দুটো ফুল ভাল করে ধুয়ে থেঁতলে নিন। এটা সরাসরি ব্রণ অথবা ফোঁড়ার উপর লাগিয়ে রাখুন। দিনে দু'বার এভাবে করুন।
কোনও বয়স্ক ব্যক্তির যদি বার বার ফোঁড়া হতে থাকে, তাহলে তাঁর একবার ব্লাড সুগার পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া দরকার। কারণ রক্তে সুগারের পরিমাণ বেড়ে গেলেও ফোঁড়ার সমস্যা হতে পারে।