অস্থির সময়ে স্বস্তির জন্য মেডিটেশন
আমাদের জীবন দিনে দিনে জটিল হচ্ছে। অফিস, পরিবার, রান্না, খাওয়া ছাড়াও আছে হাজার রকমের চিন্তা। সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে পৃথিবীর সবকিছু সম্পর্কে সহজে জানা সেই সঙ্গে চিন্তা-ভাবনা, চাওয়া-পাওয়ার ধরন পরিবর্তন হয়েছে। সবকিছু সহজলভ্যতার কারণে প্রত্যাশা-প্রাপ্তি নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা মনস্তাত্ত্বিক জটিলতা। সময়ের সঙ্গে এসব মনস্তাত্ত্বিক চাপের কারণে ভেতরে তৈরি হয় অস্থিরতা। এই অস্থিরতাকে নিজের ভেতরে পুষে রাখলে ডিপ্রেশনসহ নানা মানসিক রোগের উৎপত্তি হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং-এর ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১-এর রিপোর্ট অনুসারে, ডিপ্রেশনের কার্যকরী সমাধান হলো মেডিটেশন।
২০২০ সালে চীনে চিকিৎসক ও রোগীর সম্পর্ক নিয়ে একটি গবেষণা হয়। এতে ১০৬ জন চিকিৎসককে দুটি গ্রুপে ভাগ করা হয়। একটি গ্রুপকে আট সপ্তাহব্যাপী মেডিটেশন প্রোগ্রামে যুক্ত করা হয়। আরেকটি গ্রুপ তাদের চিরাচরিত রুটিনেই জীবনযাপন করেন। দেখা গেছে, ধ্যানী চিকিৎসকরা রোগীদের প্রতি সহমর্মী হয়ে উঠেছেন। রোগীর সাথে কথোপকথনে তারা আগের চেয়ে মনোযোগী।
যুক্তরাষ্ট্রের রচেস্টার স্কুল অব মেডিসিন এন্ড ডেন্টিস্ট্রির প্যালিয়েটিভ কেয়ার বিশেষজ্ঞ, লেখক ও কমিউনিকেশন এন্ড মাইন্ডফুল প্র্যাকটিস ইন মেডিসিনের শিক্ষক রোনাল্ড এম. এপস্টেইন বলেন, "চিকিৎসক এবং চিকিৎসাপেশায় নিয়োজিতদের মধ্যে যারা মেডিটেশন করেন, তারা রোগীদের সাথে কথা বলায় অধিক মনোযোগী। পেশাগত ত্রুটি শুধরে নিতে আন্তরিক এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণেও তৎপর। পেশাগত চাপ তাদের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে না।"
বিশ্ব জুড়ে এখন প্রায় ৫০ কোটি মানুষ নিয়মিত ধ্যান বা মেডিটেশন করেন। শারীরিক মানসিক সামাজিক ও আত্মিক অর্থাৎ সুস্থ থাকতে মেডিটেশন বা ধ্যানের কার্যকারিতা এখন চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রমাণিত।
পুরো বিশ্বের মত আমাদের দেশেও দিনদিন মেডিটেশনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। পরিপূর্ণ সুস্থতার জন্য বিদ্যমান চিকিৎসার পাশাপাশি মেডিটেশন যে প্রয়োজন, সেই পরামর্শ এখন চিকিৎসকরা দিচ্ছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সম্প্রতি যোগ-মেডিটেশনকে স্বাস্থ্যসেবার পরিপূরক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
নিজের অস্থিরতাকে সংযম করতে হবে নিজের শান্তির জন্য। কাজের চাপ, ব্যস্ততায় অস্থিরতা কিছু সময়ের জন্য ভুলে থাকা গেলে ও একেবারে নির্মূল হয়ে যায় না। মানসিক অস্থিরতা দূর করার জন্য মেডিটেশন খুব কাজ দেয়। মেডিটেশন করলে বিভিন্ন সুবিধা লাভ করা সম্ভব।
ধ্যান বসে বা শুয়ে—যেকোনো অবস্থাতেই করা যায়। যেকোনো সময়, খাওয়ার আগে বা পরে, সকালে, বিকেলে বা রাতে এবং যতক্ষণ ইচ্ছা করা যায়। ধ্যানের ক্ষেত্রে কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম বা বিধিনিষেধ নেই। তাই যখনই সুযোগ পাওয়া যায়, মেডিটেশন বা ধ্যান করে নেওয়া যায়। প্রতিদিন ৫ মিনিটের ধ্যানও দিতে পারে একটি নিয়ন্ত্রিত সুশৃঙ্খল জীবন আর সেই সঙ্গে অনাবিল প্রশান্তি।
ধ্যানের সময় ও স্থান
মেডিটেশন শুরুর আগে প্রথমেই এ কথা আসতে পারে যে কতক্ষণ এই মেডিটেশন করলে, তার সুফল পাওয়া যেতে পারে। জবাব হলো, প্রথম দিকে স্থির করে নিতে হবে কতটা সময় ধরে মেডিটেশন করা উচিত। ৫ থেকে ১০ মিনিট বা ১ ঘণ্টাও এটি করা যেতে পারে। আর এর জন্য বেছে নিতে হবে শব্দহীন ও নিরিবিলি একটি জায়গা।
আরামদায়ক হোক ধ্যানের সময়টুকু
মেডিটেশন করার ক্ষেত্রে কোথায় বসে তা করা উচিত, তা নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিতে হবে দেহের স্বস্তিকে। ধ্যান করতে বসে বা শুয়ে যদি আরাম বোধ না হয় তাহলে ধ্যানে মনোযোগ আসবে না। খেয়াল রাখতে হবে, হাত, পায়ের অবস্থান ও বসার ভঙ্গি যেন আরামদায়ক হয়।
ধ্যান যেভাবে করবেন
শ্বাস গ্রহণ ও ছাড়ার সময় নিশাস-প্রশ্বাসের মুভমেন্ট অনুসরণ করতে হবে। শ্বাস ভেতরে যাওয়া এবং বের হওয়ার প্রক্রিয়ার ওপর নজর দিতে হবে। মেডিটেশেনের সময় মানসিক স্থিতি এমন হবে, যাতে মন অন্য কোনো ভাবনায় বুঁদ না হয়ে পড়ে। শরীর, সাম্প্রতিক অবস্থা, সবকিছু ছাড়িয়ে যেতে দিতে হবে নিজের মনকে। মনকে স্থির করতে হবে যেকোনো একটি নির্দিষ্ট বিন্দু বা বিষয়ের ওপর।
ধ্যান শেষ হলে করণীয়
মেডিটেশন শেষ হলে তাড়াহুড়ো করে উঠে পড়া সমীচীন নয়। ধীরে ধীরে একটি অবস্থা থেকে মনকে সরিয়ে নিতে হবে। তারপর দেহ ও মনকে সজাগ করুন। তারপর ধীরে ধীরে মেডিটেশন ছেড়ে ওঠা উচিত।
নিয়মিত ধ্যানের উপকারিতা
মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে ধ্যান।
দেহ ও মনের সুস্থতার জন্য যেমন ধ্যান প্রয়োজনীয়, তেমনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ও কর্মক্ষেত্রে উন্নতি করতে ধ্যানের জুড়ি নেই।
জীবন সুন্দর করতে ও সময়কে উপভোগ করতেও সাহায্য করে ধ্যান। ধ্যানের অভ্যাস গড়ে তুললে যেকোনো অবস্থানে সুখী হওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। দেহ ও মনের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করে ধ্যান।
এ ছাড়া প্যানিক অ্যাটাক, মানসিক ভীতি কম করা ও আত্মবিশ্বাস বাড়াতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মেডিটেশন। তবে আমাদের দেশে অপ্রচলিত বলে কোথা থেকে মেডিটেশন শুরু করবে, কীভাবে চালিয়ে যাবে এসব বিষয়ে ধারণা কম। মেডিটেশন করার জন্য বর্তমানে বিভিন্ন অ্যাপ প্রচলিত আছে। যেমন- ওরা, ব্রিদিং প্লাস, টেন পার্সেন্ট হ্যাপিয়ার, মাইন্ডফুলনেস উইথ পেটিট ব্যামব্যু, মাইন্ডফুলনেস অ্যাপ, স্মাইলিং মাইন্ড, ওমভানা। এগুলো সঠিক পদ্ধতিতে মেডিটেশন করতে সাহায্য করে।
সস্তায় ফ্লাইটের টিকিট চান? পাঁচ টিপস
কিছু সাধারণ কৌশল জানা থাকলে খুব সহজেই ভ্রমণের খরচ অর্ধেকে নামিয়ে আনা যায়; বিশেষকরে ফ্লাইটের টিকিটের দাম।
যেমন ধরুন, দিন নির্বাচন, কত সময় আগে টিকিট কেনা উচিত, কিংবা কোথায় কোথায় অফার মূল্যে টিকিট মেলে– এমন সব বিষয়।
১. মঙ্গলবার ও বুধবারের টিকিট
সাধারণত সপ্তাহের মঙ্গল ও বুধবারের টিকিটের দাম অন্যান্য দিনের চেয়ে একটু সস্তা থাকে। এর পেছনে দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, বেশিরভাগ এয়ারলাইন্স মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার পর তাদের টিকিটের মূল্য আপডেট করে। আবার পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই শনি ও রোববার সাপ্তাহিক ছুটি। তাই ছুটির দিনের সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য শুক্র, শনি অথবা রোব বারের টিকিটই বেশি খোঁজেন। আর এজন্য সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়টিতে টিকিটের দাম তুলনামূলক কম হয়।
২. আগে থেকে বুকড করা
ভ্রমণের তারিখের অন্তত ২১ দিন আগে টিকিট কেনা উচিত। এয়ারলাইনস সাধারণত প্রথম কয়েকজন যাত্রীকে সবচেয়ে সস্তায় টিকিট দেয়। তবে খুব আগে বুক করলে দাম বেশিও পড়ে যেতে পারে।
৩. সেরা অফার খুঁজুন
আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের ক্ষেত্রে ১১-১২ সপ্তাহ আগে টিকিটের সেরা অফার পাওয়া যায়। এই সময়ে নিয়মিত টিকিটের দামের উপর নজর রাখুন। তবে তার আগে অবশ্যই ব্রাউজার মুড পরিবর্তন করে ‘ইনকগনিটো’ ব্যবহার করুন।
৪. বিমানবন্দর বাছাই
বড় এয়ারপোর্টের পরিবর্তে কাছাকাছি ছোট এয়ারপোর্টে নামার চেষ্টা করুন। যেমন লন্ডনে যাওয়ার ক্ষেত্রে হিথ্রোর পরিবর্তে ম্যানচেস্টার বিমানবন্দরে নামলে খরচ খানিকটা কম পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
৫. ব্রাউজারের ‘কুকিজ’
ফ্লাইট টিকিট খোঁজার সময় আপনার ব্রাউজারের ‘কুকিজ’ পরিষ্কার করে ফেলুন। কারণ, না হলে এয়ারলাইন্সের বুকিং সিস্টেম আগের অনুসন্ধান মনে রেখে দাম বাড়িয়ে দিতে পারে।
সস্তায় টিকিট খুঁজতে যে সাইটগুলো দেখতে পারেন:
স্কাইস্ক্যানার
চিপ ফ্লাইট
মমন্ড
কায়াক
গুগল ফ্লাইট
মনযোগের কেন্দ্রে গ্রিনল্যান্ড, কী আছে বরফের আড়ালে?
গ্রিনল্যান্ড খনিজ সম্পদের জন্য আন্তর্জাতিক মনোযোগের কেন্দ্রে থাকলেও আসলে কী আছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই দ্বীপের বরফের গভীরে? শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে দ্বীপটির ভূস্তরের গভীরে মূল্যবান খনিজ থাকার সম্ভাবনা মানুষকে আকৃষ্ট করলেও এই সম্পদ পাওয়া কতটা সহজ বা জলবায়ুর পরিবর্তনে কী প্রভাব ফেলবে?
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এ দ্বীপের আকর্ষণ অস্বীকার করার উপায় নেই। হাজার বছর আগে প্রথম বসতি স্থাপনকারী এরিক দ্য রেড বা হালের পর্যটক সবাইকে মুগ্ধ করছে এই দ্বীপ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এর এক বিচ্ছিন্ন তীরে এসে পৌঁছানো মিত্র বাহিনীও আকর্ষণ অনুভবব করেছিলে দ্বীপের মনোমুগ্ধকর দৃশ্যে।
সেই গ্রিনল্যান্ড আবারও বিশ্বজুড়ে মনোযোগের কেন্দ্রে চলে এসেছে, বিশেষকরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের চোখ পড়ার পর।
হ্যাঁ, এটি সত্যি, শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বিশদ অনুসন্ধানে গ্রিনল্যান্ডে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ খনিজ সম্পদ থাকার প্রমাণ মিলেছে। যার মধ্যে রয়েছে সবুজ শক্তি প্রযুক্তিতে (গ্রিন এনার্জি টেকনোলজি) ব্যবহৃত বিরল মাটির উপাদান এবং গুরুত্বপূর্ণ খনিজ; সেইসঙ্গে জীবাশ্ম জ্বালানির মজুদ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ সম্পদের ভাণ্ডার নিয়ে সীমাহীন উত্তেজনা তৈরি হলেও এসব খনিজ ও জীবাশ্ম জ্বালানি খুঁজে বের করে উত্তোলন এবং পরিবহন প্রক্রিয়া শুধু কঠিনই নয়, রীতিমত চ্যালেঞ্জও বটে।
কবে থেকে দ্বীপটির ওপর নজর?
কথা হলো, ডনাল্ড ট্রাম্প প্রথম কোনো প্রেসিডেন্ট নন, যিনি দ্বীপটির দিকে প্রথমবারের মতো হাত বড়িয়েছেন! ডেনমার্কের অধীনস্থ স্বায়ত্ত্বশাসিত গ্রিনল্যান্ড এর আগেও যুক্তরাষ্ট্র অধিগ্রহণ করেছিল।
ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, ১৮৬৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম সিয়ওয়ার্ড গ্রিনল্যান্ড এবং আইসল্যান্ড নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি উত্থাপন করেছিলেন।
এরপর ১৯১০ সালে ডেনমার্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মরিস ফ্রান্সিস ইগান্স ডাচ অ্যান্টিলিস এবং ফিলিপাইনের মিন্ডানা দ্বীপের পরিবর্তে গ্রিনল্যান্ডকে পাওয়ার খায়েশ দেখিয়েছিলেন।
প্রায় তিন যুগ পর ১৯৪৬ সালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস বার্নেস ১০০ মিলিয়ন স্বর্ণ মুদ্রায় দ্বীপটি কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেন।
নিকট অতীতে ডনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে দ্বীপটি কেনার আগ্রহ দেখালেও ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী মেটে ফেডরিকসেন ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে তা নাকচ করে দেন।
গ্রিনল্যান্ড কত বড়, বয়স কত?
বেশিরভাগ মানচিত্রে গ্রিনল্যান্ডকে বিশাল দেখা গেলেও বাস্তবে গ্রিনল্যান্ডের আয়তন প্রায় ২০ লাখ বর্গকিলোমিটার বা ৭ লাখ ৭০ বর্গমাইল; যা প্রায় কঙ্গোর সমান।
পৃথিবীর সর্বত্রই ভূতত্ত্বে দীর্ঘ সময়ের দাগ এবং স্বাক্ষর রয়েছে। আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত এবং শীতল আগ্নেয় শিলা, বিশাল মহাদেশীয় সংঘর্ষ এবং টাফি-সদৃশ ফাটল নতুন মহাসাগরের জন্ম। আর এ সমস্ত ভূতাত্ত্বিক কর্মকাণ্ডের প্রমাণ মেলে প্রাচীন শিলা পর্যালোচনায়।
ব্রিটিশ জিওলজিক্যাল সার্ভের প্রধান ভূতত্ত্ববিদ ক্যাথরিন বলেন,“গ্রিনল্যান্ডের ইতিহাস পৃথিবীর যেকোনো কিছুর ইতিহাসের মতোই প্রাচীন।”
তিনি বলেন, এক সময় গ্রিনল্যান্ড একটি বৃহত্তর মহাদেশের অংশ ছিল, যার মধ্যে আজকের উত্তর ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রায় ৫০ কোটি বছর আগে গ্রিনল্যান্ড একটি সুপারকন্টিনেন্টের অংশ ছিল, যা ছিল ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার মধ্যভাগ জুড়ে।
বিবর্তনের মধ্য দিয়ে প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ মিলিয়ন বছর আগে সুপারকন্টিনেন্টটি আলাদা হতে শুরু করে। সেখানে একটি ফাটল তৈরি হয় যা থেকে আজকের দিনের উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের জন্ম।
বিজ্ঞানীদের অনুমান, গ্রিনল্যান্ডে খনির সম্পদ ছাড়াও তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসও রয়েছে। গত শতকের ৭০ এর দশক থেকে গ্রিনল্যান্ডের উপকূলে, তেল এবং গ্যাস কোম্পানিগুলি তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করলেও সফলতার মুখ দেখেনি কেউ। তারপর্র গ্রিনল্যান্ডের মহাদেশীয় শেল্ফ ভূত্ত্ব আর্কটিকের অন্যান্য জীবাশ্ম জ্বালানি সাইটগুলোর সাথে মিলে যায়।
মূল্যবান খনিজ আছে?
দ্বীপটির বেশিরভাগ অংশ ধীরে ধীরে প্রবাহিত বরফে ঢাকা। হিমবাহগুলো সাগরের দিকে এগিয়ে চলছে। মাত্র ২০ শতাংশ অঞ্চল বরফমুক্ত, যেখানে খাড়া পর্বত, সমুদ্র এবং মাঝে মাঝে শহর রয়েছে। রয়েছে নজর কাড়া রঙিন বাড়িঘর।
ডেনমার্ক ও গ্রিনল্যান্ডের ভূতাত্ত্বিক জরিপের (জিইইউএস) জ্যেষ্ঠ গবেষক থমাস ফাইন্ড ককফেল্ট বলেন, ১২০/১৩০ বছর আগে গ্রিনল্যান্ডে বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অনুসন্ধান আলোচনার বিষয় ছিল। সেখানে বিভিন্ন খনিজের সন্ধান পাওয়া যায় এবং খনি আহরণও শুরু হয়েছিল।
১৮৫০ সালে গ্রিনল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে ক্রায়োলাইট খনিজটি পাওয়া যায়। বেকিং সোডা তৈরিতে ব্যবহার হতে দেখে স্থানীয়রা ক্রায়োলাইট খনন শুরু করে।
এছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ক্রায়োলাইট সরবরাহ আসে এখান থেকেই।
গ্রিনল্যান্ডে ভূতাত্ত্বিক মানচিত্র তৈরি হয় প্রকৃতপক্ষে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, জানান ককফেল্ট।
ডেনমার্কের আলবর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন এবং পরিকল্পনা বিষয়ক প্রধান আন্নে মেরিল্ড বলেন, “অন্য অঞ্চলের খনিগুলো শূন্য হয়ে যাওয়ায় মেরু অঞ্চলের খনি আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে।”
অবশ্য গ্রিনল্যান্ডে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও তা উত্তোলন লাভজনক কিনা তা অস্পষ্ট।
নেভাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের রালফ জে রবার্টস রিসার্চ অ্যান্ড ইকোনমিক জিওলজি সেন্টারের পরিচালক সাইমন জোয়াইট বলেন, খনিজ অনুসন্ধান খনির সাথে সম্পর্কিত যে কোনো উদ্যোগের মধ্যে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং এবং ঝুঁকিপূর্ণ।
“১০০টি অনুসন্ধান প্রকল্পের মধ্যে হয়তো একটি সফল খনি হয়ে উঠতে পারে।”
তিনি বলেন, “অনুসন্ধান থেকে উৎপাদন শুরু পর্যন্ত প্রায় ১০ বছর সময় নেয়। তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে স্থান, অবকাঠামো কী, এবং আপনি যে অনুমোদন এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া অনুসরণ করবেন তার ওপর।”
গ্রিনল্যান্ডে শহরের বাইরে কোনো রাস্তা বা রেলপথ নেই। গাড়ি দিয়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়া যায় না; নৌকা বা বিমান ব্যবহার করতে হয়।
প্রতিষ্ঠিত অবকাঠামোর অভাব খনিজ আহরণনের জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলেও মনে করেন তিনি।
এছাড়া কোনো খনিতে যদি রেডিওঅ্যাকটিভ পদার্থ থাকে সেক্ষেত্রে ২০২১ সালে গ্রিনল্যান্ড পাস হওয়া এক আইন অনুযায়ী তা খননের ওপর সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
খনিজ উত্তোলনের প্রভাব
এদিকে খনিজ উত্তোলনের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছি গ্রিনল্যান্ডের বর্তমান সংসদ। গ্রিনল্যান্ডে তিনটি পুরানো খনি পরিবেশগত ক্ষতি করেছে, বিশেষ করে দ্বীপের চারপাশের পানির ওপর।
দ্বীপের বাসিন্দা মেরিল্ড বলেন, কিছু বর্জ্য শিলায় ভারী ধাতুর পরিমাণ প্রয়োজনের অতিরিক্ত পাওয়া গেছে, যা বিজ্ঞানীরা খনির আশেপাশে মাকড়সা, মস, মাছ এবং শামুকের মতো জীবজন্তুর মধ্যে পরীক্ষা চালিয়ে প্রমাণ পেয়েছেন।
গ্রিনল্যান্ডের তাপমাত্রা এবং নিম্ন লবণাক্ততার কারণে পরিবেশগত পুনরুদ্ধার অত্যন্ত ধীর হয়। ৫০ বছর পরেও ওই প্রভাব দেখা যায় বলে জানান তিনি।
মেরিল্ড বলেন, “পানি ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা আসলে গ্রিনল্যান্ডবাসীর খাদ্য সরবরাহ এবং মৎসশিকার ও শিকার ভিত্তিক জীবনযাপকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।”
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মেরু অঞ্চলের তাপমাত্রা পৃথিবীর বাকি অংশের তুলনায় প্রায় চারগুণ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রিনল্যান্ডের তুষারাবরণ প্রতি ঘণ্টায় ৩০ মিলিয়ন টন বরফ হারাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মেরিল্ড বলেন, গ্রিনল্যান্ডবাসীরা খনি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে নয়, তবে তাদের কিছু উদ্বেগ রয়েছে। তা হলো ভূমি সম্পর্কিত।
তিনি জানান, সরকার বাসিন্দাদের জন্য ভূমি মালিকানা ও প্রশাসন পরিচালনা করে। এই অর্থ, সবারই ভূমি রয়েছে এবং কারোই নেই।
গ্রিনল্যান্ড কি পরবর্তী ওয়াইল্ড ওয়েস্টে পরিণত হতে চলেছে এমন প্রশ্নের জবাবে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডরিকসেন বলেন, সেটা গ্রিনল্যান্ডের মানুষের ওপরই নির্ভর করছে।
তবে তাদের দ্বীপের প্রতি আন্তর্জাতিক আগ্রহ শিগগির কমার সম্ভাবনা নেই বলেও মনে করেন তিনি।
ইসরায়েলি কারাগারে কেন এত ফিলিস্তিনি শিশু?
গাজায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওয়তায় ইসরায়েলে বন্দি ২৩ ফিলিস্তিনি শিশুকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে; যার মাধ্যমে ইসরায়েলের সামরিক আদালতে শিশুদের বিচারের বিষয়টি সামনে চলে এসেছে।
গত ১৯ জানুয়ারি কার্যকর হওয়া ওই যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর দুই দফায় অন্তত ২৯০ জন ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।
ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীর ভিত্তিক আদামির প্রিজনার সাপোর্ট এবং হিউম্যান রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যানুসারে, সাম্প্রতিক এই বন্দি বিনিময়ের আগে ইসরায়েলের কারাগারে ৩২০ ফিলিস্তিনি শিশু বন্দি ছিল।
শিশু বন্দি সম্পর্কে কী জানা গেল?
২০১৬ সালে ইসরায়েল নতুন একটি আইন পাস করে। যার আওতায় ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের অপরাধী সাব্যস্ত করে প্রাপ্ত বয়স্কদের মতো বিচার ও দণ্ড দেওয়া যাবে। আগে যা ১৪ বছর বয়সী শিশুদের জন্য প্রযোজ্য ছিল। তবে নতুন আইন অনুযায়ী দণ্ড দেওয়া গেলেও তা ১৪ বছর পূর্ণ হওয়ার পর থেকে কার্যকর হবে।
ইসরায়েলের আইনসভা ক্নেসেট ২০১৬ সালের ২ অগাস্ট আইনটি প্রণয়ন করে। আইন প্রণয়নের সময় আইনসভার বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘হত্যা, হত্যা চেষ্টা এবং হত্যায় জড়িতরে মতো গুরুতর অপরাধে জড়িত শিশুদের বন্দি করার’ অনুমতি দেয়া হলো। এমনকি তার বয়স ১৪ বছরের নিচে হলেও।
অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেম থেকে ২০১৫ সালে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে আহমেদ মানাসরা নামে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেপ্তারের পর নতুন এ আইনটি পাস করা হয়। নতুন আইন পাসের পর তাকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং তা তার চৌদ্দতম জন্মদিনের দিন বাস্তবায়িত করা হয়। পরে আপিল করা হলে তার দণ্ড কমিয়ে নয় বছর করা হয়।
বেসরকারি সংস্থা সেইভ দ্য চিলড্রেনের হিসাব অনুযায়ী গত ২০ বছরের ১০ হাজার শিশুকে ইসরায়েলি সামরিক কারাগারে রাখা হয়।
শিশুদের গ্রেপ্তারের কারণের মধ্যে পাথর নিক্ষেপসহ অনুমতি ছাড়াও ১০ জন একসঙ্গে জমায়েত হলেও তা প্রযোজ্য।
কোন আইনে শিশুদের আটক?
ইসরায়েল বিতর্কিতভাবে ফিলিস্তিনি বন্দিদের বেসামরিক আদালতে বিচার না করে সামরিক আদালতে বিচার করে থাকে। যদিও আন্তর্জাতিক আইন ইসরায়েলকে তার অধিকৃত অঞ্চলে সামরিক আদালত পরিচালনার অনুমতি দেয়।
দখলকৃত পশ্চিমতীর ও পূর্ব জেরুজালেমে দুই ধরনের বিচার ব্যবস্থা চালিয়ে থাকে ইসরায়েল। সেখানে বসতি স্থাপনকারী ইসরায়েলিদের সাধারণ এবং ফিলিস্তিনিদের সামরিক আদালতে বিচার করা হয়ে থাকে। যার ফলে অনেক ফিলিস্তিনি যথাযথ বিচার প্রক্রিয়া ছাড়াই কারাবন্দি হয়।
২০২৩ সালের নভেমআবরে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন পরিচালক ওমর শাকির লিখেছিলেন, “রাতে অভিযান চালিয়ে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ফিলিস্তিনি শিশুদের গ্রেপ্তার করে, অভিভাবকের উপস্থিতি ছাড়াই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং ১২ বছর বা তার কম বয়সীদের বিচারকের সামনে উপস্থান করা ছাড়াই দীর্ঘ সময় আটকে রাখে।”
ইসরায়েলি সিভিল রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের ২০১৭ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দখলকৃত পশ্চিম তীরের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ ফিলিস্তিনি শিশু বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়া পর্যন্ত আটক থাকে; আর ইসরায়েলি শিশুদের হার ২০ শতাংশেরও কম।
ইসরায়েলে বন্দি শিশুদের ২০২০ সালে থেকে প্রতি দুই সপ্তাহ অন্তর একবার ১০ মিনিট করে পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে দেয়।
মুক্তিপ্রাপ্তদের কত জন শিশু?
অস্ত্রবিরতি চুক্তির আওতায় শনিবার ইসরায়েল দুইশ’ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে, যার মধ্যে ১২০ জন যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত ছিল। এছাড়া দুই শিশু রয়েছে যাদের বয়স ১৫ বছর। আর সবচেয়ে বয়স্ক মুহাম্মদ আল-তৌস ৬৯ বছর বয়সী। ১৯৮৫ সালে ইসরায়েলের সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধে গ্রেপ্তারের পর ৩৯ বছর কারাবন্দি ছিলেন তিনি।
দীর্ঘ ১৫ মাসের রক্তাক্ত আগ্রাসনের পর যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুসারে শনিবার দ্বিতীয় দফা হিসেবে এদের মুক্তি দেওয়া হয়। প্রথম দফায় তিন ইসরায়েলি বন্দির বিনিময়ে ৯০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল। যার মধ্যে ৬৯ জন নারী ও ২১ শিশু ছিল।
এদের মধ্যে মাত্র আটজন ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের হামলার আগে আটক হয়েছিল। এ হামলায় ১১শ’ নিহত হয় এবং ২৫০ জনকে ধরে নিয়ে আসে তারা। এরপরই গাজায় সর্বাত্মক হামলা চালায় ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনি এসব বন্দির মধ্যে অনেকে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি কারাগারে রয়েছেন।
ফিলিস্তিন ন্যাশনাল লিবারেশন মুভমেন্ট (ফাতাহ) এর সহপ্রতিষ্ঠাতা মারওয়ান বারঘৌতি ২২ বছর ধরে ইসরালেলি কারাগারে বন্দি রয়েছেন। দখলের আগে পশ্চিম তীর নিয়ন্ত্রণে ছিল ফাতাহর।
দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক তামার ক্বারমাউত আল জাজিরাকে বলেন, ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি পরিবারগুলির জন্য ‘অনেক বড় উপশম’ হলেও তা ঘটছে “ইসরায়েলি দখলের ভয়াবহ বাস্তবতার মধ্যে”।
তিনি বলেন, আলোচনার মাধ্যমে সংঘর্ষ শেষ করে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং দখল শেষ করার মতো বড় একটি চুক্তিতে এসব বন্দিদের মুক্তি পাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু কঠোর বাস্তবতা হলো দখল অব্যাহত আছে।
কত ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি কারাগারে?
আদামিররে রোববারের তথ্য অনুসারে ইসরায়েলের কারাগারে ১০ হাজার চারশ’ ফিলিস্তিনি রয়েছে, যারা গাজা ও পশ্চিম তীরের। ফিলিস্তিনের দখলকৃত অঞ্চলের প্রতি পাঁচজনে একজন কোনো না কোনো সময় গ্রেপ্তার হয়ে বিচারের সম্মুখীন হয়েছে। তবে শুধু পুরুষদের মধ্যে এ সংখ্যা দ্বিগুণ; প্রতি পাঁচজনে দুইজন।
ইসরায়েলের ১৯টি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে একটি দখলকৃত পশ্চিমতীরে যেখানে ফিলিস্তিনি বন্দিদের রাখা হয়। গত অক্টোবর থেকে ইসরায়েল সেখানে স্বতন্ত্র মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। ফলে ভেতরে কত বন্দি এবং তারা কী অবস্থায় রয়েছে তা জানা কঠিন হয়ে যায়।
গাজায় আগ্রাসন শুরু হওয়ার আগে ও পরে বন্দি হওয়া ফিলিস্তিনিরা জানিয়েছেন, কারাগারে তারা মারধর, নির্যাতন এবং অবমাননার শিকার হয়েছেন।
বিনা অভিযোগে আটক কত?
আদামির তথ্যানুসারে ইসরায়েল প্রশাসনিক আটকাদেশের অধীনে ৩ হাজার ৩৭৬ জন ফিলিস্তিনি বন্দি আছে। প্রশাসনিক আটকাদেশ হচ্ছে এমন একটি ব্যবস্থা যার মাধ্যমে কাউকে বিনা বিচার বা বিনা অভিযোগে কারাবন্দি করে রাখা যায়।
প্রশাসনিক আটকাদেশে আটকদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে ‘গোপন প্রমাণ’ থাকার দাবি করে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ, যা তাদের আইনজীবীদেরও দেখার অনুমতি নেই। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই তারা এমনটি করে আসছে।
৪১ শিশু ও ১২ নারী প্রশাসনিক আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে বলে আদামির জানিয়েছে।
এরপর কী?
যুদ্ধবিরতির প্রথম দফার ছয় সপ্তাহের মধ্যে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ২৬ জন অন্যান্য বন্দিকে মুক্তি দেয়া হবে। পরবর্তী বন্দি বিনিময় আগামা শনিবার হওয়ার কথা রয়েছে।
অনেকের প্রত্যাশা পরবর্তী ধাপ ২৩ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত এবং হাজার হাজার মানুষের প্রাণ নেওয়া গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাবে। এ পর্যাযের আলোচনা আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
আল জাজিরা অবলম্বনে
